অনলাইন ডেস্ক :: ধনী আর বিত্তশালীদের নিয়ে আলোচনা হলে আমরা সবসময় সাধারণত বিশ্বের সেরা ধনী ব্যক্তিদের নিয়েই আলোচনা করি। বাহাদুরি, বিলাসিতা, বা নীতিবাক্য, অধ্যবসায়, সাফল্য আর উদ্যমের কথা আসলে কেবল ওয়ারেন বাফেট, বিল-গেটসদের নামই উচ্চারন করে থাকি। অথচ আমাদের দেশেও যে অনেক বিলিনিয়ার রয়েছে তাদের কথা একবারও বলিনা। অনেকে তাদের নাম জানলেও সব সময় একধরণের নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করি। অথচ ইতিবাচক ভাবে দেখলে তাদের কাছ থেকেও নিতে পারি অনেক অনুপ্রেরণা।
বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ট ও গ্রহনযোগ্য ম্যাগাজিন ফর্বস সম্প্রতি বাংলাদেশের শীর্ষ দশ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে। দেশের শীর্ষ ধনীদেও ওই তালিকায় স্থান পেয়েছেন সিলেটের আজম জে চৌধুরী, রাগীব আলী, সামসুদ্দিন খাঁন ও ইকবাল আহমদ।
ফর্বসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এবারও বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ী ড. মূসা বিন শমশের। তাঁর অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য সূত্রে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ধনী ব্যবসায়ি হিসেবে নাম উঠে এসেছে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। যার সম্পদের পরিমাণ ৩ হাজার কোটি টাকা। এর পর বেক্সিমকোর সালমান এফ রহমান (২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা), ৪র্থ পারটেক্সের এম এ হাশেম (২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা), ৫ম আবুল খায়ের গ্রুপের কর্ণধার (২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা), চট্রগ্রামের বিএসআরএম গ্রুপের কর্ণধার (২ হাজার ১০০ কোটি টাকা), ৬ষ্ঠ আকিজ গ্রুপের কর্ণধার (২ হাজার কোটি টাকা), ৭ম আকিজ গ্রুপের কর্ণধার (১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা), ৮ম চট্রগ্রামের পিএইচপি গ্রুপের কর্ণধার (১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা), ৯ম রাগীব আলী (১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা) ও দশম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার (১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা)। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জন্ম নেয়া আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসায়ি রহস্যমানব প্রিন্স মূসার রাজকীয় জীবন-যাপন নিয়ে ২০০৮ সালে প্রচ্ছদ করেছিলো লন্ডনের সানডে টেলিগ্রাফ। সেখানে বিশ্বের দশজন ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে প্রিন্স মূসার নাম উঠে আসে।
বর্তমানে বাংলাদেশের শীর্ষ ধনী মূসা বিন সামসের। তবে প্রিন্স মূসা নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার সন্তান মুসা এখনো অনেকের কাছেই রহস্যময় পুরুষ। তাকে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি বাণিজ্যের অগ্রদূত বলা হয়। তিনি ড্যাটকো গ্রুপের এর মালিক।
ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, মুসা বিন শমসেরের মোট অর্থের পরিমাণ ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা)। এর মধ্যে সাত বিলিয়ন ডলার আইনি জটিলতায় আটকে আছে সুইস ব্যাংকে।
বেশভূষা ও অঙ্গসজ্জায় মুসা ব্যবহার করেন ১৬ ক্যারেটের একটি রুবি। যার দাম ১০ লাখ ডলার। ৫০ হাজার ডলার দামের একটি চুনিও পরেন তিনি। এ ছাড়াও পরেন ৫০ হাজার ডলার মূল্যের একটি হীরা ও এক লাখ ডলার মূল্যের একটি পান্না (এমেরাল্ড)। নিত্যদিনের চলাফেরায় অথবা বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে তিনি ৭০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের গহনা-অলঙ্কার পরেন। তার পরনের কয়েকটি স্যুট স্বর্ণ সুতা খচিত। তাকে কখনো এক স্যুট পরিহিত অবস্থায় দুবার দেখা যায় না। প্রতিটি স্যুটের মূল্য পাঁচ থেকে ছয় হাজার পাউন্ড। প্রতিদিন তিনি গোসল করেন গোলাপ পানিতে। আর বাংলাদেশী পানি তিনি পান করেন না। বিদেশ থেকে আমদানি করা পানি তিনি পান করেন।
তিনি হীরকখচিত যে জুতা পরেন তার প্রতি জোড়ার মূল্য এক লাখ ডলার। তার সংগ্রহে রয়েছে রতœখচিত হাজারো জুতা।
এক কোটি ডলার মূল্যের মন্ট বাল্ক কলম ব্যবহার করেন তিনি। ফ্রান্সের তৈরি ওই কলম মাত্র একটিই তৈরি করেছে নির্মাতা কোম্পানি।
তবে সাংবাদিকদের সামনে নিজেকে নিঃস্ব দাবি করেন মুসা বিন শমসের!
ধনকুবের হিসেবে পরিচিত দেশের বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের নিজেকে নিঃস্ব বলে দাবি করেছেন। ১২ বিলিয়ন ডলার সুইস ব্যাংকে আটকে থাকায় তার কাছে তেমন কোনো সম্পদ নেই। নিজের কাছে যা আছে সবই বৈধ সম্পদ বলেও দাবি করেন মুসা।
বৃহস্পতিবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুসা বিন শমসের সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মুসা বিন শমসের বলেন, আমি দুদককে বলেছি, আমার তেমন কোনো সম্পদ নেই, সুইস ব্যাংকে টাকা আটকে থাকায় আমি একপ্রকার নিঃস্ব। নিজেকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলেও দাবি করেন আলোচিত ও বিতর্কিত এই ব্যবসায়ী।
সুইস ব্যাংক ১২ বিলিয়ন জব্দ কেন করেছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ইরেগুলার ট্রানজেকশনের কারণে করেছে। কোর্ট আমার পক্ষে আছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে রিপোর্ট পাবো’।
বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মালিক। তিনি প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক । তিনি আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা পরিচালক।
বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট কোম্পানি বা বেক্সিমকো তাদের যাত্রা শুরু করেছিলো ১৯৭২ সালের প্রথম দিকে বারটার ট্রেডিং করাই ছিলো তাদের মূল ব্যবসা সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বেক্সিমকো উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগ শুরু করেন। আশির দশকে ঔষধ শিল্পে বেসরকারী বিনিয়োগের সুযোগ হবার পরে বক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসে বিনিয়োগ করেন। এরপর আসে টেক্সটাইলসের খাতে বিনিয়োগ। এখন বেক্সিমকো বিমান পরিবহন খাতকেও তাদের ‘কোর বিজনেস’ এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক। বাজার মূল্য এবং আর্থিক প্রবৃদ্ধির হিসেবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের মালিক ও শিল্পদ্যোক্তা। বিচক্ষণ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতকে সুসংহত করতে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। আবাসন দিয়ে শুরু হলেও দিনে দিনে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবসায় সম্প্রসারিত হয়েছে সিমেন্ট, কাগজ, ইস্পাতজাত পণ্য উৎপাদন, এলপি গ্যাস, বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খাতে। দেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি মিডিয়া হাউজ (দৈনিক কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান ও বাংলানিউজ) এই গ্রুপের মালিকানাধীন।
পারটেক্স গ্রুপ ও ইউসিবিএল ব্যাংকের চেয়ারম্যান । তিনি প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক। পারটেকস গ্রুপের চেয়ারম্যান। সাবেক এই মন্ত্রী ঢাকায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে নিজের বাড়ি বানিয়েছিলেন। নকশা এবং প্রকৌশলী সবাই এসেছিলেন ফ্রাঞ্চ থেকে। তিনি পারটেক্স গ্রুপের ছাড়াও দুইটা বেসরকারী ব্যাংকের মালিক। সিটি এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মালিক তিনি।
তিনি ইস্ট-কোস্ট গ্রুপের মালিক। প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং মবিল যমুনা লুর্বিক্যান্টের সোল এজেন্ট। আজম জে চৌধুরীর পুরো নাম আজম জাহাঙ্গীর চৌধুরী। তার জন্ম মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া আজম বর্তমানে প্রায় ৪১০ মিলিয়ন ডলারের মালিক।
আজমের শৈশব কাটে কুলাউড়ায়। তিনি কুলাউড়ার নবীণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে সিলেট এমসি কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে মাস্টার্স করে ১৯৮১ সালে ব্যবসায় পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করেন। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রাইম ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তিনি এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ব্যাংকের সাবেক এই চেয়ারম্যান বর্তমানে মবিল যমুনা লুব্রিকেন্টের এমডি। ইংরেজী দৈনিক নিউজ টুডে এবং একুশে টিভির পরিচালক ছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার টিএন্ডটির পরিচালকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
তিনি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বহুজাতিক কোম্পানি ইস্টকোস্ট গ্রুপ। এরপর গ্রীণ ওয়েজ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ, ঘোরাশাল পাওয়ার স্টেশন ও সিদ্ধিগঞ্জে ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ ট্রেড সিন্ডিকেট, ইস্টকোস্ট শিপিং লাইন, গ্রীণওয়েজ ইন্ডাষ্ট্রি, ইষ্ট কোস্ট ট্রেডিং, সাউথ এশিয়া প্লাষ্টিক কোম্পানি, গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মালিক ও পরিচালক তিনি। গ্রীণ ডেল্টাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বাংলাদেশ নরওয়ে চেম্বারের সভাপতিও।আর্তমানবতার সেবায় তার অর্থে বিভিন্ন স্কুল কলেজ, বৃদ্ধাশ্রমসহ নানা সামাজিক প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে।
তিনি ঠিকাদারি, রিয়েল এস্টেট, হোটেল ও নৌ পরিবহন (জাহাজ) ব্যবসা রয়েছেন তাঁর। টাকার পরিমান ৪০০ মিলিয়ন ইউ এস ডলার।
রাগিব আলী
তিনি চা উৎপাদন ব্যাবসায় সফল একজন ব্যাবসায়ী। তিনি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তিনি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক ।
তিনি একে খান এন্ড কোম্পানি লিঃ-এর চেয়ারম্যান এবং ডিরেক্টর। তিনিও প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মালিক । বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা, বিয়ানী বাজার কান্সার হাসপাতালের চেয়ারম্যান, মহারাণী রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শামসুদ্দিন খান কারী অস্কারখ্যাত ‘বৃটিশকারী এ্যাওয়ার্ডে’ রেষ্টুরেন্ট ইন্ডাষ্ট্রিতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পুরষ্কারও পেয়েছেন।
তিনি সিলেটের একজন ব্যাবসায়ী। সামুদ্রিক খাবার ব্যবসায় তিনি সফল। তিনি সীমার্ক গ্রুপ লিবকো ব্রাদার লিঃ-এর চেয়ারম্যান এবং ডিরেক্টর । তিনি প্রায় ২৫০-২৯০ মিলিয়ন ডলারের মালিক ।
সাইফুল ইসলাম কামাল
তিনি নাভানা লিঃ ও নাভানা সিএনজি লিঃ-এর চেয়ারম্যান এবং ডিরেক্টর । তিনিও প্রায় ২৯০ মিলিয়ন ডলারের মালিক ।