শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সন্ধ্যা ৬:৩৪
Home / অনুসন্ধান / শ্রীমঙ্গলে ১৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলাম ধর্ম পড়াচ্ছেন হিন্দু শিক্ষকরা

শ্রীমঙ্গলে ১৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলাম ধর্ম পড়াচ্ছেন হিন্দু শিক্ষকরা

classroomমৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শিক্ষক সংকটে ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্ম পড়াচ্ছেন হিন্দু শিক্ষকরা। এসব বিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষক না থাকায় হিন্দু শিক্ষকদের দিয়েই ইসলাম শিক্ষার ক্লাস নেয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে ধর্মীয় শিক্ষক চেয়ে আবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে এসব বিদ্যালয়ের ছাত্র ও অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ বলছেন, পাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৩৮টি। এর মধ্যে ৬৬টি সম্পূর্ণ সরকারি এবং নতুন জাতীয়করণ ৫৭টি। সরকারি ১৩৮টি বিদ্যালয়ের বিপরীতে ১৫৯ জন ধর্মীয় শিক্ষক কর্মরত থাকলেও এর মধ্যে ১৯টি বিদ্যালয়ে ইসলাম ধর্মের কোনো শিক্ষক নেই। উল্লেখিত ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক-শিক্ষিকার ৬৪৯টি পদের বিপরীতে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ৫৪৬ জন। শূন্যপদের সংখ্যা ১০৩টি। এর মধ্যে নারী শিক্ষক ৩৯০ জন ও পুরুষ ১৫৬ জন।

শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্যমতে, উপজেলা ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ২০ হাজার ৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মুসলিম শিক্ষার্থী প্রায় ৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে মুসলমান শিক্ষকের সংখ্যা ১৫৯ জন এবং হিন্দু শিক্ষক রয়েছেন ৩৮৭ জন।

মুসলিম শিক্ষক নেই এমন প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সুইলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গন্ধর্বপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভীমসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরুনা ফয়জুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়ানশ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর জিলাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব জামসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিশিরা খাসিয়া পুঞ্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৃষ্ণরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রায়পরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর পাঁচাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাকড়িছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম আশিদ্রোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামাসিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রীমঙ্গল হাউজিং এস্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বালিশিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিভাবক মনির মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, একটি স্কুলে সব ধর্মের শিক্ষার্থীই থাকে। প্রত্যেক ধর্মেরই শিক্ষক বিদ্যালয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে মুসলিম শিক্ষক না থাকাটা খুবই বেদনাদায়ক।

এদিকে মুসলিম শিক্ষক সংকটের কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে যে ১৯টি বিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষক নেই তার সবগুলো প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। সেসব প্রত্যান্ত এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৮৭ ভাগ মুসলিম শিক্ষার্থীর বিপরীতে সেখানে অনুপাতিক হারে মুসলিম শিক্ষক পদায়ন বা নিয়োগ দেয়া হয়নি। যে কারণে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক পোস্টিং দিলেও কর্মস্থলে যোগ দেয়ার আগেই অনেক শিক্ষক তদবির করে বদলির আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।

এছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক পদায়নের কারণেও উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সাংবাদিদের বলেন, আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেকেই উচ্চশিক্ষিত। তাছাড়া প্রাথমিক শিক্ষকদের সকল বিষয়ের ওপর পুরোপুরিভাবে ট্রেন্ডআপ করার কারণে তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও শিক্ষার্থীদের ইসলাম শিক্ষা দিতে তাদের কোনো সমস্যায় পড়ার কথা নয়। তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে একজন করে মুসলিম শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে উপজেলা সমন্বয় সভায় ও বিভাগীয় পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে।

সূত্র : নয়াদিগন্ত

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

সিলেটের পবিত্র মাটি আবারও কলংকিত হলো রায়হানের রক্তে!

পুলিশ ফাড়িতে যুবক হত্যা: সিলেটজোড়ে চলছে রহস্য! এলাকাবাসীর প্রতিবাদ!! সিলেট নগরীতে রায়হান নামক এক যুবকের ...