পাপী বান্দার সাথে আল্লাহর দূরত্ব তৈরি হয়। আল্লাহর নৈকট্য, প্রীতি, ভালোবাসা— সব শেষ হয়ে যায়। আল্লাহর জিকিরে মন বসে না। আল্লাহর জিকিরে, আল্লাহর আলোচনায়, আল্লাহর কথায়, আল্লাহওয়ালাদের কাছে, আল্লাহওয়ালাদের মাহফিলেও মন বসে না। মসজিদে আসতে ইচ্ছে করে না। নামাজ পড়াকে একটা বিপদের মত মনে হয়। মসজিদে কিছু সময় বসা একটা মসিবতের মত অনুভূত হয়।
যেমন এক ব্যক্তি মাছ কিনলো এবং একজন কুলিকে বললো— ভাই এটা আমার ঘরে নিয়ে চলো। সে বললো— জনাব, রাস্তায় নামাজের সময় হলে নামায পড়বো। সে বললো কোন সমস্যা নেই, পড়ে নিয়ো। এরপর সময় হলে সে নামাজ পড়তে মসজিদে চলে গেলো আর মালিক বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। যখন মানুষ বের হওয়া শুরু করলো আর কুলি বের হলো না। তখন সে বললো— আরে, তোমাকে কে বের হতে দিচ্ছে না? ভেতর থেকে কুলি জবাব দিলো— জনাব, যে আপনাকে ভেতরে আসতে দেয় না, সে আমাকে বের হতে দেয় না।
আমি দেখেছি এক লোক মসজিদের ভাড়া দোকানে থাকতো আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই ছেড়ে দিতো। মসজিদের দরজার সাথে দোকান কিন্তু নামাজ পড়ার তাওফিক তার নেই।
وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ﴿٨٨﴾
আমার তাওফিক আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। [সুরা হূদ; আয়াত ৮৮]
আল্লাহ তায়ালা থেকে দূরত্ব তৈরি হয় এবং আল্লাহর আলোচনা ভালো লাগে না। আল্লাহর কথা ভালো লাগে না। আপনি তার সাথে কথা বলতে গেলে দেখবেন তার বক্ষ ঘুরে যাচ্ছে। আমাদের তাবলিগের ভাইরা যখন গাশতে যান, এই ধরণের অভিজ্ঞতা তাদের প্রায়ই হয়। অনেকে তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। আল্লাহর সাথে এরকম দূরত্ব তৈরি হওয়া পাপের একটি প্রভাব। আল্লাহ তায়ালা বলেন—
كَلَّا ۖ بَلْ ۜ رَانَ عَلَىٰ قُلُوبِهِم مَّا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴿١٤﴾
তাদের খারাপ কাজের কারণে তাদের অন্তরে মরচে পড়ে গেছে। [সুরা মুতাফফিফীন; আয়াত ১৪]
এক লোক কোন আরেফের কাছে গিয়ে অভিযোগ করলো— আমি আল্লাহর সাথে খুব দূরত্ব অনুভব করি। আরেফ বললেন—
إذا كنت قد وحشت بالذنوب فدع إذ شئت واستعنه
যদি যদি তোমার পাপের কারণে দূরত্ব অনুভূত হয় তাহলে পাপ করা ছেড়ে দিয়ে তার দরজায় এসে পড়ো, তুমি তার ভালোবাসা লাভ করবে।
সূত্র : আমল সে জিন্দেগি বনতি হ্যায়
লেখক : জুলফিকার আহমাদ নকশবন্দি