শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ৩:০১
Home / রাজনীতি / জোটে ৬০ আসন চাইবে জমিয়ত

জোটে ৬০ আসন চাইবে জমিয়ত

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শতবর্ষী ইসলামি রাজনৈতিক দল। ১৯১৯ সালে শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদুল হাসান রহ. এর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে দলটির অসামান্য অবদান রয়েছে। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট পাকিস্তান জন্ম লাভ করে। করাচিতে পাকিস্থানের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মাওলানা শাব্বীর আহমদ উসমানি রহ. এবং ঢাকায় উত্তোলন করেন মাওলানা জাফর আহমদ উসমানি রহ.।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রে ইসলামি ভাবধারা রক্ষা, আইয়ুবখানের স্বৈরশাসন, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা, পাকিস্তানের শিক্ষানীতি ইত্যাদি ইস্যুতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে দলটি।

১৯৫২ সালে জমিয়তের রাজনৈতিক শাখা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে নেজামে ইসলাম পার্টি।১৯৫৩ সালের ডিসেম্বরে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হলে ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জমিয়ত তথা নেজামে ইসলাম জাতীয় পরিষদে ৪টি এবং প্রাদেশিক পরিষদে ৩৬টি আসন লাভ করে।

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে চারদলীয় জোটের অংশিদার ইসলামী ঐক্যজোটের অন্যতম শরিক জমিয়তের মুফতি ওয়াক্কাস জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জমিয়তের প্রার্থী এ্যডভোকেট শাহিনুর পাশা।

স্বাধীন বাংলার প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন মাওলানা তাজাম্মুল আলী। এরপর সভাপতি নির্বাচিত হন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক । পরবর্তি সভাপতি হাফিজ মাওলানা আব্দুল করীম শায়খে কৌড়িয়াকে নির্বাচীত করা হয়, তিনি ২০০১ পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন ।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে আল্লামা আব্দুল মুমিন এবং মহাসচিব হিসেবে আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমি দা.বা. দায়িত্ব পালন করছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল। আগামী নির্বাচন তারা জোটবদ্ধভাবেই করতে চায়। আওয়ার ইসলামকে এমনটি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব এ্যডভোকেট শাহিনুর পাশা। তার সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আওয়ার ইসলাম টুয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক আতাউর রহমান খসরু

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মনে করে, বর্তমান ইসি দল নিরপেক্ষ নয়। কারণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মিডিয়া কর্মীরা তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছেন। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণও রয়েছে। সুতরাং বর্তমান ইসির ব্যাপারে জনগণ হতাশ। ইসিতে জমিয়ত ও জনগণের কারোই প্রত্যাশা পূরণ হয় নি। সুতরাং জমিয়ত মনে করে বর্তমান ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

দলটির যুগ্ম মহাসচিব এ্যডভোকেট শাহিনুর পাশার কাছে জানতে চাই, কিন্তু তাদের অধীনে একটি নির্বাচন হয়েছে এবং সেটা সুষ্ঠুও হয়েছে, তাছাড়া তাদের সময় দেয়া উচিৎ নয় কি? উত্তরে তিনি বলেন, একটি দুইটি নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় এবং তা যদি বিরোধী দলের দখলে চলে যায়, তাতে কী সরকারের কী ক্ষতি হবে। এর দ্বারা যদি তারা নিজেদের সততা প্রমাণের চেষ্টা করবে।

‘গত নির্বাচনের কথাই ধরুন। নির্বাচনের আগে ও পরের নির্বাচন বিশ্লেষণ করবে সরকারের চালাকি ধরা পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার হলে বর্তমান ইসির অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।’

তবুও তার দল জমিয়ত এবং তিনি নিজেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

আলাপচারিতায় এ্যডভোকেট শাহিনুর পাশা বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাদের জোরালো ভূমিকা রাখা আবশ্যক।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব জানান, ‘আপাতত জোটের সিদ্ধান্তই জমিয়তের সিদ্ধান্ত। জোট নির্বাচন করলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নির্বাচন করবে। যদি ভিন্ন কোনো প্রেক্ষিত তৈরি না হয় এবং জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে বাধ্য হয়।

জোট থেকে বের হয়ে আসার কোনো সম্ভাবনা আছে কী? ‘না, জোটে থাকার সম্ভাবনা ৯৯ ভাগ বলতে পারেন। অথবা ১০০ ভাগ। কারণ জোটবদ্ধ রাজনীতি না করলে দেশকে এ গভীর সংকট থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে না।’

বাংলাদেশে ইসলামি রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রাচীন দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। দুই বছর পর শতবর্ষ পূরণ করবে দলটি। কিন্তু জনগণের উপর প্রভাব এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে জমিয়ত এতোটা পিছিয়ে কেনো? উত্তরে মাওলানা শাহিনুর পাশা বলেন, ‘আমরা শতাব্দীর প্রাচীন ইসলামি কাফেলা। ২০১৯ সালে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম তার শতবর্ষ পূরণ করবে। দীর্ঘ এ পথযাত্রায় জমিয়তের সাফল্যও কম না। পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং পাকিস্তান আমলের রাজনীতিতে আমাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আমাদের নির্বাচনী তৎপরতা কমে যায়। নির্বাচনী কালচার থেকে সড়ে যায়। এখন সেই কালচার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমরা এখন নির্বাচনমুখী। আপনি লক্ষ্য করবেন, আমাদের দল থেকে বিভিন্ন এলাকায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আসছে।’

জমিয়তের জনপ্রিয় এ নেতা বলেন, ‘জনপ্রিয়তা থাকার পরও আর্থিক সংকটের কারণেও অনেক সময় জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম নির্বাচন করতে পারে না। সুতরাং যেখানে ৯০ ভাগ নিশ্চয়তা থাকে সেখানেই তারা প্রার্থী দেন।’

নির্বাচনী কৌশল, ইশতেহার ও প্রার্থী সম্পর্কে এ্যডভোকেট শাহিনুর পাশা বলেন, ‘নির্বাচনী কৌশল ও ইশতেহার জোটের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা হবে। আমরা ৪০টি আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা জোটের কাছে ৬০ আসন দাবি করবো। ৪০টির কম হলে মানবো না।’

আওয়ার ইসলামের সৌজন্যে

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

আজান শুনে ক্ষেপে গেলেন আ’লীগ নেতা আনহার চেয়ারম্যান!

নিজস্ব প্রতিবেদক : আনহার মিয়া। বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ...