দীর্ঘদিন যাবত এ বিষয়ে প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডা ও বিতর্ক হচ্ছে যে কওমি মাদরাসার সিলেবাস বর্তমানে যুগোপযোগী কি-না। এক দলের অভিমত হলো- এ সিলেবাস আমূল সংস্কারযোগ্য। এর ব্যাপক রদবদল ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। আরেক দলের অভিমত হল এ সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন, সংশোধন ও সংযোজন তো দূরের কথা এতে হাতের সামান্য ছোঁয়া লাগতে পারবে না। তিনশ বছর আগে যেমন ছিল এখনো তেমনি থাকবে।
উদার ও গোঁড়াপন্থী এ দু দলের কষাকষিতে একদিকে শিক্ষা ব্যবস্থায় অনৈক্য ও বিছিন্নতার ছাপ পড়েছে অন্যদিকে মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক ও ভক্তরা নানাজন নানান ধরনের মন্তব্য করছেন। এ সম্পর্কে ভারসাম্য ও যুক্তিপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় ইসলামী কলামিষ্ট বিচারপতি আল্লামা মোহাম্মাদ তকী উসমানী দা.বা.। তিনি এ বিষয়ে করাচি দারুল উলুম থেকে প্রকাশিত মাসিক আলবালাগ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে লিখেছিলেন। সেসব প্রবন্ধ সঙ্কলিত হয়েছে হামারা তালিমি নেজাম নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি সেসব গবেষণাধর্মী নিবন্ধে নিন্মোক্ত বিষয়গুলোর ওপর আলোকপাত করতে চেষ্টা করেছেন:
(ক) মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থা ও কারিকুলাম কোন দৃষ্টি ভঙ্গিতে সংস্কার করা হবে ?
(খ) মাদরাসার বর্তমান গ্র্যাজুয়েটরা সমাজে পূর্বসূরীদের মত বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে কেন ?
(গ) পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তবে এর সাথে সাথে চারিত্রিক ও আধ্যত্মিক অবনতি রোধ করতে কি কি পদক্ষেপ নেয়া উচিত ?
(ঘ) পাঠ্যক্রমে কোন ধরনের সংস্কার করা উচিত ?
(ঙ) আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও বিষয়াবলী কেন ও কিভাবে মাদরাসা পাঠ্যক্রমে সংযোজন করতে হবে?
নিম্নে প্রবন্ধটির অনুবাদ দেয়া হল। তবে এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, আলোচ্য প্রবন্ধগুলো প্রায় দুই যুগ আগে লেখা। এ দীর্ঘ সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। সংস্কার ও পরিবর্তনের ধারায় অনেক সংযোজন ও বিয়োজন হয়েছে। গত ১৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে তকি সাহেব এ সম্পর্কে নতুন একটি রূপরেখা পেশ করেছেন। খোলামেলা অনেক আলোচনা করেছেন। সে বক্তব্যটি অতিসত্বর আমরা পাঠকদের বরাবর পেশ করবো ইনশাআল্লাহ। এর আগে এ প্রবন্ধগুওলার ওপর একটু নজর বুলিয়ে নিই।
মূল : আল্লামা তকি উসমানি
ভাষান্তর : কাজী মোহাম্মদ হানিফ
শাইখুল হাদিস, জামিয়া আরাবিয়া মারকাজুল উলুম, কাঁচপুর, নারায়ণগঞ্জ