সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ সকাল ৬:৫৯
Home / প্রতিদিন / শত বছরের ঐতিহ্য কিভাবে ছাড়ি ? ব্যক্তিপুঁজা স্বার্থপুঁজাই এখন মুখ্য !

শত বছরের ঐতিহ্য কিভাবে ছাড়ি ? ব্যক্তিপুঁজা স্বার্থপুঁজাই এখন মুখ্য !

indexাা্
বাংলার আকাশ বাতাস যাদের দখলে

খতিব তাজুল ইসলাম::

ইহা একটা স্বাভাবিক মানবিক বৈশিষ্ট্য। মানুষের দুর্বলতা।মানুষ প্রথার পুঁজারী। জগতের কোটি কোটি মানুষ এখনো নিজের হাতে গড়া মাটিকে পুঁজা করে। মানুষকে খোদা মনে করে সিজদা দেয়। কবরের মরা মানুষের কাছে গিয়ে কামনা করে কিছু। কবর পুঁজা, মাজার পুঁজা, পীর পুঁজা, নেতা পুঁজা, আদব এতায়াতের নামে নাফসের দাসত্ব এই মানুষরাই করে। কখনো মানুষ হয় কারো অনুগ্রহের দাস। কখনো প্রভাবিত হয় ক্ষমতার কাছে। কখনো ভেলকির কাছে। কখনো প্রথার কাছে। প্রথাকে মানুষ পুঁজা করে। মুসলমানরাও প্রথার ইবাদতকারী। গোটা পৃথিবী ব্যাপী এখনো চলছে প্রথার দাসত্ব, প্রথার পুঁজা।

ব্যক্তি কখনো স্বার্থের উর্ধে উঠতে পারেনা। এই ব্যক্তির স্বার্থ যখন কোন জাতির উপর চাপিয়ে দেয়া হয় তখন পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। ইসলামের খেলাফত ব্যবস্থায় ব্যক্তির কোন দখল থাকেনা। স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিতে হয়। দেশ জাতি ও উম্মাহর স্বার্থ থাকে মুখ্য। দুর্ভাগ্য মুসলমানদের যে তাদের খেলাফত ব্যবস্থা থেকে দূরে ঠেলে দিয়ে আজ তাদেরকে নাফসের গোলাম বানানো হয়েছে। আজ এই প্লানেটের প্রতিটি কর্ণারে ব্যক্তিই হয়ে উঠেছে নিয়ামক শক্তি রূপে। সিবগাতাল্লাহর বদলে সিবগাতুন-নাফসের চর্চাকে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে ইসলামের নামে।

বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের অধঃপতনের বহু কারণের একটি বড় কারণ হলো তারা শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া। পুর্ণাংগ ইসলামি শিক্ষা ফলো না করা। যে জাতির প্রথম ওহী পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সেখানে তারা পড়াকে তিনভাগ করে ফেলেছে। একভাগ ভাবে নামাজ রোজা চালানোর মতো ধর্মীয় জ্ঞানই যথেষ্ট। তারা ইসলামকে বানিয়েছে জীবেনর একটা পার্ট বা সামান্য অংশ মাত্র। যাহা সাধরণত তাবলীগ জামাতের মাধ্যমে আমরা পাই। আরেক দল হলো কেবল ধর্মীয় বা ইবাদত সমূহকে সর্বাংগীন ইসলাম বলে চালিয়ে দিয়ে দুনিয়া থেকে দ্বীনকে পৃথক করে ফেলেছে। তারা ভাবে আমরা মাদরাসা মসজিদ খানকায় বসে শুধু আল্লাহ আল্লাহ করবো। দুনিয়াদাররা আমাদের দান খয়রাত টাকাকড়ি দিয়ে সাহায্য করবে। আর সর্বশেষ দল হলো তারা, যারা ধর্মকে ব্যক্তিগত বিষয় মনে করে অপশোনাল আইটেম বানিয়ে স্যাকুলার মনোভাব পোষণ করে। আজ এই তিনভাগে বিভক্ত হওয়া মুসলমানদের মাঝে শুরু হয়েছে বিরাট দ্বন্ধ। সর্বশেষ দলথেকে এখন ব্যাপকহারে নাস্তিক মুর্তাদ মুলহিদদের সৃষ্টি হচ্ছে। আখেরে তারা পুরো ইসলামকেই অস্বীকার করে বসে। তাদের অস্বীকার করার পিছনে দায়ী কারা ? তারাই যারা ইসলামকে আরো দুই-টুকরো করে রেখেছেন।

বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে চলছে এই ত্রিমুখী সংঘাত। দিকে দিকে গলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে ব্যক্তি বিশেষকে কেন্দ্রকরে বিশ্বাসের সিন্ডিকেইট। প্রতিটি মানুষ রাসুল সাহাবা কোরআন হাদীস সুন্নাহর দিকে দুষ্টিপাত না করে গোষ্ঠীবাদের দিকে ঝুকে পড়েছে। সবার একই কথা, এতোদিন ধরে চলে আসা নীতি এখন তা বাতিল হবে কেন? অপরদিকে আছে কুফরের ইন্ধন। কুফর চায় মুসলমানদের মাঝে বিভক্তির রেখা হউক আরো প্রকট। আজকে এই বংলাদেশের মানচিত্রের দিকে একটু লক্ষ করুন। ছোট্ট একটি ভুখন্ডে ১৭কোটি মানুষ। এই মানুষ্য শক্তি একটা আণবিক শক্তির মতো।  তাই দেশটাকে নিয়ে চলছে নানান কিছিমের টালবাহানা। নামের মুসলমান হলেও কুফর শক্তি এতটুকু বরদাশত করতে পারছেনা। তাই পুরো জাতির আক্বীদা বিশ্বাস ঈমান ও আখলাককে ধংস করার জন্য তারা মরিয়া। তারা ৮০%ভাগ সফল বালা যায়। কিছু নামের মুসলমান আর ৫%ভাগ কাজের মুসলমানদের কারণে ইতস্তঃ বোধ করছে। হ্যাঁ সামনে ঘোর বিপদ অপেক্ষা করছে। পুরো দেশের ভিতর দাংগা হাংগামা বাঁধিয়ে তারা চাচ্ছে অপারেশন সার্চলাইটের মতো ঝাপিয়ে পড়ে বাকীদেরে স্তব্ধ করে দিতে।

কিন্তু দেশকে রক্ষা করার জন্য, দেশের মানুষের ঈমান আক্বীদার হেফাজতের জন্য মাস্টার প্লান কোথায়? হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে যতটুকু হয়েছে তার চেয়ে হারিয়েছি বেশী। তারা ইসলামিস্টদের ভিতরের খবর জেনেগেছে। তারা বুঝতে পেরেছে ওদের দৌড় কতটুকু! এভাবে রাস্তায় রাস্তায় জীবন কাটিয়ে দিলে কার্যকর কোন পরিবর্তন আসবে?

ব্যক্তির চিন্তা চেতনা প্রভাব প্রতিপত্তিই দেখা দিয়েছে মুল সমস্যা রূপে। তারা বুঝতে পারছেন বিপদ এখন মাথার উপর। চোখ দেখাদেখি হয় রাস্তায় মিছিলে গলিতে মাহফিলে কোন এক দাওয়াতের ফাঁকে।কিন্তু নিজের চেয়ার আমিত্ত পদবী রঙ ছাড়তে নারাজ। প্রথার বিপরীত তিনি চলতে পারবেন না। বাবা করে গেছেন আমাকেও চালিয়ে যেতে হবে। আমার দাদা উস্তাজ তাই করেছেন অতএব আমাকে সেই পথেই হাঠতে হবে। অথচ দাদা উস্তাজ থাকলে আজ তিনি বলতেন যে না আমার জামানায় নৌপথই ছিলো একমাত্র ভরসা। এখন তোমাদের আছে আকাশ পথ সমুদ্রের তলদেশের পথ। মাটির গভীরে ট্যানেলের পথ। তুমি সেই পথ ধরেই চলতে হবে যা এখনকার যুগে মানায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা? কেউই প্রথা ভাংতে চায়না। নৌকায় ভেসে ভেসে থাকা যাযাবরী জিন্দেগীতেই নাকি আল্লাহ ও তার রাসুল খুশি হবেন। অথচ স্বয়ং কোরআন বলছে- তোমরা তোমাদের সামর্থের ভিতর প্রচন্ড শক্তি সঞ্চয় করো, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়ার মাধ্যমে। যাতে আল্লাহর দুশমন ও তোমাদের দুশমনদের প্রাণে ভয় ঢুকিয়ে দিতে পারো’।

না তিনি নড়বেন না। তিনি আগাবেন না।তিনি ভাবছেন, আমার রুটি রুজি দালান বাড়ি গাড়ি ঘোড়ার কোন কমতি যেহেতু নেই সেখানে ফালতু ঝামেলা পাতিয়ে লাভ কি? তিনি মুরিদানদের মাঝে দেখছেন খেলাফতের সাম্রাজ্য। মুহতামিম সাহেব দেখছেন মাদরাসার বাউন্ডরির ভিতর কায়সার ও কিসরা। হেফাজতের বিশাল মিটিংগ দেখে ভাবছেন নিজেকে বাদশাহ সিকান্দার। প্রতিটি দল নিজেদের খাটি ভাবে অন্যকে ভাবে বাতিল। অন্য কেহ ভাল কিছু করলে তারা বিদ্রুপের তুফান চালায়। সর্বগ্রাসী সর্বনাশা এই দলবাজি খানকাবাজি মাদরাসাবাজির ফাঁকে কুফরের সাম্রাজ্য খুব টইটুম্বুর হতে চলেছে। তারা তাদের শিক্ষানীতি নারীনীতি বেহায়ানীতি জবরদখলনীতি পুলিশনীতি সেনানীতি প্রশাসননীতি সংসদনীতি অর্থনীতি তৃণমূলনীতি সবই মুকাম্মাল করে ফেলেছে। আর ইসলামিষ্টরা আছেন আপন আপন সাম্রাজ্যে বিভোর। এখানে ব্যক্তিই হয়ে উঠেছে মুখ্য। আদর্শ আখলাক উম্মাহ ইসলাম রয়েগেল গৌণ হয়ে।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...