আজ ৩ ডিসেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে দাওয়াতুল হকের ২২তম কেন্দ্রীয় ইজতেমা। খবরটি নিশ্চিত করেছেন মজলিসে দাওয়াতুল হকের প্রচার সম্পাদক মাওলানা রিদওয়ান হাসান। হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহ. সূচিত এই দাওয়াতুল হক সুন্নত প্রতিষ্ঠার একটি বিপ্লবী আন্দোলন। যুগের সংস্কারক থানভী রহ. যখন দেখলেন মুসলমানদের মধ্যে সুন্নতের প্রতি চরম গাফলতি সৃষ্টি হয়েছে এবং সুন্নতের ওপর আমল না থাকার কারণে পুরো দ্বীন থেকেই তারা ছিটকে পড়ছে, তখন তিনি ‘দাওয়াতুল হক’ নামে একটি দাওয়াতি কার্যক্রম হাতে নেন। তাঁর এই ইলহামি উদ্যোগে থানভী সিলসিলার প্রত্যেক বুযুর্গ আন্তরিকভাবে যুক্ত হন। পাক-ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে দাওয়াতুল হকের কার্যক্রম আস্তে আস্তে বিস্তার লাভ করে।
এ ব্যাপারে মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমীরুল উমারা মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান বলেন, সুন্নত মানুষকে সুন্দর করে। করে সুশৃঙ্খল ও আলোকিত। সুন্নতের মধ্যেই রয়েছে মানবজীবনের সামগ্রিক কল্যাণ, সাফল্যের চাবিকাঠি। সুন্নতের আলোকে সাজাতে পারলে জীবনে কোনো সমস্যা থাকে না। রাসুল পরবর্তী যুগে সাহাবায়ে কেরাম ও তার পরের যুগে সুন্নতে রাসুলের যথার্থ চর্চার কারণেই মুসলমানরা একদিন সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিলেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা, কাজ, আদেশ-নিষেধ তথা জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে অনুসরণের নামই সুন্নত। জ্ঞান-বিজ্ঞানের এ চরম উৎকর্ষতার যুগে খুব কম লোকই সুন্নতের চর্চা ও বিকাশে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করছেন। রাসুলের সুন্নত থেকে সরে পড়াও বর্তমানে মুসলমানদের অধঃপতনের অন্যতম কারণ। তবে এখনও কেউ কেউ ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে সুন্নতের অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। মজলিসে দাওয়াতুল হক সুন্নতের চর্চা ও অনুশীলনমূলক এমনই একটি প্রতিষ্ঠান। মুসলিম উম্মাহ যখন সুন্নতে নববীর মূলধারা থেকে অনেকটা সরতে শুরু করেছে, তখন এ দাওয়াতি সংগঠনটি প্রতিটি মুসলমানকে সুন্নতের ওপর টিকে থাকার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। দৈনন্দিন প্রতিটি কাজ ও ইবাদত সঠিকভাবে পালনের জন্য দাওয়াতুল হক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও দাওয়াতুল হকের সুন্নতের অনুশীলনমূলক কার্যক্রম চলছে দীর্ঘদিন ধরে। থানভী রহ. এর খলিফা শাহ আবরারুল হক হারদুয়ী রহ. বারবার বাংলাদেশে এসেছেন এবং এ দেশের আলেমদের উদ্বুদ্ধ করেছেন দাওয়াতুল হকের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হতে। এর ওসিলায় যারা এক সময় ধর্মকর্মের ধারেকাছেও যেতেন না তারাও এখন দাওয়াতুল হকের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পুরোপুরি সুন্নতি জীবনযাপনের প্রতি ব্রতী হয়ে চলেছেন।
যে যুগে একটি সুন্নত জিন্দা করার ফযিলত একশো শহিদের, সে যুগে দাওয়াতুল হকের মতো সুন্নতি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারা অবশ্যই সৌভাগ্যের। প্রতিটি মুসলমানের উচিত এর কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকা। সেমতে ৩রা ডিসেম্বর দাওয়াতুল হকের ২২তম মারকাজি ইজতেমা-২০১৬। প্রতিবারের মতো এবারও এখানে জড়ো হবেন দেশ বিদেশের আলোকদিশারী আলেম-বুযুর্গরা। অংশ নেবেন শীর্ষ জাতীয় ব্যক্তিত্বসহ সর্বস্তরের জনতা। তাদের কথা শোনা ও সংস্পর্শে যাওয়ার প্রচেষ্টা থাকা উচিত প্রত্যেকের। দাওয়াতুল হকের এবারের ইজতেমা সফল হোক- সে প্রত্যাশা সবার।
