অনলাইন ডেস্ক : আবদুল করিম। অভাবের তাড়নায় ছেড়েছিলেন বাংলাদেশ। বর্তমানে সৌদি আরবে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন তিনি। সামান্য বেতনে শখের কিছু কেনার সামর্থ্য নেই। তাই হয়তো বাইরের রাস্তা থেকে একনজরে তাকিয়েছিলেন দোকানের ভেতরে রাখা স্বর্ণালংকারের দিকে।
ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করলেন একজন। তারপর সেই ছবি পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে। উপহাস করে ছবির নিচে লেখেন, ‘সে এমনভাবে দেখছে, যেন আবর্জনার দিকে তাকিয়ে আছে।’ ছবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ছবিটি চোখে পড়ে আবদুল্লাহ আল কোয়াহতানি নামে এক ব্যক্তির। ছবিটি উদ্দেশ্য করে করা বিভিন্ন মন্তব্য স্পর্শ করে তাঁর মন। ঠিক করেন ছবির ওই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করবেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই ছবিটি পোস্ট করেন ‘ইনসানিয়াত’ নামে তাঁর একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে। এর পর থেকেই ফোন কল আর খুদেবার্তা পেতে থাকেন তিনি।
কোয়াহতানি সিএনএনকে বলেন, ‘ছবিটি টুইটারে দেওয়ার তিন ঘণ্টা পর ৬০ হাজারবারেরও বেশি সেটি শেয়ার করা হয়, তখন আমরা তাঁকে খুঁজে পাই।’
কোয়াহতানি জানান, আবদুল করিমের ছবি দেখার পর তাঁর সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা যাবে জানতে চেয়ে খোঁজ নেন অনেকে। অনেকেই তাঁকে স্বর্ণালংকার, টাকা ও দামি মুঠোফোনসহ বিভিন্ন উপহার দিতে চান। এমনকি একটি চাল কোম্পানি তাঁকে চালের বস্তা উপহার দিতে চেয়েছেন।
পরে তুর্কি আল-দাজাম নামে সৌদি আরবের একটি স্পোর্টস চ্যানেলের কর্মকর্তা খুদেবার্তা পাঠানোর অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যায়, আবদুল করিম একটি স্বর্ণালংকার নির্বাচন করছেন। আবদুল করিম তাঁর নতুন উপহার পাওয়া স্বর্ণালংকার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, এমন একটি ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
এত আয়োজন দেখে বেশ আবেগী হয়ে পড়েন ৬৫ বছর বয়সী আবদুল করিম। তিনি বলেন, ‘আমি কাজ করছিলাম। একসময় একটি সোনার দোকানের সামনে দাঁড়াই। আমি উপহার পেয়ে খুব খুশি ও খুবই কৃতজ্ঞ।’
করিম আরো বলেন, ‘আমি আলোর ঝলক দেখেছিলাম। এটা কী তা জানতাম না। পরে শুনলাম আমার ছবি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।’