শান্ত শিষ্ট ও মার্জিত চেহারার এক যুবক। চেহারায় সারল্য ও পবিত্রতার ছাপ সুস্পষ্ট। দেখলে মনে হয় ও কোনো পাপ করতে জানে না। এমনি ভদ্র ও নিষ্পাপ চেহারা যুবকটির। কী শান্ত আর সুশীল! দেখলে মায়া হয়, মনে দরদ উথলে ওঠে। চেহারায় ইলমের ঔজ্জ্বল্য ঝলমল করছে। চোখদুটি জ্ঞানের মহিমায় দীপ্যমান। এমনি একটি নিষ্পাপ যুবক আমীরের কাছে এসে কেঁদে পড়লো। জারজার হয়ে কাঁদছে। কান্নার গমকে কেঁপে কেঁপে উঠছে।
—কী ব্যাপার, তুমি কাঁদছো কেনো? আমীর জিজ্ঞাসা করলেন। যুবক নিরুত্তর। কোনো কথা ফুটছে না তার মুখে। কেবল কেঁদেই চলেছে। চোখদুটো বেয়ে অঝোরধারায় নামছে অশ্রু। আমীর বিচলিত হলেন। ভীষণ রকম উদ্বিগ্ন হলেন। এমন ভদ্র মার্জিত একটা যুবক, এমন ব্যাকুলভাবে কাঁদবে কেনো? তিনি ভেবে পাচ্ছেন না কিছুই। বারবার জিজ্ঞাসা করছেন, তোমার কী সমস্যা বলো? আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো তোমার সমস্যার সমাধান করতে। ছেলেটি এবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললো— আমাকে জেলে পাঠিয়ে দিন। শুনে আমীর অবাক! এ আবার কেমন আবদার? বিনা অপরাধে সেধে জেলে যাওয়া! তিনি ভেবে পাচ্ছেন না ছেলেটার কী হয়েছে, এমন অদ্ভুত আবদারই-বা কেনো করছে।
—আচ্ছা তুমি জেলে যেতে চাও কেনো? আমীর স্নেহসিক্ত কণ্ঠে জানতে চাইলেন। যুবকের অশ্রুভেজা মিনতি— আমার উস্তাদকে আপনি বন্দি করে রেখেছেন। আজ কতোদিন যাবত সবক হচ্ছে না। এ আমার অসহ্য! এরচে’ আমাকেও জেলখানায় পাঠিয়ে দিন। আমি সেখানে উস্তাদের খেদমত করবো আর সবক পড়বো।
এবার আমীর বুঝতে পারলেন প্রকৃত রহস্য। কিন্তু তিনি কী করবেন? একদিকে শায়েখ ইবনে তাইমিয়ার বিরুদ্ধে উত্তাল আন্দোলন, অন্যদিকে এই নিষ্পাপ ছেলেটির সকরুণ মিনতি। তিনি কোনদিকে যাবেন?