ফারহান আরীফ::
বর্তমানে জেনারেল শিক্ষায় জ্ঞানের কোন মূল্যায়ন নাই, আছে শুধু সনদের(সার্টিফিকেটের) মূল্যায়ন। আর বেসরকারী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্টান এদেশের কওমি মাদ্রাসা গুলোতে সনদের মূল্যায়ন নাই আছে শুধু জ্ঞানের মূল্যায়ন।আসলে জ্ঞান দিয়েই সনদ অর্জণ করতে হয়,আর সনদই হচ্ছে জ্ঞান থাকার প্রমান্য দলিল। একটাকে ছেড়ে আরেকটা হতে পারেনা ,একি মুদ্রার এপিট আর অপিট ধরে নিতে হবে।এখানে একটা বিষয় আলোচনা না করে আমি পারছিনা।
কারণ এবিষয় গুলো দেখে অন্যরা কিন্তু হাসাহাসি করে,নিন্দা করে। আমাদের কওমি মাদ্রাসা গুলোর বোর্ড কর্তৃক কিছু নিয়ম থাকা প্রয়োজন।একটা সিস্টেমে সবাইকে চলা উচিৎ।দেখেন, কিছু কিছু ছাত্র আছে বছরে অথবা বছরের মাঝখানে মাদ্রাসা পরিবর্তন করে নিজের চাহিদানুযায়ি ভাল মাদ্রাসায় ভর্তি হয় । বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার আশায় এরকম কিছু কিছু ছাত্ররা করে তাকে। এ জন্য ঐ ছাত্রকে চলে আসা মাদ্রাসার ছারপত্র, সনদপত্র বা সার্টিফিকেটের কোন প্রয়োজন হয়না।দেখা গেছে কওমি মাদ্রাসা গুলোতে
নিজেদের সনদ নিজেদের কাছে কোন গুরুত্ব নেই।আমাদের কওমি মাদ্রাসা গুলোর সনদ আমরাই যদি গুরুত্ব না দেই জেনারেল লাইনে এর গুরুত্বত না থাকারি কথা?সনদের কোন প্রয়োজন নাই,আমাদের কওমি নিয়ম অনুযায়ি আমরা ভর্তি পরিক্ষায় বিশ্বাসী। কোন শিক্ষা প্রতিষ্টানে অধ্যাপনার জন্য সনদপত্র দেখা হয়না,দেখা হয় মাওলানার পরিচিতি,ইলিম,আমল- আখলাক এবং কোন প্রতিষ্টানে ফারিগ হয়েছেন সেই মাদ্রাসার সুনাম সুখ্যাতি ইত্যাদি ইত্যাদি।
যদি কোন ছাত্রের ভর্তি পরিক্ষা নেওয়া হয়,পূর্বে পড়ে আসা ক্লাসের দুই চারটা কিতাব (বই)ছাত্রের সামনে দেওয়া হয়, মোটামুটি সে যদি এবারত বা রিডিং পড়তে পারে,হুজুরের চার পাঁচটা প্রশ্নের দুই চারটার উত্তর দিতে পারলেই তাকে কৃতকার্য হিসাবে গ্ণ্য করা হয়।দুঃখজনক হলেও সত্য।একটা কথা না বললেই নয়।আমি কর্তৃপক্ষের ভুল বা প্রদঙ্খলন ভাঙ্গার জন্য বিলছি।কিছু কিছু ছাত্র আছে যারা মধ্যখানে দুই তিন ক্লাস না পড়ে উপরের ক্লাসে উটে যায়। এটা সচরাচর প্রায়খানেই ঘটছে এবং এটার সুযোগ করে অনেক মাদ্রাসা বসে আছে। এটা কিভাবে সম্ভব আমার যুক্তিতে ধরেনা ।
এজন্য ছারপত্র অথবা সনদপত্রের কোন প্রয়োজন ও হয়না।আমার চোখে দেখা।
ক্লাস (জামাত)আলিয়া আউয়ালের একজন ছাত্র মিশকাত জামাতে ভর্তির জন্য একটা মাদ্রাসায় গমন করে।তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তুমি কোন ক্লাসে(জামাতে) ভর্তির জন্য এসেছ?সে বলেছিল হুজুর আমি মিশকাতে ভর্তির জন্য এসেছি।জৈনক্য হুজুর বললেন ঠিক আছে
ভর্তি পরিক্ষা দাও।দেখা যাক রাখা যায় কিনা।কথামত তাকে পূর্বের ক্লাস(জামাতের)জালালাইনের কিছু কিতাব (বই)তার সামনে এনে ভর্তির জন্য পরিক্ষা করা হল।তাকে বলা হল তুমি যেখান থেকে মন চায় (ইবারত) রিডিং পড়ে যাও।সে তার পূর্বে শিখে আসা একটা পৃষ্টা খুজে বের করে পড়তে শুরু করল।গরগর করে এত সুন্দর কুরআন শরীফের মত পড়েগেল জালালাইন নামক(বইটি) কিতাবটি, হুজুরতো মহা খুশি,খুব ভাল করে পড়তে পারে ছেলেটা।তার পর কয়েকটা প্রশ্ন করলেন,সে মাত্র একটা প্রশনের উত্তর দিতে পারল,আর কিছু বলতে পারেনি,হুজুর বললেন মেহনত(কষ্ট) করিও,বাস,৩৩ মার্ক দিয়ে দিলেন।সে ফরমটা নিয়ে অফিসে যাওয়ার পর তাকে ভর্তি করা হয়েগেল।
এইতো আলিয়া আউয়াল থেকে ছাত্রটা তিন চার ক্লাস টপকিয়ে মিশকাতে ভর্তি হয়েগেল।একি কান্ড,এটা কেমন কথা? ছারপত্র ও লাগেনি সনদপত্র ও লাগেনি।এভাবে কিছু কিছু স্থানে চলে আসছে এই কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাতা নেই।এভাবেই অনেক ছাত্ররা দুর্নীতি করে কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হচ্ছে।আমি কর্তৃপক্ষকে অবগত ও নিয়মটা বন্ধ করার জন্য আহব্বান করছি।এবং সুন্দর একটা নিয়ম করে ছারপত্র ও সনদ পত্রকে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রদের রেজাল্টের উপর ভর্তিটা নিতে হবে।বোর্ড কর্তৃক ভর্তির জন্য নির্দৃষ্ট নীতিমালা করা দরকার।সুন্দর একটা সিস্টমে ভর্তির প্রক্রিয়াটা বোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রনে আনা একান্ত প্রয়োজন।
যারা বোর্ড পরিচালনা করেন তঁারা এবিষয় নিয়ে ভাবা দরকার।আমি অনুরুধ করছি আপনারা মান সম্মত আইন কানুন নিয়ম নীতি ইত্যাদির দারা যদি কওমি মাদরাসা পরিচালনা করেন।আমরা আপনাদের কে নিয়ে গর্ব করব।আপনাদের জন্য প্রান খুলে দো,আ করব।আপনারা আমাকে নেগেটিভ ভাববেন না,সত্যি কওমি মাদ্রাসা আমার প্রান,যাতে অন্যরা হাসাহাসি না করে,এজন্য কিছু বিষয় গুলো আপনাদেরকে অবগত করছি।(ক্রমশ)
…………………………………………….
লেখকঃফারহান আরিফ
টাইটেল পাশ আলেম, বর্তমানে শিক্ষার্থী এম.সি কলেজ সিলেট