মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকার মুসলিমরা আজ চাপের মুখে। এই দেশ কোনো ধর্মের, বর্ণের নয়। যেখান থেকেই আগমন ঘটুক, আমেরিকা সব বর্ণের, সব ধর্মের মানুষের দেশ। ঘৃণাকে পরাজিত করে আমেরিকায় ভালোবাসার জয় যাত্রা ঘটবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর টাইম স্কয়ারে ‘আমিও মুসলিম’ নামের এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত প্রযোজক এবং ব্যবসায়ী রাসেল সায়মনের আহ্বানে আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে নগরীর মেয়রসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেন। বিভিন্ন অভিবাসী দল, নানা ধর্মের মানুষ, বিশেষ করে মুসলিমদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। প্রেসিডেন্টের এ নির্বাহী আদেশের পর অভিবাসীদের মধ্যে, বিশেষ করে মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি আদালতের আদেশে সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর প্রশাসন থেকে আভাস দেওয়া হয়েছে, আটঘাট বেঁধে এ বিষয়ে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করা হবে শিগগিরই। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন তৎপরতাকে চরম অভিবাসনবিরোধিতা বলে মনে করছে অভিবাসী গোষ্ঠীগুলো। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আমেরিকার বড় বড় নগরীতে অভিবাসীদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল বিকেলে নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে ‘আমিও মুসলিম’ প্রতিবাদ সমাবেশে নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বলেন, ‘আজকের দিনে আমি নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, নিউইয়র্ক নগরী সব ধর্মের। সব বিশ্বাসের। আমেরিকা দেশ হিসেবে যে মৌল নীতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা আমরা রক্ষা করে যাব।’
ব্যবসায়ী রাসেল সায়মন বলেন, মুসলিমরা আজ নিজেদের অরক্ষিত ও হুমকির সম্মুখীন বলে মনে করছেন। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘৃণা ও বিদ্বেষের উদাহরণ রেখে যাচ্ছেন। আমেরিকা তা প্রত্যাখ্যান করে ভালোবাসার জয়গান গেয়ে যাবে। ঘৃণা নয়, ভালোবাসাই টিকে থাকবে।
সমাবেশে অভিনেত্রী সুসান সেরান্ডন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, আজকের পরিস্থিতিতে নীরব থাকার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘৃণা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সব বর্ণ-ধর্মের প্রতি যে অধিকার দেওয়া হয়েছে, আজ তার অবজ্ঞা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছেন, তিনি জনগণের রায় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যা প্রয়োজন, তার সবই করবেন। বিভিন্নভাবে আসা অভিবাসীরা আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি।