বুধবার, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ বিকাল ৪:৪৬
Home / আন্তর্জাতিক / ইরাক বাদে বাকি ৬ দেশে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধজ্ঞা
ফাইল ফটো

ইরাক বাদে বাকি ৬ দেশে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর মুসলমানপ্রধান ছয়টি দেশকে লক্ষ্য করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। অভিবাসী গ্রুপ ও নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। মাঠে ও আদালতে ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশকে মোকাবিলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
প্রথম দফার নির্বাহী আদেশ থেকে ইরাকের নাম বাদ দিয়ে গতকাল সোমবার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। ১৬ মার্চ থেকে আদেশটি কার্যকর হবে।
নতুন আদেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছয়টি দেশ হলো ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর ৯০ দিনের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে দেশগুলোর যেসব নাগরিক এরই মধ্যে ভিসা পেয়েছেন, যেসব অভিবাসীর গ্রিনকার্ড রয়েছে, যাঁরা কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যাঁদের আগে রাজনৈতিক আশ্রয়ে বা শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে, তাঁদের প্রতি এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল রাখা হয়েছে।
গতকাল অনেকটা নীরবেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। আদেশটি হোমল্যান্ড সেক্রেটারি জন কেলি, সেক্রেটারি অব স্টেট রেক্স টিলার্সন ও অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের এ তিন কর্মকর্তাই নতুন নির্বাহী আদেশ প্রকাশের সময় সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেননি।

নতুন নির্বাহী আদেশের প্রতিবাদ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, নিউইয়র্ক সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন, ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিসসহ বিভিন্ন নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠন। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে শুরু করে শিকাগো, নিউইয়র্কসহ বড় বড় নগরে দ্রুতই প্রতিবাদে নেমে পড়েন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকেরা। প্রতিবাদ সমাবেশগুলোতে বলা হয়েছে, নতুন নির্বাহী আদেশটি আগের আদেশের অনুরূপ। কোনো বিশেষ ধর্মকে লক্ষ্য করে ভ্রমণ বা অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা আমেরিকার মূল চেতনার পরিপন্থী। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন না করে এমন ভ্রমণ বা অভিবাসন নিষেধাজ্ঞাকে প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনগুলো।

ব্রেনান সেন্টারের সহপরিচালক এলিজাবেথ গোয়েইথেন বলেছেন, নতুন নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আমেরিকার জনগণ ও আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ব্রেনান সেন্টারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে। নিউইয়র্ক সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের নির্বাহী পরিচালক ডোনা লিবারম্যান বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন আমেরিকার সংবিধানের মূল ভিত্তি বুঝতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম-অধিকার আমেরিকার সংবিধান ও আইনের মূল কথা। এই অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য আইনের লড়াই অব্যাহত থাকবে।

গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ পর ২৭ জানুয়ারি মুসলিমপ্রধান সাত দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের শহরে শহরে প্রতিবাদ জানায় মানুষ। নিষিদ্ধ দেশগুলো থেকে আসা বহু লোককে আটকে দেওয়া হয় বিমানবন্দরগুলোতে। এতে সৃষ্টি হয় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সর্বশেষ সানফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিপক্ষে রায় দেন। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে সানফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালতের নবম সার্কিট আদালত নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। এই অবস্থায় নতুন করে প্রায় একই আদেশ জারি করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

নির্বাহী আদেশে মুসলমানপ্রধান ছয়টি দেশের কথা বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা এখনো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। অভিবাসনবিরোধিতার চাঙা এ সময়ে বাংলাদেশিসহ সব অভিবাসীরা সতর্ক অবস্থায়। এর মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় বাড়ানোর জন্য অভিবাসন বিভাগ নতুন লোকবল বাড়াচ্ছে।

নিউইয়র্কে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশটিও আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কোনো কারণ নেই। অভিবাসন ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের জন্য আইনের সংস্কার করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে যাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন রয়েছে, যাঁরা যেকোনো ধরনের আইনের আওতায় রয়েছেন, তাঁদের অহেতুক উৎকণ্ঠায় পড়ার কোনো কারণ নেই।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

সীমান্তে অভিবাসী শিশুদের তাড়াতেও কাঁদানে গ্যাস!

কমাশিসা: কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারদিক। আতঙ্কে ছুটোছুটি করছে অনেকগুলি পরিবার। শিশুদের জাপটে ধরেছেন ...