প্রায় সব যুদ্ধেই পরাজিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে উপহাস ও প্রশ্ন তুলেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের তিনি অনুপ্রবেশকারী আখ্যায়িত করে বলেন, এসব সেনাকে তার দেশে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়নি তার দেশ। তারা অবৈধভাবে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। আইসিস মোকাবিলায় সুদৃঢ় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন। তারা সমস্যা সৃষ্টি ও সবকিছু ধ্বংস করে দেয়ার ক্ষেত্রে ওস্তাদ।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ চীনা টেলিভিশন ফিনিক্স টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমাদের আমন্ত্রণ, আমাদের সঙ্গে পরামর্শ অথবা অনুমতি ছাড়া যে কোনো বিদেশি সেনা সিরিয়ায় মোতায়েন করা হলেই তারা অনুপ্রবেশকারী। তারা হোক আমেরিকান, তুর্কি অথবা অন্য যে কোনো দেশের। তিনি বলেন, (বিদেশি সেনাদের এই অনুপ্রবেশ) আমাদেরকে কোনোভাবে সহায়তা করছে না। তারা কী করতে যাচ্ছে? তারা কি আইসিসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইছে? কিন্তু মার্কিনিরা প্রায় সব যুদ্ধেই পরাজিত হয়েছে। তারা পরাজিত হয়েছে ইরাকে। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ইরাক ছাড়তে হয়েছে। এমনকি সোমালিয়া, ধরুন অতীতে ভিয়েতনামের কথা অথবা আফগানিস্তানের কথাই। তারা (মার্কিনিরা) যেখানেই সেনা পাঠিয়েছে সেখানেই তারা সফল হতে পারেনি। তারা শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। তারা সমস্যার সমাধান বের করার ক্ষেত্রে একেবারে বাজে অবস্থায়।
উল্লেখ্য, ফিনিক্স টিভিকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকার গত শনিবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানায় প্রকাশিত হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিএনএন। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে স্থানীয় যোদ্ধাদের সমর্থন দিতে মার্কিন নৌবাহিনী পৌঁছেছে সেখানে। তাদের সঙ্গে রয়েছে যুদ্ধাস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে যোদ্ধারা আগামী সপ্তাহগুলোতে রাকা শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। উল্লেখ্য, রাকা হলো আইসিস ঘোষিত রাজধানী। ওদিকে এসব এলাকায় নিরিাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকার জন্য সেনা মোতায়েনের কথা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পেন্টাগন ও মেরিন করপোরেশন। মার্কিন নৌ সেনাদের প্রকৃতপক্ষে কোন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানাতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা।
ওদিকে সিরিয়ার মানবিজ এলাকা ও এর আশপাশে প্রায় ১০০ আর্মি রেঞ্জারস মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়ার মধ্যে সহযোগিতার কোনো স্থান আছে কিনা। জবাবে আসাদ বলেন, তাত্তি¡কভাবে সিরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে উঠতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে তেমন কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ও পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আইসিসকে পরাজিত করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছিলেন। এদিকটিতে তিনি বেশি মনোযোগ দিয়েছিলেন। ইরাক ও সিরিয়ায় এই আইসিসই বড় শত্রæ। দুটি দেশ একই সমস্যা মোকাবিলা করছে। আসাদ বলেন, বাগাড়ম্বরতা ছাড়া এখন পর্যন্ত এক্ষেত্রে আমরা কোনো দৃঢ় পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। এক্ষেত্রে সহযোগিতা শুধু আকাশপথে হতে পারে না। সহযোগিতা হতে হবে স্থল পর্যায়ে। এ জন্য রাশিয়ানরা সফল হয়েছে। তারা আইসিসের বিরুদ্ধে সিরিয়ার সেনাদের সহযোগিতা করেছে। আইসিস হলো আল নুসরা ফ্রন্টের সৃষ্ট একটি শাখা।
সিএনএন, সানা, ওয়েবসাইট।