মাওলানা আতিকুল্লাহ :
একটা কথা শুরুতেই পরিস্কার করে নেয়া প্রয়োজন।
– ইসরাঈলে সাধারণ নাগরিক বলতে কেউ নেই। প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এবং বছরের একটা সময়, সামরিক কাজে অংশ নিতে হয়। শিশু-বৃদ্ধ যারা আছে, ওরাও কোনও-না কোনওভাবে সামরিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত। কেউ আগে যুক্ত ছিল। কেউ পরে যুক্ত হবে। আর ইসরাইলের প্রতিটি শিশুই জন্মগতভাবে মুসলিম বিরোধী। তাদের শিক্ষা ও পারিবারিক ব্যবস্থাই সেভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। আর যে অঞ্চলে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে মুসলমানদেরকে উচ্ছেদ করে বহু আগেই ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়েছে।
ইসরাঈলের আগুনটা কি আসমানী গযব? নাকি ভিন্ন কিছু? যদি প্রথমটা হয়, তাহলে যারা আগুন নেভাতে গিয়েছে, তারা কি আল্লাহর গযবের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়েছে? উত্তরটা জানা জরুরী হয়ে পড়েছে।
আজ যদি ‘বিশেষ কারো’ পক্ষ থেকে আগুন নেভানোর জন্যে বিমান পাঠানো হতো, অনেকের মুখেই বাঁকা হাসি ফুটে উঠতো। এ-আর এমন কি! জানা কথাই তো, তারা ইহুদিদের এজেন্ট! কিন্তু উরদুগান পাঠানোর কারনে সে অভিযোগ উঠছে না! অথচ তুরস্কের সাথেই ইসরায়েলের বিরাট বাণিজ্যিক ও সামরিক লেনদেন হয়ে থাকে।
আরবের অনেকেই ইসরায়েলের আগুন দেখে বেশ আনন্দ প্রকাশ করছে। অথচ আরবের প্রতিটি সরকার গোপনে ইসরায়েলকে চাঁদা দেয়। তলে তলে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলে!
তুরস্ক গাযায় সাহায্য পাঠায়। আবার গাযায় বিমান হামলার জন্যে ইসরায়েলকে তেলও দেয়। তুরস্ক রাশান পাইলটকে ফেলে দেয়। আবার পুতিনের সাথে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হয়। তুরস্ক দাভোসের সম্মেলন থেকে রাগ করে উঠে চলে আসে। আবার ইসরায়েলের আগুনও নেভাতে ছুটে যায়।
অনেকে বলবে, আমরা অসহায় মানুষের পক্ষে। সে যে ধর্মেরই হোক! প্রশ্ন হয়, অসহায়? কিভাবে? যার ঘরটাই দাঁড়িয়ে আছে ‘একজন’ মুসলিম থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেয়া ‘দখলকৃত’ ভিটের উপর, সে আবার অসহায় হয় কী করে? সে তো যালিম। সে তো লুটেরা। আবার এটাও ঠিক, ইসরাঈল তার নাগরিকদেরকে উপদ্রুত এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়েছে আগেই। তারপরও কিছু হতাহতের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় নি।
এক বিখ্যাত আরব শায়খ নাকি ‘ইসরায়েলের’ এই দুর্দিনে আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছেন। ইহুদিদেরকে বাঁচানোর জন্যে। হাঁ, আমরা আল্লাহর গযব নিয়ে বেশি খুশি হবো না। কারণ আল্লাহর গযব খুশি হওয়ার বিষয় নয়। সেটা যার উপরই পতিত হোক। গযব শিক্ষা নেয়ার বিষয়। আনন্দ প্রকাশ করার বিষয় নয়।
উরদুগান একসাথে তিনটা ফ্রন্টে যুদ্ধ করছেন:
ক. ইরাকের মসূলে ও তাল্লা‘ফারে। আমেরিকা ও ন্যাটোর সাথে মিলে।
খ. তুরস্ক নিয়ন্ত্রিত এলাকার কুর্দীদের বিরুদ্ধে। সিরিয়ার অভ্যন্তরে থাকা কুর্দিদের বিরুদ্ধে।
গ. রাশার সাথে মিলে ‘দায়েশের’ বিরুদ্ধে। হালাবে। রাক্কায়।
= একসাথে এতগুলো ফ্রন্ট খোলা বিপদজনক বৈ কি! মুসলিম গণহত্যা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। দুনিয়া ও আখেরাতে। উভয় জাহানে।