কুচকুচে কালো সাহাবী হযরত জাহেয রা.। গ্রাম থেকে শাক-সবজি সংগ্রহ করে শহরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। খুব ভালোবাসতেন রাসূল সা. তাঁকে। বলতেন “জাহেয আমাদের গ্রাম আমরা জাহেযের শহর“।
একদিন তিনি উদোম শরীরে বাজারে শাক-সবজি বিক্রি করছিলেন। রাসূল সা. পিছন থেকে এসে তাঁর বোগলের নিচ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ঘাড়কে এমন ভাবে ধরলেন যেনো সে নড়তে না পারে। ধরার সাথে সাথে তিনি স্বজোরে বলতে লাগলেন, এই ! কে ধরেছো আমাকে? ছাড়ো ! ছাড়ো বলছি ! এদিকে রাসূল সা. ও ধরে রেখে বলতে লাগলেন, এই গোলামকে কে ক্রয় করবে……? সুলভ মূল্যে বেঁচে দিবো। রাসূল সা.-এর আওয়াজ শুনে জাহেয রা. চুপ হয়ে গেলেন। রাসূলের গায়ে ছিলো চাঁদর জড়ানো। হাত উঁচু করে জাহেযকে ধরায় রাসূল সা. এর সিনা মোবারক অনাবৃত হয়ে পড়েছিলো। সুযোগ বুঝে জাহেয রা. নিজের নগ্ন পিঠকে রাসূলের সিনার সাথে মিলিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন।
কিছুক্ষণ পর রাসূল সা. তাঁকে ছেড়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, জাহেয ! তুমি চুপ হয়ে গেলে যে? আবার আমার সিনার সাথে তোমার পিঠ ঠেকিয়ে দিলে! জাহেয রা. বললেন, ওগো প্রিয় রাসূল সা. আমিতো নিঃস্ব । নিতান্তই হতদরিদ্র। কোনো পুঁজি নেই।
হাশরের মাঠে যদি আল্লাহ আমাকে জিজ্ঞেস করেন, জাহেয! আমার কাছে কি এনেছো তুমি ? জবাবে বলবো, প্রভূ ! উপস্থাপন করার মতো কিছুই নেই। তবে, আমার পিঠখানা পরীক্ষা করে দেখুন, তাতে তোমার হাবীবের পরশ আছে। একথা শুনে
রাসূল সা. তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
আহ্ ! তিনিতো অন্তত রাসূল সা. এর পরশ পেয়েছেন। আমাদের তো তাও নেই। কোন সম্বল নেই। কোন পুঁজি নেই। রিক্ত হাত। শুন্য থলে। আমরা কী পেশ করবো তাঁর কাছে। আমরা তো এমন হতভাগ্য যে, আমাদের চোখ তাঁর হাবীবকে
দেখেনি। এমন দূর্ভাগা আমাদের নাক তাঁর ঘ্রাণ নিতে পারেনি। এমন বঞ্চিত তাঁর সাথে এক পথে চলতে পারিনি। আমরাতো এমন রিক্ত যে , আমাদের হাত তাঁকে ছুঁতে পারেনি। তবে আমাদের কী হবে? কী আছে আমাদের?
হ্যাঁ আছে। আমাদের অন্তরে মদীনা অলার প্রেম আছে। হৃদস্পন্দনে তাঁর অনুরাগ আছে। প্রতি রক্তকনিকায় তাঁর ভালোবাসা আছে। মহব্বত আছে। এই প্রেম আর অনুরাগকেই আমরা প্রভুর সামনে পেশ করবো সেদিন। প্রভু অন্তর্যামি। তিনি দেখেন।
বুঝেন। উপলব্ধি করেন।
হে প্রভু ! তাঁর ভালোবাসাকে পুঁজি করেই জীবন কাটানোর তৌফিক দিন। তাঁর পদাঙ্ক অনুস্মরণ করে আমরণ চলার তৌফিক দিন। মদীনা অলার প্রেমানলে জ্বলে জ্বলে নিজকে নিঃশ্বেষ করার তৌফিক দিন। আমীন।।
সংগৃহীত