পুলিশ ফাড়িতে যুবক হত্যা:
সিলেটজোড়ে চলছে রহস্য! এলাকাবাসীর প্রতিবাদ!!
সিলেট নগরীতে রায়হান নামক এক যুবকের হত্যাকান্ড নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য । নিহত যুবকের পরিবারের দাবি, পুলিশ ফাড়িতে আটকের পর দাবিকৃত টাকা না পেয়ে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কেননা, গভীর রাতে তৌহিদ নামক পুলিশ কনস্টেবলের মোবাইল থেকে সর্বশেষ টাকা নিয়ে আসার জন্য ফোন করে বাঁচার আকুতি করেছিল রায়হান! তবে বিষয়টি অস্বীকার করছে পুলিশ।
বিষয়টি প্রথমে নগরীতে পুলিশের বরাত দিয়ে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী নিহত বলে প্রচার করা হয়। এরপরই তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকান্ড নিয়ে তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ জানালে রহস্য দানা বাধে।
বিষয়টি নিয়ে খোদ পুলিশ প্রশাসনে চলছে তোলপাড়।।
এদিকে, নিহত রায়হানের পরিবার, এলাকাবাসী এবং স্থানীয় কাউন্সিলর এই হত্যাকান্ড নিয়ে সরাসরি পুলিশকে দায়ী করেছেন।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান বলেন, পুলিশ হেফাজতেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে এটা ইতোমধ্যে প্রতীয়মান। যখন ভোর ৪টা ২০ মিনিটে রায়হান তার পিতাকে ফাঁড়ি থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য টাকা চেয়ে ফোন করেছে তাহলে এর আগে তার ওপর নির্যাতন হয়েছে।
পুলিশ হেফাজতে থেকে রায়হান ফোন দিয়েছে বিষয়টি পুলিশেরও জানা। এমনকি তার অবস্থান সম্পর্কেও সে পিতাকে জানায়।
তিনি বলেন, পুলিশ দাবি করছে সে ছিনতাইকরার সময় গণপিটুনিতে মারা গেছে। তাহলে পুলিশ প্রথমে হাসপাতালে না নিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে গেল কেন?
রায়হানের মা সালমা বেগম ও চাচা হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করে জানান, একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতো সে। কর্মস্থল চিকিৎসকের চেম্বার থেকে ফিরতে দেরি দেখে শনিবার রাত ১০টায় রায়হানের মোবাইলে ফোন দেন মা ও স্ত্রী। কিন্তু ফোন বন্ধ পান। ভোর ৪টা ২৩ মিনিটের দিকে মায়ের মোবাইল ফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে রায়হান জানায় পুলিশ তাকে ধরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছে। এখন তার কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ চাচ্ছে। টাকা দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেবে। এ সময় কেঁদে কেঁদে রায়হান তাকে বাঁচানোর আকুতি জানায়। জানা যায় ওই মোবাইল নম্বরটি বন্দর ফাঁড়ির কনস্টেবল তৌহিদের।
এ দিকে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আগামীকাল একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন তার পরিাবরের সদস্যরা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে এস এসমপি উত্তর সার্কেল এর ডিসি আজবাহার আলী শেখকে প্রধান করে একি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।
নিহতের মামাতো ভাই আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, গণপিটুনিতে মারা গেলে তার দেহের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন থাকত। কিন্তু তার হাতের নখগুলো দেখলে অনুমান করা যায় তা উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। পায়ের হাঁটুর নিচে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়িতে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন আবদুর রহমান।
এসএমপির উপ কমিশনার (মিডিয়া) জ্যুতির্ময় সরকার বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
…
সুত্র- সিলেট রিপোর্ট ও সিলেট প্রতিদিন