প্রথাসিদ্ধ রীতিই হলো সংস্কৃতি। হাল আমলে মুঠোফোন [সেল ফোন] আমাদের রীতি, নীতি, প্রয়োজন-অপ্রয়োজন, স্ট্যাটাস সিম্বলকে বেশ যুৎসই হিসেবে আঁকড়ে ধরেছে। একটি সিদ্ধ, কার্যকর যন্ত্র হিসেবে এটা মানুষের হাতে শোভা পাচ্ছে বেশ। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত- কার হাতের মুঠোই নেই মুঠোফোন। লাখ টাকার যন্ত্র এখন হাজার টাকায় বিকোচ্ছে। এ জমানায় খটমটে মুঠোফোন প্রযুক্তি সহজলভ্য, সহজ প্রাপ্যও। এ কারণে আমাদের বাস এখন মুঠোফোন সংস্কৃতিতে। চোখ খুললে মুঠোফোন, চোখ বন্ধ করলেও মুঠোফোন, একাকার হয়ে গেছে আমাদের জীবনের সাথে।
মুঠোফোন আমাদের দেশে মোবাইল ফোন হিসেবে পরিচিত। এর আসল নাম সেল ফোন বা সেলুলার ফোন। সেল ফোন নিয়ে সহজে মুভ [চলাফেরা] করা যায় বলে আমাদের দেশে মোবাইল ফোন নামটাই বাজার পেয়ে গেছে। এ দেশে মুঠোফোন যখন এলো তখন ফোন সেটগুলো ছিল ডাব্বা (বড়) সাইজের। দেখতে আনেকটা কর্ডলেস ফোন বা ওয়াকিটকির মতো। সময় পরিক্রমায় সেই ফোন সেট এখন মিনি আকার ধারণ করেছে। হাতের তালুতে সেলফোনটা পুরোপুরি এঁটে যাচ্ছে। এ থেকেই বোধকরি কবি নির্মলেন্দু গুণ এ যন্ত্রটার নাম দিয়েছেন মুঠোফোন। ব্যস, নামটা বিদ্যে-বুদ্ধিওয়ালা মানুষজনের কাছে গৃহীত হলো কিন্তু আমজনতার কাছে ওই মোবাইল নামটা স্বীকৃত বলে রয়ে গেল। শহরে, সাহিত্য চর্চায়, টিভি পর্দায় মুঠোফোন নামটা মুখে মুখে ফিরছে।
মুঠোফোন যোগাযোগের মাধ্যম, এতে কথা বলাটাই ছিল প্রথম দিককার ব্যবহারকারীদের প্রধান কাজ। তখন প্রতি মিনিট কথা বলার জন্য বিলের চার্জ হতো প্রায় ১০ টাকার মতো। আর এখন? মুঠোফোনটা কানে ধরে সারা রাত গপ্পো করে পার করে দিচ্ছে অনেকে, অপারেটরদের দেয়া সুবিধার কারণে। এটা হয়েছে কলচার্জ কমে যাওয়া এবং তা পয়সার ঘরে নেমে আসায়। শুধু কি তাই? এর অপারেটররা ক্রমে যুক্ত করতে লাগল মূল্য সংযোজিত সেবা [ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস]। এ সেবার প্রথমে যুক্ত হলো শর্ট মেসেজ সার্ভিস [এসএমএস]। মুঠোফোনে কথা বলার পাশাপাশি এসএমএসটাও এখন সমানতালে জনপ্রিয়। জনপ্রিয় হয়েছে এমএমএস [মাল্টিমিডিয়া মেসেজ সার্ভিস]। এ সেবার মাধ্যমে টেক্সটের পাশাপাশি পাঠানো যায় বিভিন্ন ইমেজ, এমনকি ক্যামেরায় তোলা ছবিও। যদিও এ সেবা পেতে হলে এমএমএস এনাবল মুঠোফোন সেটের প্রয়োজন। কারো মুঠোফোনে ফোন করে রিংটোন শোনা বেশ বিরক্তিকর বটে। ওই বিরক্তি দূর করার উপায় হিসেবে এসে যায় ওয়েলকাম টিউন। একঘেয়ে রিঙটোনের জায়গায় বাজতে লাগল সুরেলা গান, জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল, চলচ্চিত্রের হিট ডায়ালগ প্রভৃতি। প্রতিদিনের খবর জানতে এখন মুঠোফোনের বোতাম টিপলেই হলো। একইভাবে খেলার খবর, আবহাওয়ার খবর, আজানের সময়, জরুরি তথ্য, স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ দিবস, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী কোনো উৎসবের খবরও এখন মুঠোফোনের বোতাম টিপলেই সেসব পাওয়া যাবে। এ সবের জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। এদের বলা হচ্ছে থার্ড পার্টি অপারেটর। কল সেন্টার ধারণাটা পাল্টে দিচ্ছে মুঠোফোনের অপারেটররা। তারা নিজে ও থার্ড পার্টি অপারেটরদের সহায়তায় এক একটি মুঠোফোন কোম্পানি হয়ে গেছে পূর্ণাঙ্গ কল সেন্টার।
কিছুকাল আগেও বলা হতো বাংলাদেশে মুঠোফোনের ঘনত্ব [ব্যবহারের হার] কম্পিউটারের ঘনত্বের চেয়ে বেশি। হালে সে চিত্র বদলেছে। দেশে এখন মুঠোফোনের ঘনত্ব বেশি। এ দেশে বর্তমানে প্রায় সোয়া ৩ কোটি মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করে। প্রাযুক্তিক সহজলভ্যতা ও সহজ প্রাপ্যতার কারণেই এটা হয়েছে বলে সবার মত। এ সময়ে একটি মোটামুটি মানের কম্পিউটার কিনতে প্রয়োজন হাজার বিশেক টাকা। আর হাজার বা হাজার দেড়েক টাকা হলেই পাওয়া যাচ্ছে মুঠোফোন। এ কারণে মুঠোফোনের ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে। কম্পিউটারের অনেক কাজই করা যাচ্ছে বিভিন্ন মানের মুঠোফোনে। এ কারণে দেশে ডিজিটাল বৈষম্য মুঠোফোনের কারণে কমেছে।
বাহারি সেটের বাহার
মুঠোফোন সেটের এখনকার বাহার হচ্ছে বাহারি সেট। সাধারণ ফোন সেটের ব্যবহার এখন লোপ পেতে চলেছে। এসেছে মাল্টিমিডিয়া ফোন সেট। আগে এক মুঠোফোন সেটে মানুষ কথা বলেই সন্তুষ্ট থাকত। এখন শুধু কথা বলতে পারলেই মানুষ সন্তুষ্ট থাকছে না। এখনকার মুঠোফোনে থাকতে হবে ক্যামেরা, এফএম রেডিও, ইন্টারনেট, ব্লুটুথ, ইনফ্রারেড, মেমোরি কার্ডের ব্যবহার, এমপি-থ্রি ইত্যাদি। নকিয়া, মটোরোলা, সনি এরিকসন, স্যামসাং ইত্যাদি মুঠোফোনের দামি দামি সব সেট বাজারে ছেড়েছে। এর মধ্যে এগিয়ে আছে নকিয়া। নকিয়ার এন সিরিজের ফোন সেটগুলো দেখার মতো। এক ফোনসেটে সবকিছুই আছে। এগুলোর দাম ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার ওপরে। উপওে উল্লিখিত কোম্পানিরও দামি ফোন সেট আছে। এ ছাড়া বর্তমানে বাজারে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় সব কিছুসহ ফোন সেট পাওয়া যাচ্ছে যেগুলো দেখতে সুন্দর কিন্তু দুই দিন বাদেই নষ্ট হয়, এগুলোকে বলা হচ্ছে ‘ফেন্সি সেট’। এগুলোর ঠাট-বাট বেজায় বেশি কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদে মোটেও কাজের নয়। সস্তা দামের এ সেটগুলো অল্প বয়সী শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়। যারা ফ্যাশনেবল, এক্সিকিউটিভ, পেশাজীবী তাদের হাতে শোভা পায় নকিয়ার এন সিরিজ, এক্সপ্রেস মিউজিক অথবা সনি এরিকসনের দামি দামি সব মুঠোফোন সেট।
বন্দী মুহূর্ত
ছবি তোলার জন্য ম্যানুয়াল বা ডিজিটাল ক্যামেরার জায়গা ক্রমেই দখল করে নিচ্ছে মুঠোফোনের ক্যামেরা। দামি, কম দামি মুঠোফোনের ক্যামেরা দিয়েই মানুষ এখন হরহামেশা ছবি তুলছে। ভালো- মন্দ সব ছবিই হচ্ছে ক্যামেরাবন্দী। কোনো মুহূর্ত বা দৃশ্য ভালো লেগে গেলে চটপট মুঠোফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে ফেলা যাচ্ছে। ভালো না লাগলে ছবি ডিলিটও করা যায়। মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে এর সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। ইচ্ছে হলো, তো করে ফেলেন ভিডিও। আজকাল মুঠোফোনে দুই ধরনের ক্যামেরা থাকছে। ভিজিএ এবং মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ভিজিএ ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা যাবে বটে, তবে তা রেজ্যুলেশন কম হওয়ার কারণে দেখতে ভালো দেখায় না। অন্য দিকে মেগাপিক্সেল ক্যামেরার ক্ষেত্রে দুই মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা হলো আদর্শ। দুই-তিন মেগাপিক্সেল ক্যামেরায় তোলা ছবি বড় করেও প্রিন্ট করা যাবে। আর এক দশমিক তিন মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিও ভালো হবে, তবে তা ফোর-আরের চেয়ে বড় না করাই ভালো। মেমোরি কার্ড বাড়িয়ে আনলিমিটেড ভিডিও ধারণ করা যাবে। মুঠোফোনে ছবি তোলাকে আরো জনপ্রিয় করার জন্য সম্প্রতি আমাদের দেশে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘স্ন্যাপ আ স্টোরি’ নামের একটি প্রতিযোগিতা। নকিয়ার আয়োজনে বিপুল সাড়া পড়েছিল সে প্রতিযোগিতায়।
ইট’স রকিং
হাতের মুঠোয় মুঠোফোন, কানে ইয়ারফোন থাকবে না, মুঠোফোনে গান শোনা যাবে নাÑ এটা বোধকরি একালের তরুণ-তরুণীরা পছন্দ করবে না। কিছু দিন আগে এমপি-থ্রির বেশ চল ছিল। এর পরে এলো এমপিÑফোর, ফাইভ। গান শোনার পাশাপাশি মিউজিক ভিডিও দেখা যায় এতে। হালে যুক্ত হয়েছে এফএম রেডিও [শহর ঢাকার মানুষদের কাছে]। এটাও লুফে নিয়েছে তরুণরা। তরুণরা যা চায় তাই যেন দিচ্ছে এমএম রেডিওগুলো।
মুঠোফোনে প্রযুক্তির ব্যবহার
আমাদের দেশে সাধারণত দুই প্রযুক্তির মুঠোফেন দেখা যায়। এক. সিডিএমএ [কোড ডিভিশনাল পাল্টিমল একসেস] দুই. জিএসএম [গ্লোবাল স্যালাইট ফর মোবাইল]। জিএসএম মুঠোফোনে সব অপারেটরের সিম কার্ড ব্যবহার করা যায় কিন্তু সিডিএমএ ফোন সেটে শুধু ওই অপারেটরের সিম [রিম] কার্ড ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করা যায় না। আমাদের দেশে সিটিসেল শুধু সিডিএমএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। অন্য সবাই ব্যবহার করে জিএসএম প্রযুক্তি, এটাই আমাদের দেশের মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয়। তবে বিশ্বে দু’টি প্রযুক্তিই সমানতালে জনপ্রিয়। আমাদের দেশের মুঠোফোনগুলোতে আরো দু’টি প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এজ [ ] এবং জিপিআরএস [গ্লোবাল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস]। মুঠোফোন কোম্পানিগুলো এই দু’টি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এর ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি মুঠোফোনের ইন্টারনেট হালে আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এটি ব্যবহার করছে। মুঠোফোন ইন্টারনেট তুলনামূলকভাবে দামে সস্তা, এর গতিও বেশি। এর ব্যবহার ঝামেলাবিহীন হওয়ায় দ্রুতই এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এজ ও জিপিআরএস মডেম ব্যবহার করেই মুঠোফোনের ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। এ ছাড়াও মুঠোফোনেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। তবে মুঠোফোন ওয়াপ [ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রোটোকল] এনাবল হতে হবে। এটা থাকলে মুঠোফোনেই ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যাবে। অন্য দিকে ভালো সেটগুলোতে রয়েছে ব্লুটুথ ও ইনফ্রারেড প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুঠোফোন থেকে ডেটা আদান-প্রদান করা যায়।
মুঠোফোনে সাহিত্য রচনা
মুঠোফোনে বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি সাহিত্য রচনার কাজটিও চলছে। আমাদের দেশে এটির উদ্ভাবক কবি নির্মলেন্দু গুণ। তিনি চলাফেরার সময় কোনো কবিতার মাথায় এলে মুঠোফোনের বোতাম টিপে টিপে লিখে ফেলতেন, পরে ভুলে যাবেন এ আশঙ্কায়। চট করে কোনো পঙ্তি মাথায় এলেও তিনি মুঠোফোনে লিখে রাখেন। বাসায় ফিরে তিনি সেুগলো লিখে ফেলতেন। এই মুঠোফোনে লেখা কবিতা নিয়ে তার একটি কবিতার বইও প্রকাশ হয়েছে। এ ধারাটিও দেশের তরুণ কবি সাহিত্যিকদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
নকিয়া কর্তৃপ জানিয়েছেন, নকিয়ার মুঠোফোন লাইনসারি দেখলে মনে হতে পারে প্রতিষ্ঠানটি শুধু দামি দামি ফোন সেট তৈরি করে যা সাধারণের নাগালের বাইরে। কিন্তু না, সম্প্রতি নকিয়া লোকস্ট [কম দামি] ফোন সেট বাংলাদেশের বাজারে ছেড়েছে। এতে করে মুঠোফোনের ঘনত্ব আরো বাড়বে।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম…
মুঠোফোনের েেত্র বরাবরই বলা হচ্ছে, আসছে তৃতীয় প্রজন্মের মুঠোফোন। এই প্রজন্ম দাদা, বাবাদের প্রজন্ম তা নয়। এটা মুঠোফোনের প্রজন্ম। বর্তমানে যে মুঠোফোনসেট বাজারে দেদারছে বিকোচ্ছে তার চেয়ে আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যে মুঠোফোন সেটগুলো বাজারে আসছে সেগুলোকেই বলা হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্মের মুঠোফোন। এ ধারায় বাজারে এসে গেছে তৃতীয় প্রজন্মের মুঠোফোনসেট। এখন যেসব সুবিধা রয়েছে সে সবের সাথে নতুন সুবিধা হিসেবে থাকবে মুঠোফোন চুরি ঠেকাতে ট্রেকার। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোর ফোন চুরি করে নিয়ে কোথায় অবস্থান করতে তা জানা যাবে। তৃতীয় প্রজন্মের মুঠোফোনে ব্লগ করার সুবিধা আছে। মুঠোফোন পরিণত হচ্ছে পিডিএ-তে [পারসোনাল ডিভাইস অ্যাসিসট্যান্ট]। এর ডিজাইনেও আসবে ব্যাপক পরিবর্তন। ওয়াই ফাই বা ওয়াই ম্যাক্স প্রযুক্তিও মুঠোফোনে ব্যবহার করা যাবে। মুঠোফোনে ব্যাটারি একটা বড় সমস্যা। কিছু দিন ব্যবহারের পরপরই এর ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় অথবা এ সময়কার মাল্টিমিডিয়া ফোনের বহুল ব্যবহারের কারণে ব্যাটারির চার্জ বেশিণ থাকে না। সেজন্য ফুয়েল সেল প্রযুক্তির মুঠোফোন তৈরি করতে যাচ্ছে এর নির্মাতারা। ব্যাটারির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হবে ফুয়েল সেল। ইতোমধ্যে এ ফুয়েলসেল মুঠোফোনের নমুনা সংস্করণ তৈরি করা হয়ে গেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে পলিমার-ইলেক্ট্রোলাইট ফুয়েল সেল [পিইএফসি] যাতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হবে হাইড্রোজেন গ্যাস।
সৌজন্যে : অন্যদিগন্ত