বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ১১:৩২
Home / কওমি অঙ্গন / সাপ হইয়া কাটো তুমি উঝা হইয়া ঝাড়ো!

সাপ হইয়া কাটো তুমি উঝা হইয়া ঝাড়ো!

প্রিনসিপ্যাল রাহ.র জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া- পর্ব-৩

ম ই মশহুদ: সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আসা স্বাভাবিক।
অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়াও শরয়ি তাকাজা। আর তদন্ত ও বিচার কার্যও যেন ইনসাফের ভিতর দিয়া যায় সেটাও নিশ্চিত করা শরয়ি জরুরত।
আর বিষয়টা যদি আলেম উলামার জায়গা থেকে মসজিদ মাদরাসার হয় তখন হয়ে যায় আরো সেনসেটিভ।
সভ্যজগতে বিচারিক কার্যক্রম ও তদন্ত কমিশনের কিছু নিয়ম কানুনও আছে।
যেমনঃ
১- যারা তদন্ত করবে বা যাদের দায়িত্ব দেয়া হবে সেই কাজের তারা অভিযুক্ত ব্যক্তির কোন স্টাফ কর্মচারি বা রিলেটিভ বা সংশ্লিষ্ট পরিষদে তাদের কোন সংযুক্তি থাকবেনা ও হতে পারবেনা।
২- যারা যে বিষয়ে তদন্ত করবে তাদের সে বিষয়ের উপর সনদ ট্রেনিং প্রশিক্ষন থাকা চাই।
৩- তারপর তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট দিয়েই কাজ শেষ করে সরে যাবে।
৪- বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাদের কোন যোগসাজস কোন ক্রমেই থাকতে পারবেনা।
এবার আসি মাওলানা সামিউর রাহমান মুসার উপর অভিযোগের ব্যাপারে।
আমেলা বা শুরা তদন্তের জন্য যে ৩জনকে জিম্মা দিয়েছে তাদের দুজনই তারই অধিনস্তে থাকা স্টাফ ও একজন শুরা মেম্বার।
প্রথমত এই নিয়োগ টুটালি অনিয়মতান্ত্রিক ও বাতিল। কারণ কনপ্লিক্ট অফ ইন্ট্রেস্ট এখানে জড়িত। নিজের অধিনস্ত স্টাফ তাদের স্বার্থ সুবিধা এখানে যুক্ত। তারা রাগের মাথায় স্বার্থের খাতিরে সত্যকে মিথ্যা মিথ্যাকে সত্য বানানোর সমূহ সম্ভাবনা আছে। মাওলানা মুসার উপর পুর্ব থেকে দুশমনি থাকতে পারে। বা নাও থাকতে পারে। তাই আইনের চোখে এরকম নিয়োগ অগ্রহনযোগ্য।
ঠিকতদ্রুপ আরেকজন শুরা সদস্য যিনি হিসাবের তদন্তে নিয়োগ পেয়েছেন। বস্তুত তিনি তো বিচারিক প্যানেলের সদস্য। সেখানে তদন্ত কমিটিতে আসা অসাংবিধানিক। বিচারক কখনো পুলিশের ভুমিকা পালন করেনা।
৫- যারা হিসাব নিরিক্ষণের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন তারা কি হিসাবের উপর প্রশিক্ষিত? ট্রেনিং প্রাপ্ত? চার্টার একাউন্টেন্ট? না, কিছুই না। তাহলে এখানেও তারা অযোগ্য।
৬- যারা তদন্ত করবে তাদের কারেক্টারও দেখা হয় যে তারা ইতোপুর্বে কোন ক্রাইম করেছে কিনা?
এই ৩ জন হিসাব নীরিক্ষক প্রত্যেকে নিজ জাগায় বদনামি। কেহ ভুমি খেকো, আত্মসাৎকারী, সুদের ব্যবসায়ী, আত্মসাৎ ও লুটের অভিযোগে জেলভোগকারী, বিভিন্ন সামাজিক ও অসামাজিক কাজের সাথে তাদের সংযোগ পাওয়া বিদ্যমান থাকায় তারা এই তদন্ত কমিশনে থাকতে পারেননা।
৭- তারা এই তদন্তকারীরা হিসাব রক্ষক হারুনুর রশিদকে তদন্ত শুরুর আগে বলেছিলেন যে যে ভাই! আপনি আমাদের একটু আইডিয়া দেন। আমরা তো এসব বুঝিনা কিভাবে কোথা থেকে শুরু করি?
সে বললো- ভাই হিসাব তো রেডি করা। আর কি দেখবো?
তারা বললেন- হারুন শোন, তোমার জীবনের সকল জিম্মা আমরা নিলাম। তোমার চাকুরি কেহ বাতিল করতে পারবেনা। তোমাকে আমরা মনে রাখার মত সুবিধা দিবো। তুমি আমাদের সেভাবে কিছু করে দাও।
হারুন বললো- ঠিকাছে ভাই। আমি গরীবকে বিপদে ফালাইয়েন না।
না না না প্রমিজ তোমার কোন ক্ষতি হবেনা, হতে দিনোনা আমরা।
আচ্ছা আমি যদি উল্টা সিধা হিসাব দেই তাহলে মাওলানা মুসা যে বিপদে পড়বেন? তখন কি হবে?
আরে কী কউ! সেতো আমাদের উস্তাজের সাহেব জাদা। তার কোন ক্ষতি কি আমরা চাইবো?
তাইলে ওসব দিয়ে কি করবেন?
না, মানে তাকে একটু সতর্ক করবো যাতে জামেয়া আরো সুন্দর হয়।
৮- হিসাব রক্ষক হারুন আরো বলে যে তারা আমাকে লিপসা দিয়ে মুসার বিরুদ্ধে কাজ করতে বাধ্য করে যা ছিল আমার পক্ষথেকে চরম মুর্খতা। শয়তানের ধোকা খেয়ে কাজটা করি।
ওদিকে মাওলানা মুসা রাতেই শোনলেন যে ৪২ লক্ষ টাকার একটা বেশকম হিসাবে উঠে এসেছে। ওটা আবার হারুনই তাকে জানায়।
মূলত কথাছিল হিসাবের রিপোর্ট নিয়ে তারা মাওলানা মুসার সাথে বৈঠক করবেন। তারা খুব সংগোপনে ২৪ ঘন্টার ভিতর পরিচালনা কমিটির মিটিং ডাকেন। তারা মুসাকে সংশোধনের জন্য না বরং তাকে ফাঁসানোর জন্য একের পর এক ছক আঁকছেন তা তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে অনুমিত হয়।
৯- মাওলানা মুসা শোনামাত্র শুরা সদস্য সৈয়দ শামিমকে ফোন দেন যে কি ভাই? কালকে নাকি আমেলার মিটিং?
অথচ মিটিং ডাকার অধিকার কেবল মাওলানা মুসার।
জী জী মুসা ভাই। আমাকে কিছুই বললেন না যে?
না, চিন্তার কারণ নাই ভাই। আমি ভাই থাকতে তুমি চিন্তা করবে কেন? আমার জীবন থাকতে তোমার কোন ক্ষতি হতে দেবনা।
৪২ লক্ষ কেমনে হল?
আরে না, ওটা তো একটা হিসাব।
৪২ লক্ষ টাকা তো দূরের কথা ৪২ হাজার টাকা আমার হাতে নাই ভাই, মাওলানা মুসা ফোনে বলেন।
সৈয়দ শামিম- শোন মুসা, আমরা একটা লামসাম ফিগার পাইছি। তুমি চিন্তা করোনা।
মুসা- তাইলে মিটিংয়ে কি বলবো?
শুধু বলাবা- যে যেহেতু আমি মুহতামিম, তাই সকল দায়িত্ব আমার উপর বর্তায়। তাই ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখে সামনে মাদরাসা কিভাবে সুন্দর ভাবে চলে সেই পরামর্শ দিন আপনারা।
সকল দোষ একা আমার উপর নিবো কিভাবে ভাই?
সৈয়দ শামিম-আরে না, দোষ তোমার কই? তুমি স্বীকার করে নিলেই তো হল। আমরা পরে হিসাব রক্ষকদের ধরবো। তোমার স্বীকারোক্তির মাধ্যমে তোমার সাইট খতম। তুমি মুক্তি পাবে।
মাওলানা মুসা এভাবে সক্রেটিসের আত্মহুতির মরণ বিষ নিজহাতে পান করার ব্যবস্থা করেন। ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়।
মূলত মাওলানা মুসাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে কু-পরামর্শ দিয়ে সৈয়দ শামিম ও বাকিরা তাকে বিপথগামী করেন।
মাওলানা মুসাকে তার মুখ দিয়ে তাঁকেই ফাঁসিয়ে পরমুহুর্তে তারা তাদের আসল চেহারা দেখাতে শুরু করে যা এখনো চলমান।
১০- পরিচালনা কমিটির মিটিং চলাকালিন সময়ই পরিকল্পিত হিসাবের পিডিএফ কপি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এবার চিন্তা করুন যে অবৈধ নিয়োগের তদন্তকারীদের উদ্দেশ্য কি?
মাওলানা মুসা হিসাবের রিভিউ চাইলে তারা তাকে বুঝিয়ে দেন যে দেখো বিষয়টা লম্বা হবে। আমরা ঐ এক মিটিংয়ে সব সমাধান করে দিতে চাই।
এভাবে পদে পদে তাকে কু-পরামর্শ ও ধোকা দেয়া হয় তাকে।
অবৈধ নিয়োগ, অবৈধ শুরা, ভুয়া হিসাব, নোংরামি খেলা চলছে জামেয়াকে নিয়ে। তারা এখন মুসাকে সরিয়ে প্রিনসিপ্যাল হাবিবুর রাহমানের নাম মুছে ফেলতে তৎপর হয়েছে। তাদের আচরন কথাবার্তা জনমনে সন্দেহ জাগাচ্ছে যে আসলে হিসাবের নামে এসব দাগি লুটেরা ধোকাবাজ গুলোর উদ্দেশ্য ভালনা। তাদের বাহানা হল মাওলানা সামিউর রাহমান মুসা কিন্তু মূল টারগেট হল প্রিনসিপ্যাল হাবিবুর রাহমান রাহ.। তাঁর ইতিহাস ঐতিহ্য আদর্শ চিন্তা চেতনাকে বিলীন করে দেয়াই তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য।
প্রিনসিপ্যালের সৈনিকরা জীবীত থাকতে ধোকাবাজদের ধোকাবাজি চলতে দেয়া হবেনা ইনশাআল্লাহ ।
মাওলানা সামিউর রাহমান মুসাকে আমরা পরামর্শ দিবো যে তিনি অতি তাড়াতাড়ি আইনি পদক্ষেপ নিন। এসব অনিয়ম অসাংবিধানিক কাজের বিরুদ্ধে আদালতে মামালা করুন। মানহানি সহ সেইসব নোংরাবাজদের নোংরামির বিরুদ্ধে আইনি  উদ্যোগই হবে উপযুক্ত জবাব ইনশাআল্লাহ।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কমাশিসার ২১ দফা

কমাশিসা ডেস্ক: ১. একক কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাস্তবায়ন করুন। ২. আধুনিক শিক্ষার সাথে সমন্বয় সাধন ...