রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ ভোর ৫:১২
Home / ইতিহাস ঐতিহ্য / উমর ফারুকের আমলে অমুসলিমের অধিকার

উমর ফারুকের আমলে অমুসলিমের অধিকার

hdrজেরুজালেমের সন্ধি অমুসলিমদের প্রতি মানবিক উদার ব্যবহারের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। বিজিতের প্রতি এই ধরনের সন্ধি-চুক্তি দুনিয়ার ইতিহাসে বড় একটা নেই। এই সন্ধিতে খৃষ্টানদের জানমাল, গির্জা, ত্রুশ রক্ষিত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হল। চার্চের উপাসনা বন্ধ করে দেয়া যাবে না, ত্রুশ সরানো যাবে না। কোনও চার্চকে আবদ্ধ পরিণত করা যাবে না। তাদের চার্চের জিনিসপত্রও কোন মতেই নষ্ট করা যাবে না। ধর্ম ও বিশ্বাসের ব্যাপারে তাদের ওপর কোন জোর করা চলবে না। তাদের ওপরে কোনও ধরনের অবিচার ও জুলুম করা চলবে না। খৃস্টান ঐতিহাসিকদের লেখা থেকেই আমরা পেয়েছি যে, তখন খৃষ্টানদের ধর্মগুরু খলীফা উমরকে প্রাচীনকালের দর্শনীয় দালান প্রভৃতি দেখাচ্ছিলেন তখন আসরের নামাযের ওয়াক্ত হয়। তখন তাঁরা ছিলেন কন্‌সট্যান্টাইনের গির্জার ভেতরে। ধর্মগুরু সেখানেই তাঁকে নামায পড়তে বললেন। কন্‌সট্যান্টাইনের গির্জায় তাঁর জন্য জায়নামাজের কাপড় বিছানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই দুই জায়গার কোথায়ও নামায সমাধা করেন নি। ‘‘আজ যদি আমি এখানে নামায পড়ি, তবে কাল মুসলমানেরা হয়ত এখানে মসজিদ তৈরির দাবি জানাবে।’’ এইভাবে তিনি অমুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতার পথ সুগম করে গেলেন।

মুসলিমদের মত অমুসলিমদেরকে দেশ রক্ষার্থে যুদ্ধ করানো তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এ অবস্থায় তাঁরা যুদ্ধ করতে না চাইলে সবল-সুস্থ পুরুষ অমুসলিমের কাছ থেকে জিজিয়া আদায় করা হত। হযরত উমর (রা.) এর আমলে যেসব অমুসলিম মুসলিমের সংগে একযোগে যুদ্ধ করেছিলেন তাদের জিজিয়া দিতে হয় নি। জর্জান ও বাব নামক স্থানদ্বয়ে অমুসলিমদের নাম এই প্রসংগে উল্লেখযোগ্য। ইয়ারমুকের যুদ্ধের সময় যখন হিমস নামক জায়গাটা মুসলিম সৈন্য ছেড়ে আসে তখন সেখানকার অধিবাসীদের কাছ থেকে আদায় করা জিজিয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ অমুসলিমের রক্ষা করার জন্য যে জিজিয়া নেয়া, সে রক্ষণাবেক্ষণ ত আর সম্ভব হলো না। তাই এই পন্থা অনুসরণ করা হল। সিরিয়া থেকে পশ্চাদপসরণের সময়েও সিরিয়া বিজয়ী আবূ ওবায়দা সিরিয়ার অমুসলিমদেরকে সমস্ত জিজিয়া ফিরিয়ে দেন। ভন ক্রেমার (Von Kramer) বলেনঃ ‘‘অমুসলিম সম্প্রদায়েরা সম্পূর্ণ স্বাধীনতাই ভোগ করতেন।’’ সরকার প্রত্যেক সম্প্রদায়ের হাতে হাতেই তাদের অভ্যন্তরীণ শাসনভার ছেড়ে দিতেন, ধর্ম সম্বন্ধীয় বিচারে ধর্মগুরুগণ কার্যের স্বাধীনতা ভোগ করতেন।

বায়তুলমাল থেকে অমুসলিমেরাও দরকার মত অর্থ সাহায্য পেতেন। এ বিষয়ে মুসলিম ও অমুসলিমে কোনও পার্থক্য ছিল না।

 

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

‘দেওবন্দের মূলনীতির ওপর ভিত্তি করেই স্বীকৃতি বাস্তবায়ন হচ্ছে’

কমাশিসা ডেস্ক: বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহকারী মহাসচিব ও জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা ...