শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ ভোর ৫:০২
Home / প্রতিদিন / তারাবীহর রাকাত নিয়ে আহলে হাদেছ ও লালবানীর সৃষ্ট বিভ্রান্তির একাডেমিক জবাব- (দ্বিতীয় পর্ব)

তারাবীহর রাকাত নিয়ে আহলে হাদেছ ও লালবানীর সৃষ্ট বিভ্রান্তির একাডেমিক জবাব- (দ্বিতীয় পর্ব)

quranবিশ রাকাত তারাবীহর অকাট্য দলীল সমূহ

০১. সরেজমিনের আমল ও ছাহাবা-তাবেয়ীনের কথামতে হযরত ওমরের আমলে ২০ রাকাত তারাবীহর ব্যাপারে ছাহাবা কেরামের ইজমা হয়ে গেছে। হানাফী,মালেকী, শাফেয়ী, জাহেরী (দাউদ জাহেরী) ও জাইদীসহ সকল মাযহাবের লোকজন এ ব্যাপারে একমত। আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে নজদী চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত মৌলভী আবদুল হক বেনারসীর মাধ্যমে উপমহাদেশে কথিত আহলে হাদীছ মতবাদের গোড়াপত্তন হয়। সেই থেকে উপমহাদেশের সুন্নী মুসলিম সমাজে ৮ রাকাত তারাবীহসহ বিভিন্ন মাসআলার ক্ষেত্রে হাদীছের নামে বিভিন্ন মনগড়া কথার প্রচলন শুরু হয়। ১৯২৬ সালে খেলাফত বিদ্বেষী বৃটিশদের সহযোগিতায় পবিত্র হারামাইনে প্রভাব বিস্তারকারী সংখ্যালঘু নির্বোধ ওয়াহাবী সালাফী গোষ্ঠীর পেট্রোডলারের বলে ইদানিং তাতে যোগ হয়েছে ছহীহ ইসলামী আকীদা বিরোধী কিছু খারেজী তাকফীরি চিন্তা। তাও আবার ‘ছহীহ আকীদার প্রচার-প্রসার ও শিরক-বিদআত মোকাবেলা’র মত মুখরোচক শ্লোগানের মাধ্যমে। যাই হোক, আরব দুনিয়ায় ৮ রাকাত তারাবীহর পক্ষে সর্বপ্রথম আন্দোলন শুরু করে নাছিরুদ্দীন আলবানী নামের এক স্বশিক্ষিত উগ্র ও অল্পবিদ্যার নন-আরব । পেট্রোডলার প্রসূত প্রাচুর্য্যের অভিশাপের শিকার মরুভূমির ইবাদত বিমুখ বেদুইন জাহিলরা আলবানীর ফতোয়ায় খুশি হলেও শাম, মিসর ও মাগরিবের (উত্তর আফ্রিকার আরব দেশসমূহ) মত আলেম ও ফকীহ অধ্যুষিত আরব অঞ্চল এবং তুরস্ক, পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশের মত আলেম অধ্যুষিত দেশগুলতে প্রচন্ড বাধার মুখে পড়ে আলবানী ও সালাফী ওয়াহাবীদের উগ্র তাকফীরি খারেজী চিন্তা। আইএসের মত তাকফীরি খুনী সালাফী গোষ্ঠীর আত্মপ্রকাশের ফলে আমার মত আরো অসংখ্য মানুষের মনে তাকফীরি সালাফী চিন্তার ব্যাপারে বাড়তি সচেতনতার সৃষ্টি হয়।

এখন আমরা ইবাদতের মাস রমজানের কিয়ামুল লাইল তথা তারাবীহর বিরুদ্ধে সেলফীদের উত্থাপন করা একটি ছহীহ দলীলের ব্যাখ্যায় যাবো। এটি হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ (একজন ছোট ছাহাবী) থেকে মোয়াত্তা মালিকে (হাদীছ নম্বরঃ ২৫২) বর্ণিত হয়েছে। এটির মতন/টেক্সট হলোঃ
أمر عمر بن الخطاب رضي الله عنه أبي بن كعب وتميما الداري أن يقوم للناس بإحدى عشرة ركعة، قال: وكان القارئ يقرأ بالمئين حتى كنا نعتمد على العصي من طول القيام، وما كنا ننصرف إلا في فروع الفجر.

“হযরত ওমর রদিয়াল্লাহু আনহু উবাই বিন কা’ব ও তামীম দারীকে লোকজন নিয়ে ১১ রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তো কারী/ইমাম ছাহেব লম্বা লম্বা বা শত আয়াত সূরা পড়তেন। ফলে আমরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ক্লান্ত হয়ে লাঠিতে ভর দিতাম। আর আমরা তারাবীহ শেষ করে ঘরে ফিরতাম ফজরের একটু আগে।”

তাদের দাবি প্রমাণে এ দলীলটি সম্পূর্ণ অকার্যকর। এর কয়েকটি কারণ রয়েছে।

এক. খোদ হযরত সায়েব থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিত আরো কয়েকটি বর্ণনা থেকে বুঝা যায়, তিনি এ দ্বারা প্রথম দিকের অবস্থা বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ, হযরত ওমর রদিয়াল্লাহ আনহু তাঁর আমলের প্রথম দিকে ১১ রাকাত পড়তে বলেছেন। কিন্তু লম্বা কেরাতের কারণে লোকজনের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হওয়ায় পরে তিনি অপেক্ষাকৃত কম আয়াত তেলাওয়াতে ২৩ রাকাত (বিতিরসহ) পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর প্রমাণ তিন সনদে বর্ণিত খোদ হযরত সায়েবের অন্য একটি ছহীহ হাদীছ, যেখানে তিনি ১১ এর পরিবর্তে ২১ ও ২৩ রাকাত উল্লেখ করেছেন। দেখুন মুছন্নফে আবদুর রজ্জাক (৪/২৬০-২৬১) ও মুসনদে ইবনে জা’দ (১/৪১৩)। এ তিন সনদের একটিতে (মুসনদে ইবনে জা’দের সনদে) সায়েব থেকে বর্ণনাকারী ইয়াজিদ বিন খাছীফা, আরেকটিতে তাঁর থেকে বর্ণনাকারী হলেন তাঁরই ভগ্নিপতি মুহাম্মদ বিন ইউসুফ এবং আরেকটিতে হারেছ বিন আবদুর রহমান। একইভাবে এ হাদীছটি ছহীহ সনদে অন্যভাবে বাইহাকীর সুনানে কোবরাতেও (২/৪৯৬, নম্বর ৪৬১৭) বর্ণিত হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেনঃ
“كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب -رضي الله عنه- في شهر رمضان بعشرين ركعة”.
অর্থঃ ছাহাবীগণ হযরত ওমরের আমলে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন।”
এ হাদীছকে ইমাম নবভী, ইমাম সুয়ূতী, হালের সালাফীজম সমর্থক দামেস্কের মুহাদ্দিছ শোয়াইব আরনাঊত ও সৌদি আরব প্রবাসী সিরিয়ান সালাফী ছালেহ আল-মোনাজ্জিদও ছহীহ বলে মন্তব্য করেছেন (প্রমাণ কমেন্টের লিঙ্কে)।

সেলফী নির্বোধদের জানা উচিত, কেউ যদি বলে, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে আমি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দেখেছি’, তাহলে তার অর্থ কখনোই এ দাঁড়ায় না যে, তার ৯ বছরের প্রেসিডেন্ট থাকার বিষয়টি মিথ্যা ছিল। বিশেষত ওই একই ব্যক্তি যদি আরেক জায়গায় তার ৯ বছরের প্রেসিডেন্ট থাকার বিষয়টিও স্বীকার করে। এখন যদি তার প্রেসিডেন্ট থাকার বিষয়টি রাষ্ট্রীয় নথিপত্রে রেকর্ড হয় ও দেশের সাবেক প্রেসিডেন্টের তালিকায় তার নাম ও কার্যকাল উল্লেখ থাকে এবং অসংখ্য মানুষ তার প্রেসিডেন্ট থাকার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়, তাহলে কেউ সেটিকে অস্বীকার করে তাকে শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর প্রধান উল্লেখ তার জীবনী লিখলে নিশ্চয় তা চরম অন্যায় ও সত্যকে গোপনের চেষ্টা বলে বিবেচিত হবে। বলা বাহুল্য, ২০ রাকাত তারাবীহ অস্বীকারের চেষ্টাকারীরা এ কাজটিই করছে।

দুই. ছাহাবা, তাবেয়ী ও তাবে তাবেয়ীসহ চার ইমাম এবং পরবর্তী সময় থেকে এ পর্যন্ত মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীসহ সবখানে ২০ রাকাতের উপর আমলই চলে আসছে। এ নিয়ে উপমহাদেশের সুন্নী সমাজে ১৫০ বছর পূর্বে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে আহলে হাদেছ সম্প্রদায় এবং আরব দুনিয়ায় ৫০ বছর পূর্বে ভূয়া হাদীছ বিশারদ আলবানী। নীচে এ ব্যাপারে আরো ৭টি ছহীহ কওলী দলীল তুলে ধরা হলোঃ

عن يزيد بن رومان قال : ( كَانَ النَّاسُ يَقُومُونَ فِي زَمَانِ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ فِي رَمَضَانَ بِثَلاثٍ وَعِشرِينَ رَكعةً ) . أخرجه مالك في “الموطأ” (رقم ٢٥١).
হযরত ইয়াজিদ বিন রুমান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত উমর (রদিঃ) এর যুগে ছাহাবীগণ বিতিরসহ তেইশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। (মুয়াত্তা মালেক, হাদীছ নম্বরঃ ২৫১)

عن داود بن الحصين أنه سمع الأعرج يقول: “ما أدركت الناس إلا وهم يلعنون الكفرة فى رمضان”، قال: وكان القارئ يقرأ سورة البقرة في ثمان ركعات، فإذا قام بها في اثنتي عشرة ركعة رأى الناس أنه خفف. أخرجه مالك في المؤطأ (رقم ٢٥٣).
দাউদ বিন হোছাইন বলেন, তিনি তাবেয়ী আ’রজকে (তিনি ৩৭ হিজরীতে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত তাবেয়ী এবং হযরত আবু হুরাইরা রদিঃ এর ছাত্র) বলতে শুনেছেন, আমি আমি লোকজনকে রমজানে কাফেরদের ধ্বংস কামনা করতেই দেখেছি। তখন তারাবীহতে ইমাম আট রাকাতেই সূরা বাকারা পূরা শেষ করতেন। যদি তা (সূরা বাকারা) ১২ রাকাতে শেষ করতেন, তাহলে লোকজন ভাবতেন, তিনি নামাজ সংক্ষিপ্ত করেছেন। (মোয়াত্তা মালেক, হাদীছ নম্বরঃ ২৫৩)।
এ বর্ণনা থেকে জানা যায়, ছাহাবা কেরামের আমলে ৮ রাকাত নয়; ২০ তারাবীহই পড়া হতো। উল্লেখ্য, এ বর্ণনাটির বিশুদ্ধতা নিয়ে কারো দ্বিমত দেখা যায়নি

عن يحيى بن سعيد القطان : ( أَنَّ عُمَرَ بنَ الخَطَّابِ أَمَرَ رَجُلا يُصَلِّي بِهِم عِشرِينَ رَكعَةً ) أخرجه ابن أبي شيبة في “المصنف” (2/163).
বিখ্যাত তাবে তাবেয়ী ও মুহাদ্দিছ হযরত ইয়াহয়া বিন সাঈদ আল-কাত্ত্বান বলেন যে, হযরত ওমর এক ছাহাবীকে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়ানোর আদেশ দিয়েছিলেন। (মুছন্নফে ইবনে আবি শায়বা, ২/১৬৩)

عن عبد العزيز بن رفيع قال : ( كَانَ أُبَيُّ بنُ كَعبٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ فِي رَمَضَانَ بِالمَدِينَةِ عِشرِينَ رَكعَةً ، وَيُوتِرُ بِثَلاثٍ ) أخرجه ابن أبي شيبة في “المصنف” (2/163) .
তাবেয়ী বা তাবে তাবেয়ী (ওফাতঃ ১৩০ হিজরী) ও মুহাদ্দিছ আবদুল আজিজ বিন রফী বলেন যে, হযরত উবাই বিন কা’ব রমজানে মদীনায় লোকজনকে নিয়ে ২০ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতির পড়তেন। (মুছন্নফে ইবনে আবি শায়বা, ২/১৬৩)

عَنْ مُحَمَّدُ بْنُ كَعْبٍ الْقُرَظِيُّ : كَانَ النَّاسُ يُصَلُّونَ فِي زَمَانِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فِي رَمَضَانَ عِشْرِينَ رَكْعَةً يُطِيلُونَ فِيهَا الْقِرَاءَةَ ، وَيُوتِرُونَ بِثَلاثٍ. أخرجه الإمام محمد بن نصر المروزي (202 – 294 هـ) في ‘قيام رمضان’، بَابُ عَدَدِ الرَّكَعَاتِ الَّتِي يَقُومُ بِهَا الإِمَامُ.
তাবেয়ী মুহাম্মদ বিন কা’ব আর-কুরাজী (তিনি হযরত আবু আয়্যুব আনছারী, হযরত আবু হুরাইরা ও হযরত ইবনে আব্বাসসহ অনেক ছাহাবী থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন) বলেন, লোকজন হযরত ওমরের আমলে লম্বা কেরাতে বিশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন এবং তিন রাকাত বিতির পড়তেন। (ইমাম মুহাম্মদ বিন নছর আল-মিরওয়াজীর ‘কিয়ামু রমাদান’, পৃষ্টাঃ ১৫৯)

عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ : كَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ يُصَلِّي بِنَا فِي شَهْرِ رَمَضَانَ ، فَيَنْصَرِفُ وَعَلَيْهِ لَيْلٌ ” , قَالَ الأَعْمَشُ : كَانَ ” يُصَلِّي عِشْرِينَ رَكْعَةً وَيُوتِرُ بِثَلاثٍ “. أخرجه الإمام محمد بن نصر المروزي (202 – 294 هـ) في ‘قيام رمضان’، بَابُ عَدَدِ الرَّكَعَاتِ الَّتِي يَقُومُ بِهَا الإِمَامُ.
তাবেয়ী জাইদ বিন ওয়াহাব বলেন, হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রমজানে আমাদের নিয়ে নামাজ পড়ে যখন ঘরে ফিরতেন, তখনও কিছু রাত বাকী থাকতো। বিখ্যাত তাবেয়ী আ’মশ (জন্মঃ ৬১ হিজরী) বলেন, তিনি (ছাহাবী আবদুল্লাহ বিন মাসউদ) ২০ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতির পড়তেন। (ইমাম মুহাম্মদ বিন নছর আল-মিরওয়াজীর ‘কিয়ামু রমাদান’, পৃষ্টাঃ ১৫৭)

عن عطاء بن أبي رباح قال: أدركت الناس وهم يصلون ثلاثا وعشرين ركعة مع الوتر. أخرجه ابن أبي شیبة (٥/٢٢٤ أو ٢/٣٩٣).
বিখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে আবী রবাহ (জন্মঃ ২৭ হিজরী) বলেছেন, আমি ছাহাবীদেরকে বিতিরসহ তেইশ রাকাত তারাবীহ পড়তে দেখেছি। (মুছন্নফে ইবনে আবি শায়বাঃ ৫/২২৪, ২/৩৯৩)

উল্লেখিত সবগুলো বর্ণনাই বিশুদ্ধ। এছাড়াও আরো অনেক বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা একথা সুস্পষ্ট রুপে প্রমাণিত হয় যে, তারাবীহর নামাজ কমপক্ষে ২০ রাকাত পড়াই সুন্নত। এর উপরই খোলাফায়ে রাশেদীন, ছাহাবা কেরাম, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈনসহ সালফে সালেহীনের সকলে আমল করেছেন এবং চার মাজহাবের ইমামগণও এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন। এ ব্যাপারে সুনানে তিরমিযীতে (৩/১৬৯) ইমাম তিরমিযী রহঃ বলেছেন,
” وَأَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى مَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَغَيْرِهِمَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِشْرِينَ رَكْعَةً وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ . وقَالَ الشَّافِعِيُّ وَهَكَذَا أَدْرَكْتُ بِبَلَدِنَا بِمَكَّةَ يُصَلُّونَ عِشْرِينَ رَكْعَةً”.
“আলেমদের অধিকাংশই তারাবীহ বিশ রাকাত হওয়ার ব্যাপারে একমত। যেমনটা হযরত ওমর ও হযরত আলীসহ অন্যান্য ছাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম ছওরী, ইমাম ইবনুল মোবারক ও ইমাম শাফেয়ীর মতও এটা। ইমাম শাফেয়ী বলেছেন, আমি মক্কাবাসীকে এভাবেই বিশ রাকাত পড়তে দেখেছি।”

তবে কথিত আহলে হাদেছ ও আলবানীভক্তদের মত সেলফীরা ইজমা (ঐকমত্য) কি তা যেমন বুঝেও না, তেমনি মানেও না। ওদের জ্ঞানের দৌড় স্থানীয় জাহেল টিভি শায়খ পর্যন্ত এবং ওইসব শায়খদের কথাই তারা অন্ধভাবে মান্য/তাকলীদ করে।

উল্লেখ্য, তাবেয়ীদের আমলে মক্কাবাসী তারাবীহ নামাজের প্রতি চার রাকাত পরপর তাওয়াফ করে অতিরিক্ত ছওয়াব হাসিল করায় মদীনাবাসী কিছুদিন প্রতি তাওয়াফের স্থলে আরো চার রাকাত করে অতিরিক্ত নামাজ পড়েছিল। এজন্য এক বর্ণনায় ইমাম মালেক ৩৬ রাকাত তারাবীহ পড়ার কথা বলেছেন। কিন্তু পরে মদীনাতে ২০ রাকাতই পড়া হতে থাকে এবং সে ধারা সেখানে আজো চালু আছে।

আল্লাহ আমাদেরকে নির্বোধ তর্কবাজ সেলফী অলস সম্প্রদায়ের ছড়ানো বিভ্রান্তি থেকে দূরে রাখুন।

(লেখাটির আগামী পর্বে সেলফীদের আরো কিছু বিভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশা-আল্লাহ)

আবুল হুসাইন আলেগাজী
০৮. ০৬. ২০১৬, বুধবার

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...