ভারতের মহারাষ্ট্রে এক অনাথাশ্রম বা এতিমখানায় মুসলিম ছাত্রীদের জোর করে শূকরের গোশত খাওয়ানোর অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অকেলা ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা এবিআই নামে অনুসন্ধানী গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এক স্টিং অপারেশন সূত্রে আজ (রোববার) গণমাধ্যমে প্রকাশ, মহারাষ্ট্রের পালঘার জেলার ভাসাইতে অবস্থিত খ্রিস্টান অনাথ আশ্রম ‘ব্লেসড ট্রিনিটি অরফ্যানেজ অ্যান্ড কনভেন্ট’-এ তিন মুসলিম ছাত্রী তীব্র জুলুমের শিকার হয়েছে। ওই ছাত্রীরা শূকরের গোশত খেতে অস্বীকার করলে সেখানকার সন্ন্যাসিনীরা জোর করে তাদের তা খেতে বাধ্য করেছে। এক ছাত্রী এবিআইকে জানায়, ওরা সকলে জানে আমরা মুসলিম। যদিও তা সত্ত্বেও সিস্টাররা জোর করে আমাদের মুখে শূকরের গোশত গুঁজে দিতেন।
এক ছাত্রীর মা বলেন, ‘মুসলিমদের কেউ যদি শূকরের নাম মুখে উচ্চারণ করে তাহলে তার মুখ ৪০ দিন পর্যন্ত অপবিত্র থাকে। আমি খুব হতাশ হয়েছি যে, এসব জানা সত্ত্বেও সিস্টাররা আমাদের মেয়েদের মুখের মধ্যে জবরদস্তি করে শূকরের গোশত পুরে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, পবিত্র কুরআনে কমপক্ষে চার জায়গায় শূকরের গোশতকে মুসলিমদের জন্য ‘হারাম’ ঘোষণা করা হয়েছে। সূরা বাক্বারাহ: আয়াত-১৭৩, সূরা মায়েদাহ: আয়াত-৩, সূরা আনআম: আয়াত-১৪৫ এবং সূরা নাহলের ১১৫ নম্বর আয়াতে সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এক ছাত্রী জানায়, ছোটখাট ভুলের জন্যও সিস্টাররা আমাদের খুব মারধর করে এমনকি চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দিয়ে বাস্টার্ড, নাগিন, হারামি, কুত্তা ইত্যাদি অকথ্য গালি দিতেন।
ওই ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের টয়লেট, খাবারের পাত্র, কাপড়চোপড়, রুম ইত্যাদি পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয়। কেউ ওই আদেশ অমান্য করলে ১০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হয়। কখনো কখনো টয়লেটে শুতেও বলা হতো।
ওই ছাত্রীরা থানায় যাওয়ার কথা বললে, সেখানকার সিস্টাররা হুমকি দিয়ে বলে থানায় গেলে তারা কর্মকর্তাদের হাতে ধর্ষিতা হবে।
ওই আনাথাশ্রমের সিস্টারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সেখানকার মেয়েদের ‘নান’ হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। ‘নান’ হলে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়া হবে বলে প্রলোভিত করা হয়। অনাথাশ্রমের নারকীয় পরিবেশ থেকে সাত ছাত্রী পালিয়ে এসে স্থানীয় ভাসাই থানায় সব ঘটনা খুলে বললেও পুলিশ এ ঘটনায় কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।#
সৌজন্যে : পার্সটুডে