তেল আবিবে সরকারের দুর্নীতি এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র বিরুদ্ধে তদন্তে ধীর গতির প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। খবর এএফপি’র।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে এক ধনী ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উপহার নেয়া এবং এক সংবাদপত্রের মালিকের পক্ষ নিয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিককে ডুবিয়ে দেয়ার বিনিময়ে বেশি কভারেজ পাওয়ার চুক্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইসরাইলের সর্বাধিক বিক্রিত দৈনিক ইডিয়ট আহারোনোৎ এর প্রকাশকের সঙ্গে তিনি এই চুক্তি করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
নেতানিয়াহুর দুর্নীতি তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার ধনকুবের প্যাকারকে জিজ্ঞাসাবাদ
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে অস্ট্রেলিয়া পুলিশ ধনকুবের জেমস প্যাকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। ধনাঢ্য সমর্থকদের কাছ থেকে নেতানিয়াহু দামী উপহার গ্রহণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর এএফপি’র।
কখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ না করে শুক্রবার পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, প্যাকার স্বেচ্ছায় অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পুলিশের (এএফপি) কাছে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন। তিনি ক্রাউন জুয়ার সম্রাট এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়।
ওই পুলিশ মুখপাত্র বলেন, ‘ইসরাইল কর্তৃপক্ষ পরিচালিত এক তদন্তের স্বার্থে একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্যাকার স্বেচ্ছায় এ জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন।’
তিনি আরো জানান, ইসরাইল ও অস্ট্রেলিয়া কোন দেশই প্যাকারকে অপরাধী মনে করছে না। উল্লেখ্য, সম্প্রতি তার আমেরিকান সঙ্গীত তারকা মারিহা ক্যারির সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে।
দু’টি দূর্নীতির অভিযোগে নেতানিয়াহুকে এ পর্যন্ত ছয় দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখান করে বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে এটি করা হয়েছে।
নেতানিয়াহু ঘুষ-জালিয়াতির একজন সন্দেহভাজন
তেলআবিব: ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসের লঙ্ঘনের দুই মামলায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি বলে আদালতকে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলি মিডিয়ায় খবরে এ কথা বলা হয়েছে।
চলমান তদন্তে রাষ্ট্রীয় সাক্ষী নিয়োগের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন একটি কোর্ট অর্ডারের অনুরোধ জানানো হয়। পরে বিচারক তা মঞ্জুর করেন এবং ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে।
তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এখানে সরকার পরিবর্তন করার প্রচারাভিযান চলছে, কিন্তু এটি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ সেখানে এমন কোনো কিছুই ঘটেনি।’
এছাড়াও বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যভিচি মেনডেলব্লিট বলেন, নেতানিয়াহুর সাবেক শীর্ষ সহকারী এরি হ্যারোকে রাষ্ট্রীয় সাক্ষী করার জন্য আলোচনা চলছে এবং এতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে মেনডেলব্লিট বলেন, ‘আমাদের চেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে এবং নেতানিয়াহু’র প্রাক্তন প্রধান সহকারীকে রাষ্ট্রীয় সাক্ষী হওয়ার জন্য পুলিশ সঙ্গে প্রসিকিউশন টিম কাজ করছে।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সত্য অনুসন্ধান করতে আমাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে দিন।’
দুটি মামলার একটি হচ্ছে, হলিউডের প্রযোজক আরনোন মিলচ্যানের সঙ্গে জড়িত; যেটি কেস-১০০০ নামে পরিচিত। নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রীর জন্য তাকে বিলাসবহুল আইটেম কিনে দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল।
অন্যটি হল, ডেইলি ‘ইয়েদীথ আরোনোথ’ এর প্রকাশক আরনোন মোজেসের সঙ্গে নেতানিয়াহু একটি চুক্তি প্রণয়ন করার চেষ্টা; যেটি কেস-২০০০ নামে পরিচিত।
নেতানিয়াহুর সাবেক শীর্ষ সহকারী হ্যারো ঘুষ, জালিয়াতি, বিশ্বাসের ভঙ্গ এবং মানি লন্ডারিংয়ের একজন সন্দেহভাজন। তিনি একটি মামলায় একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি ‘আমেরিকান ফ্রেন্ডস অব লিকুদ’ এর নেতৃত্বে ছিলেন।
হ্যারোর বিষয়ে তদন্তের সময় পুলিশ তার সেল ফোন জব্দ করে এবং এতে নেতানিয়াহু-মোজেসের কথোপকথনের রেকর্ডিং খুঁজে পায়; যা কেস-২০০০ এর তদন্তের ভিত্তি।
কারমোন মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বাস ছিল না যে, তদন্তকারীরা অপরাধমূলক অভিযোগের সাক্ষ্য প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন। যাইহোক, সিনিয়র আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা বিশ্বাস করতেন, তদন্ত করা উচিত ছিল, বিশেষ করে কারমনের রেকর্ডিংয়ের আলোকে; যা পুলিশ কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবের একটি অভিজাত এলাকার মহাসড়কে জমায়েত হয়।
এএফপি’র এক সাংবাদিক বলেন, এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়।