বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ২:২৯
Home / দেশ-বিদেশ / শিয়াদের বিজয় বহু আগেই হয়ে আছে

শিয়াদের বিজয় বহু আগেই হয়ে আছে

প্রসঙ্গ : সুন্নী আক্বিদা’র পাতায় পাতায় শিয়া আক্বিদা

শিয়া

ফাহিম বদরুল হাসান :: 

ইবলিস যখন দেখল, মানুষ গোনাহ করার পর তাওবা করে ক্ষমা পেয়ে যায়। তখন সে খুঁজতে লাগল, কীভাবে কী করলে মানবজাতি আর ভ্রান্তি থেকে ফিরতে পারবে না। তাওবা করে মুক্তি পাবে না। সে বের করলো, ‘বিদআত’। মানুষ পূণ্য মনে করে সারাজীবন বিদআত করে যাবে, তাই আর তাওবা করার কথা মাথায়ই না। এই ফর্মুলা ইবলিসের দোসররা যুগে যুগে এপলিক করে যাচ্ছে। যখন তাদের আদর্শকে সরাসরি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না, তখন অন্য একটি আদর্শের অভ্যন্তরে খুব সুচারুভাবে ঢুকিয়ে দেয়। শিয়ারাও এই ফর্মুলায় তাদের মতবাদের বিভিন্ন নীতি, কাজকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের জীবন-কাঠামোতে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি খুব স্বচ্ছভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এগুলোকে point out না করাটাই মুসলমানদের বিশাল পরাজয় এবং শিয়াদের আদর্শিক বিজয়।

(১) কারবালা দিয়ে মুহাররামকে ঢেকে দেয়া শিয়াদের বিশাল একটা বিজয়। ইসলামের অন্য ইতিহাসগুলোকে কারবালার ইতিহাস দিয়ে এমনভাবে আস্তরণ করেছে যে, হুসাইন ইয়াযিদ মুয়াবিয়া রা. বাঁচাতেই মুসলমানদের জান শেষ। আরো কত ইতিহাস যে এই মুহাররামকে ঘিরে, এগুলো বলার ফুরসত নেই। আদম আ. থেকে মুহাম্মাদ সা. পর্যন্ত পুরো মানবসভ্যতার পরতে পরতে মুহাররামকে ঘিরে রয়েছে ঐতিহাসিক তাৎপর্য। “আশুরা”কে পর্যন্ত ম্লান করে দিয়েছে “রক্তাক্ত কারবালা”। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা অর্ধ পৃথিবীর শাসক হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা. যে (প্রসিদ্ধ মতানুসারে) পহেলা মুহাররাম শহীদ হয়েছিলেন, এটা কয়জন মুসলমান জানে? তাঁর শাহাদাত নিয়ে দু’টা কথা বলা কি খুব শব্দক্ষেপণ! নাকি ইসলামের ইতিহাসে উমর তেমন কেউ নন! তাঁর শাহাদাতের ইতিহাসকে শিয়ারা ভুলিয়ে দিয়েছে।

(২) তাদের আরেকটি বিজয হচ্ছে, মুসলমানদের নামকরণে আলী, হাসান, হোসাইনের ব্যবহার। তাঁদের কোনোরকম মানহানি করতে বলছি না (আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি)। সাহাবায়ে কেরামের নামে সন্তানদের নামকরণ খারাপ কিছু নয়। তার উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেয়ের জামাই, অতি আদরের দৌহিত্রদ্বয়ের নামে নামকরণ তো অতি উত্তম। কিন্তু নামের শেষে ‘আলী, হাসান, হোসাইন’ লাগানো শিয়াদের মতাদর্শকে উজ্জীবিত রাখার একটা কৌশল। তারা কয়েকজন সাহাবীকে হাইলাইট করার মাধ্যমে অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামকে হেয় করা, অন্যান্য সাহাবীদেরকে মুসলমানদের জীবনাচার থেকে কৌশলে হাইড করা।

ইরান থেকে শুরু করে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের মুসলমানদের নামের শেষে আলী এবং হাসান-হোসাইন লাগানো হয়! দেখা যায়, মুহাম্মদ আলী,আলতাফ আলী, ইয়াকুব আলী; বদরুল হাসান, সদরুল হাসান, ফখরুল হাসান; সাবের হোসাইন, সাদেক হোসাইন, দেলোয়ার হোসাইন প্রভৃতি নাম।

একবার ভেবে দেখুন, কেন ইসলামের বাকি খলিফাদের নাম কিংবা অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামের নাম এভাবে surname হিসেবে রাখা হয় না!

(৩) শিয়াদের আরেকটা খুব সূক্ষ্ম বিজয় হচ্ছে, কোনো ধরনের ঐতিহাসিক রেফারেন্স ছাড়াই শত শত ‘অমর বাণী’কে হযরত আলী রা.’র নামে ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন সাধারণ মুসলমানরা ধুমছে প্রচার করে যাচ্ছে। যেটা হযরত আলী রা.’র উপর বিশাল অপবাদ। সুন্দর একটা উপদেশ মূলক কথা লিখেই নিচে দিয়ে দেয়, হযরত আলী রা.! হ্যাঁ, হযরত আলী রা. ছিলেন, জ্ঞানের ভান্ডার। অনেক মূল্যবান বাণীও রয়েছে তাঁর। তিনি আরবি ভাষার একজন প্রাজ্ঞ এবং বিখ্যাত বৈয়াকরণ, এটা যেমন ঐতিহাসিক সত্য, ঠিক তেমনি তার অবদান মুসলমানদের অহংকারের বিষয়। কিন্তু যা তিনি বলেন নি, তা তাঁর নামে চালিয়ে দেয়াটা খুব অন্যায় নয় কি!

এটা সর্বজন-স্বীকৃত যে, শিয়ারা চায় আলী রা. এবং তাঁর পরিবারকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একমাত্র উত্তরসূরী হিসেবে প্রমাণ করতে। “আহলে বাইত”কে আবু বকর, উমর, উসমান রা.দের উপরে মর্যাদা দিতে। তাই তারা বিভিন্ন কৌশলে আলী, হাসান-হোসাইন রা.কে হাইলাইট করে। আমরাও তাদের এই চাতুরীকে গুরুত্ব না দিয়ে ‘না জায়েয তো নয়’ বলে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাচ্ছি। এরকম আরো কত যে স্পিরিট শিয়ারা মুসলমানদের জীবনাচারে বিভিন্ন টেকনিকে ঢুকিয়ে দিয়েছে তা আল্লাহ্‌ই মালুম! এগুলো আইডেন্টিফাই করতে পারলে একসময় ‘সুন্নী সুন্নী’ বলে চুল্লিতে উঠে যাবেন ঠিকই; কিন্তু শিয়াদের বিশ্বাস, মূল্যবোধ, আচার-অনুষ্ঠানের সাথে কোনো পার্থক্য থাকবে না। আল্লাহ আমাদের আকিদাকে পরিচ্ছন্ন করুন। আমিন।

লেখক : তরুণ আলেম, চিন্তক

About Abul Kalam Azad

এটাও পড়তে পারেন

আজ ঐতিহাসিক ১৮ই এপ্রিল!

মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আল-মামুন:: আজ ১৮ এপ্রিল, বাংলাদেরশের ইতিহাসে একটি বিজয়ের দিন। ২০০১ সালের এই দিনে ...