কমাশিসা ডেস্ক:: ডক্টর ইউনুস মাইক্রোক্রেডিটের কেরেশমায় নোবেল বিজয়ী হয়েছেন।আচ্ছা এই পর্যন্ত দুনিয়ার ইতিহাসে মুসলমানদের লাভহয় এমন কাজ করে কেউ নোবেল পেয়েছেন বলে কারো জানা আছে? বরং খতম করার জন্য যারা অবদান রাখছেন তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় শান্তির পুরস্কার।আর দিবেইবা না কেন? নোবেল পুরস্কার স্থাপনের ক্ষেত্রে কি কোন মুসলমানের অবদান আছে? না নাই।আপনি আমি অন্যের হাতে হা করে চেয়ে থাকবো যে সে আমাকে খাওয়াবে পরাবে বাসস্থান করে দিবে।মুসলমানদের সাথে তারাই বেশি শত্রুতা পোষণ করে যারা ইহুদী ও মুশরিক। নাসারাদের সাথে সামান্য মানবিক সম্পর্ক থাকবে আছে একথা কোরআনের ভাষ্যও বটে। এজন্য হয়তো এখনো তারা উপর দিয়ে বোমা বর্ষণ করলেও নীচ দিয়ে খাবারের পেকেট বন্টন করে।
আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা হলো তিনি তার দ্বীনকে বিজয়ী করে ছাড়বেন; যদিও তারা চায় মুখের ফুৎকার দিয়ে তা নিভিয়ে দিতে।কিন্তু মুসলমানরা ধরেই নিয়েছে যে আল্লাহ যখন দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন তখন আমাদের করার কী আছে? আর অপরদিকে ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রুরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা বিজয়ী হয়েই ছাড়বে।তারা তাদের গড সৃষ্টিকর্তা ও ইশ্বরের কাছে দোয়া চাইছে যে, হে মাহান প্রতিপালক আমরা আমাদের প্রচেষ্টার শেষে এসে পৌছেছি। এখন তোমার কাজ।অথবা যারা ইশ্বরে বিশ্বাস করেনা তাদের কথা হলো আমরা আমাদের জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।অর্থাৎ তারা সকলেই আজিমতের উপর। আর মুসলমানরা রখছতের উপর। এখন বলুন স্বাভাবিক নিয়মে কে বিজয়ী হবে?
আল্লাহ তায়ালা নিম্নগামী বিশ্বাসী জনপদকে কুফরের সাথে মিটিয়ে দিয়ে আরেকটি নতুন পরাক্রমশালী জাতি সৃষ্টি করেন যারা বীরদর্পে তাঁরপথে সাহসের সাথে চলে।জীবন ও মরণ সবকিছু তাঁর জন্য উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকে।সেই বিষাক্ত জনপদ এখন বাংলাদেশ। যেখানে মসজিদের অভাব নেই। মাদরাসার অভাব নেই। কোরআন তিলাওয়াতের অভাব নেই।ওয়াজ নসীহতেরও কোন সীমা নেই।কিন্তু তার সাথে পাল্লা দিয়ে কুফরের বিস্তার। হু হু করে কুফর বাড়ছে।কুফরের কাছে বড় বড় ধার্মিকেরা বিকিকিনি খাচ্ছে।নিজেদের মাঝে চলছে বিবাদ-বিষম্বাদ।দেখা যায় প্রতিটি ক্ষেত্রে কুফরের বিজয়।কুফরের অগ্রগামি আক্রমণ। আর ইসলামী শক্তিগুলোর দেফায়ী পলিসি, জান বাঁচানো তথা আত্মরক্ষার আন্দোলন। একেকটা কুফরি আন্দোলন গজিয়ে উঠে আর ইসলামি শক্তিগুলো হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় নামে।ক-দিন চিল্লা-চিল্লি তারপর যেই সেই। তারা চায় সর্বশেষ ঈমানি শক্তির পরীক্ষা করে দেখতে। ধাপে ধাপে অনেকদূর এগুতে পেরেছে। বৃটিশ যেভাবে মুসলমানদের রাস্তায় রেখে রেখে পুরো হিন্দুস্তান অন্যের হাতে তুলে দেয়। ঠিক তেমনি এখন ইসলামের প্রতি ভালবাসা যাদের আছে তাদের রাস্তায় রেখে রেখে সকল শক্তি নিঃশেষ করে দিতে। বলায়ায় ইসলামিক দলগুলো এখন আখেরী নিঃশ্বাস ছাড়ছে বলে মনে হয়। সবচেয়ে কঠিন এবং দুর্ভাগ্যের বিষয় আলেম উলামারা তাদের এই ভাগ্যবরণকে কিসমত নিয়তি বলেই মেনে নিয়েছেন।
আজ দিকে দিকে চলছে হিজাব ছিড়ে ফেলার মহড়া।অবাদ মেলামেশা জিনা ব্যাভীচার সুদ ঘুষ খুন জুয়া কুশাসন সবই চলছে প্রকাশ্যে। ঘুষকে অর্থমন্ত্রী বললেন স্পীডি মানি।পরকীয়া কোন অপরাধ নয় সংসদে একমন্ত্রীর খোলামেলা উচ্চারণ। সুরঞ্জিত বাবু বললেন যারা বেশি ধার্মিক তারা সৌদিতে চলে যাক। আল্লাহ রাসুল কোরআনকে নিয়ে টিটকারী মারা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।মাত্র ৫ভাগ লোক যারা ইসলামি রাজনীতির সাথে জড়িত তাদের রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে কোন প্রকার সংযোগ বা প্রভাব খাটানোর যোগ্যতা বা ক্ষমতা নেই। আর এই না থাকাটাকে পরহেজগারী ও তাক্বওয়ার বিষয় হিসাবে দেখাহচ্ছে?
ডক্টর ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংকের নামে বাংলাদেশের ৬৮হাজার গ্রামে সুদ ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তারা এখন গরীবের ঝুলা থেকে সুদ বের করে আনার কৌশল রপ্ত করেছে। এই কৌশলই তাকে নোভেল এনে দেয়। কারণ পুজিঁপতিরা বিনিয়োগের আগে দেখতো ক্রেডিট স্কুর। আর ডক্টর ইউনুস এসে আবিষ্কার করলেন যে, না ক্রেডিট স্কুরের দরকার নাই্। একজন মানুষ সে নারী হউক বা পুরুষ তার বেঁচে থাকা বডি বা জীবনই একটা ক্রেডিট। অতএব তার কাছে বিনিয়োগ করা যায়। প্রতিটি গ্রামে গ্রামে তারা গড়ে তুলেছে দালাল চক্র।গরীবের না আছে বন্ধু না আছে আইন। তাকে কায়িক শ্রমে খেটে কুটে ভিক্ষা করে হলেও রিনের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।একশত টাকা করজ নিলে প্রতি সপ্তাহে ২০টাকা করে পরিশোধ করতে হবে ১০ সপ্তাহ। মানে পুরো ২০০ টাকা। এভাবে ডক্টর ইউনুস একশত পার্সেন্ট থেকে দেড়শত দুইশত পার্সেন্ট সুদ চার্জ্য করেন। কেউ দিতে না পারলে বা কিস্তি মিস করলে দালালরা প্রথমে হুমকি ধমকি দেয়।তারপর ঘরের চাল গরু গাভি ছাগল যা পায় তা নিয়ে বিক্রি করে উসল করে নেয়। কারণ কথা বলার সাহস কারো নেই। এভাবে হাজার হাজার পরিবার রিনের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে পথে বসেছে।ঘর-বাড়ি সহায় সম্বল সবই বিক্রি করে দিতে হয়।এই হলো ডক্টর ইউনুসের সাম্রাজ্যের একটি কালো অধ্যায়। আর আরেকটি কালো অধ্যায় হলো আইএমএফ বিশ্বব্যাংক সহ পশ্চিমা মিশনারীগুলো মানবিক সেবার নামে বড় বড় অংকের অনুদান গুলো এনে লগনি করে সাতকে সত্তরে রুপান্তরীত করায় পশ্চিমারা বেজায় খুশি। আরো আছে। তারা ১০- ২০পার্সেন্ট সুদে ডক্টর ইউনুসকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার লোন দেয়। ডক্টর ইউনুস তা লগনি করে পান শত পার্সেন্ট। তাই লাভ আর লাভ। এদেশের মানুষকে দায়ীমী ফকির রাখার জন্য আখলাকী মুশরিক বানানোর জন্য ডক্টর ইউনুস সফল।
এর বিপরীতে আমরা কি করেছি? কিছু প্রতিবাদ মিছিল বই লেখা ওয়াজ ইত্যাদি। অবশ্য আমাদের জানা মতে মিশনারীদের থাবা থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় মুফতি মুহাদ্দিস বিচক্ষণ কিছু আলেম সমিতি কোম্পানি ইত্যাদি কায়েম করে চেয়েছেন নিজেরা স্বাভলম্বি হতে।সাথীদেরকে প্রতিষ্টিত করতে। গরিব অসহায়দের সাহায্য করার মানসে ইসলামী অর্থনীতি কায়েমের সোনালী স্বপ্ন নিয়ে তারা মাসিক এককালীন চাঁদা তুলেছেন।হ্যাঁ তারা সফলভাবে তুলেছেন একথা সত্য তবে আরো সফলভাবে খিয়ানতের ঐতিহাসিক নজির স্থাপন করে মুখ লুকিয়ে কেউ কেউ মেনেজ করে পলাতক হয়ে আছেন দীর্ঘদিন যাবত। দেশ ছেড়ে বিদেশ্ পলায়ন করার নজির আছে।আমার নিজের চাঁদা দেয়া দুটি সংস্থা উলামা ইখওয়ান ইত্যাদি নামের সমিতি এখন দাফনের অপেক্ষায়। কোথায় আমানত? কোথায় খওফে খোদা? কোথায় পরহেজগারী? ব্লাডকেন্সার আক্রান্ত শরিরে যত প্রকার মলম আর যত্ন করা হউক না কেন তাকে আর সারিয়ে তুলা যাবেনা। একদিকে কুফরি সমাজের প্রভাব।অপরদিকে অভাবের তাড়না।অন্যদিকে খন্ডিত অপরিপক্ষ ধারনা নিয়ে ব্যবসায়ে অংশগ্রহন।এই ভুঁতা শিক্ষা দিয়ে ডক্টর ইউনুসকে মোকাবেলা করাতো দুরে থাক নিজেরা ঈমান হারা হওয়ার সমূহ আশংকা বিরাজমান।
তাই আমরা সংস্কারের কথা বলি।আধুনিকায়নের কথা বলি। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলি।যুগের চাহিদানুযায়ী অর্থবহ শিক্ষাব্যবস্থা গড়েতুলার কথা বলি।আমাদের চোখের সামনে এই প্রজন্মের পরাজয় হচ্ছে দেখেও কেন টনক নড়েনা তা আমাদের বুঝে আসেনা। কোন কৌশল নিয়ে আজ বেফাক ও কওমি মাদরাসাগুলো জাতির কাছে মাথা উঁচুকরে দেখাবে? শিক্ষা? অর্থনীতি? রাষ্ট্রবিজ্ঞান? চিকিৎসা? কলাবিভাগ? সাইন্স রাসায়ন? আধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং? যুদ্ধবিদ্যা? কোন বিষয়ে তারা জাতিকে আগাইয়া দিচ্ছে? হ্যাঁ মাত্র ২-৩পার্সেন্টকে সহীহ শুদ্ধ করে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত মাসাআলা মাসাইল শিখাতে পারছে একথা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। মিশরের সাধারণ সমাজে কোরআন মজীদ সুন্দর করে তিলাওয়াতের একটা রেওয়াজ আছে। তাদের হালত আমাদের থেকে খুব আলাদা নয়। তাদেরকে জোর করে ইসলাম থেকে দুরে রাখা হচ্ছে। আর আমরা এমন এক পথ বেছে নিয়েছি যে পথে হাটলে সামাজিক ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা পাবার কোন সুযোগ নেই।
তাই বোর্ড রাহবরদের আহব্বান জানাই যে আপনাদের আজীমতের উপর আসতে হবে।করতেই হবে এমন মনোভাব নিয়ে কার্যকরী শিক্ষা সিলেবাসের দিকে নজরদিন।পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টেরে কর্মরত দ্বীনদার বিশেষজ্ঞদের ডেকে এনে ৬হাজার মাদরাসাকে কেন্দ্রকরে একটা ইকনোমিক জোন গড়েতুলার প্রয়াস নিন। আমরা যদি নিজেদের বলি ইসলামের ধারক বাহক তখন কোন মুখে সুদী ব্যাংকগুলোতে একাউন্ট খুলে সুদের সাহায্যকারী সাক্ষী বনছি? এরচেয়ে লজ্জার বিষয় তাহলে আর কি হতে পারে? নিজেদের অর্থনীতিকে যদি নিজেদের বলয়ের ভিতর পরিচালনা করেন।জমা তুলা সহ ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু কওমি ইসলামি ব্যাংকের মাধ্যমে হলে চিত্রটা কেমন লাগতো? বলবেন কেমনে হবে? ডক্টর ইউনুস নিজের বুদ্ধিখাটিয়ে যা করলো আমরা কি কিছু করতে পারিনা? আজ পৃথিবীর বিভিন্ন অমুসলিম দেশে শরয়ীব্যংকিং ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।
যে স্বপ্ন দেখতেই জানেনা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে কিভাবে বলুন? আজ কওমি শিক্ষকদের বাংলাদেশের সর্বনিম্ন বেতন।কোন স্কেল নিয়ম কানুন নেই। নেই পেনশন ঈদ-বোনাস সহ দুর্যোগকালীন সহায়তা। মেয়ে বিয়ে দিতে ছেলে বিয়ে করাতে চিকিৎসার জন্য কত শিক্ষকের দেখছি আহাজারি। তাহলে কি আমরা কিছুই করতে পারবোনা? একজন ডক্টর ইউনুস পারে আমরা ৬হাজারে পারবোনা? কেন এই হীনমন্যতা? এই বুজদিলী আসলো কোথা থেকে? দুনিয়া চাইনা দুনিয়া চাইনা বলে যারা চেচামেচি করেন তাদের অনুরোধ করবো আর বেতন চাইবেন না।লেনদেনের বাতচিত শুভা পায়না আপনার মুখে! মিছেমিছি সময় নষ্ট না করে আসুন বেফাক থেকেই শুরু হউক বাংলাদেশের ইসলামি অর্থনীতির শুভযাত্রা। বর্তমান বেফাকের কর্মকর্তা অনেকে চাকুরি এজন্য ছাড়তে নারাজ যে, আর্থিক কষ্টে নিপতিত হবেন বলে। বলাবাহুল্য তাদের আশংকা অমূলক নয়।আমরা তাদের এই আশংকাকে গুরুত্বদিয়ে পরবর্তি জীবন ও তিনির পরিবারকে শংকা মুক্ত করতে সামনের দিকে আগাই।বেফাক একটি সংগঠন তার একটি শাখা মাত্র পরীক্ষা গ্রহন।সিলেবাস প্রণয়ন ও পরিচালনা। আমরা বলবো বেফাক যেন ইসলামি অর্থনীতির ময়দানে এসে হাজার হাজার উলামাকে ডেকে এনে সুপরামর্শের মাধ্যমে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহন করে। তাতে কর্মসংস্থান যেমন হবে তেমনি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও আসবে।বিভিন্ন মুসলিম দেশের আর্থিক সাপোর্টও বেফাক পাবে সন্দেহ নেই।