বৃহস্পতিবার, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ২:৩২
Home / প্রতিদিন / হেফাজতের কনভার্টার অপটিক্যালস

হেফাজতের কনভার্টার অপটিক্যালস

imagesআযাদ আবুল কালাম ::
হেফাজতে ইসলাম একটি জগা খিচুড়ী মার্কা ভাতের ডেগ। ভাইসাব চ্যাতবেন না, আগে কিচ্ছা শেষ করে লই। শুনেন।
আরে ভাতের ডেগ তো খারাপ জিনিষ না, মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। আশরাফুল মাখলুকাত ডেগে ভাত রান্না করে খেয়ে জিবন বাঁচায়। অর্থাত্‍ জিবন বাঁচায় ডেগের ভাত খাইয়া। যারা খায় তারা চুর হতে পারে ডাকাতও হতে পারে, মুনাফেক হতে পারে ভাল মানুষও হতে পারে। তবে শব্দটা সুন্দর না আরকি। কেন এই অসুন্দর শব্দ দিয়ে সম্বোদন করা হল তার ও একটা ফিরিস্তি আছে।

তবে ডেগের ভেতর থেকে চুর ডাকাত আর মুনাফেকের চেহারাও ধরা পড়ে। অতএব ইহা জগা খিচুড়ী মার্কা ভাতের ডেগ।

একটু মনযোগ দিয়া পড়েন। সেই ব্যাপার নিয়া ই বলতে চাচ্ছি। হেফাজতের জগা খিচুড়ী মার্কা ডেগের কথা বলি; এই ডেগে চাল ডাল আলু মূলা মাংস কদু গাজর ইত্যাদিরা এসে জমে উঠে। হেফাজত না করে না। জমলে দোষ নেই বরং না জমলে দোষ আছে। কিন্তু খিচুড়ীটা যে জগা হয়ে যাচ্ছে সে জন্য আজও বিরাট ধরনের কোনো ভূমিকা নিল না এই ডেগ, তবে বিরাট বিরাট বিপদে কিন্তু পড়েছে বার বার ই।

এইসব আলু আর মূলারা তো হেফাজতের ভুনা খিচুড়ীর মূল স্বাদ নষ্ট করে দেয়। মিছিল বড় করে চারদিক গিরে দাড়ায়। সেটাও ভাল কথা। কিন্তু আলু গাজর জাতীয় মানুষ ঐ মিছিলটা যে তাদের নামে বিক্রি করে উড়াল পাখি উড়াল দিয়া চইলা যায়। চইলা যাক সেও ভাল কথা। সমস্যা নাই। যাবেই তো। তবে চইলা গিয়া যে নানান আ-কাম কূ-কাম ঘটাইয়া খিচুড়ীর ডেগটা চেপা কইরা দেয়, এই চেপা ডেগে যে পরে দেশের মটু পাটলু মার্কা বড় বড় মাথারা এসে গুতায় আর বলে “এতো স্বাদের ডেগ তো চ্যাপা কেন চ্যাপা কেন তাইলে ডেগে বোমা আছে জঙ্গি আছে”
বোমা জঙ্গি তো আছে ঠিক, কিন্তু এই বোমা তো ডেগের খালার ঘরের ভাইয়ের ঘরের ভাতিজাও না। বরং ডেগের চৌদ্দ গোষ্টির কেউ ই চিনে না কে আইলো কে গেলো আর কে চ্যাপা করলো। তবে চেনা দরকার। না চিনলে হবে ক্যামনে ?

12376622_1692707080977429_9009937157848970522_n2দুঃখের বিষয় হইলো যত ই চিনি না চিনি না বলে পানখোরি জবাব দেয় না কেন হেফাজত।
কিন্তু বাংলার এ্যানিম্যাশন মার্কা পুলিশ আর মটু পাটলু মার্কা বুদ্ধিজীবিরা তো আর বোমা ফাটলে কিছুতেই বুঝবার চায় না যে ওটা হেফাজত করে না। হেই ঘুরাইয়াই ফিরাইয়া ই কয় ডেগের লোকে যেহেতু অমুক জায়গায় বোমা মারছে তমুক জায়গায় নাশকতা করছে ডেগে তো তাইলে বোমা আছে। কিন্তু ওটা ডেগের বোমা না কে বুঝাবে। কে রাখলো সেটা তো হেফাজত জানে ই না।

কিন্তু ভাইসাব হেফাজতও একদিন পানে জর্দ্দা কমাইয়া খাওয়া শুরু করে, তখন পানখোরী চিন্তা বাদ দিয়া ঠান্ডা মাথায় বৈজ্ঞানিক লাইন ধরে একটা অপটিক্যাল কনভার্টার ক্যামেরা বানায়। ক্যামেরার কাজ কি? ক্যামেরা মানে এই কনভার্টার চশমা চোখে দিয়ে কোনো মানুষের দিকে তাকালে একজন কনভার্ট মানুষ দেখা যায়। অর্থাত্‍ তিনি প্রকৃত অর্থে কেমন লোক তা পষ্ট করে দেখা যায়। প্রথম ট্রাই করার জন্য রাস্তার একটা লোককে ডেকে এনে চোখে ঐ চশমা লাগিয়ে তাকানো হল, দেখা গেল লোকটা মূলত একটা ছাগল। হেহে।

আসুন সেই অপটিক্যাল কনভার্টারটা এবার চোখে লাগাই। হেফাজতে যোগ দেয়া কয়েকটা দলকে আমরা দেখবো।

দুপুর বারোটা বেজে কুড়ি মিনিট। হেফাজতের একনিষ্ট কর্ণধার (ছদ্মনাম)মাওলানা আব্দুল্লাহ সাহেব ছাই রং একটা জুব্বা পরে মঞ্চে বসে আছেন। তার মুখটাও কেমন ছাই ছাই হয়ে আছে। হবেনা কেন ! কত মানুষ আজ ধরা পড়বে। ব্যাপারটা কতইনা জটিল। সামনে বড় একটা টিবি। এবং নগদ কয়েক লাখ মানুষও বসা। সবার নগদ পরিচয় হল তারা হেফাজতে ইসলাম।
একটু পরে অবশ্য আব্দুল্লাহ সাহেব চশমা চোখে লাগাবেন। তখন বুঝা যাবে কোনটা হেফাজত আর কোনটা করামত।

তিনি গলা খাকারী দিয়ে এক দলা চিবানো পান মুখ থেকে ডান দিকে ফেললেন, পানের থুবড়িটা ধবধবে সাদা পোষাক পরা একজন লোকের গায়ে গিয়ে পড়লো, আব্দুল্লাহ সাহেব সরি বলা তো দূরের কথা দেখেও পস্তালেন না, মোটেও গাবড়ালেন যে লোকটার গায়ে পড়ে গেলো। কারণ কি ? কারণ কনভার্টার অপটিক্যালটা টেবিলে রাখা, গ্লাসের ওপার থেকে দেখা যাচ্ছে লোকটা একটা শেয়াল!!

আল্লারে চোখে লাগালে কি সর্বনাশ যে শুরু হবে। লোকটা কিন্তু রাগে পতপত করছে। কিন্তু মঞ্চোপবিষ্ট আব্দুল্লাহ সাহেবের কিচ্ছু যায় আসে না।

পানের দলা ফেলে দিয়ে পেছনে দাঁড়ানো তার নিজস্ব দশ সদস্যের টিমের দিকে চোখ গোল করে তাকলেন। গোল চোখটা একটু লালও ছিল। তার মানে গাধারা এখনো দাঁড়িয়ে আছিস! চারদিকে পুলিশের ব্যারিকেটটা মজবুত করতে বল গিয়ে। আমি ইতোমধ্যেই চশমা চোখে উঠাব। ব্যক্তিদেরকে পরে দেখবো। তার আগে যত রাজনৈতিক সংঘটন আমাদের হেফাজতে আছে তাদের লিষ্টিটা আমার হাতে তুলে দে।

বিএনপি, জামাত, খেলাফত, জমিয়ত, ক্বওমিয়ত, ইত্যাদি সকল দলের সাংঘটনিক পরিষদের দায়িত্বশীল সহ সকলকে ধীরে ধীরে প্যান্ডেলের সামনে জায়গা করে দেয়া হোক। পুলিশ রেব বিজিবি সকল বাহিনীর লোকেরা গেরাও করে আছে। সরকারের কাছে আবেদন করে ওদেরকে আনা হয়েছে। যাতে করে কেউ পালাতে না পারে।

আব্দুল্লাহ সাহেব একটু থেমে কি যেন ভাবলেন তারপর বললেন আচ্ছা ঐ দলগুলো পরে সামনে আসুক। অপটিক্যালটা আরেকবার চোখে লাগিয়ে ট্রাই করে নেই। ইয়াআআআআ…প্রথম সারিতে দেড়শতাধিক লোক বসা। যাদের মধ্যে সবাই ইসলাম চাই ইসলাম চাই বলে বলে জোসের ঠেলায় জানাবাজি করে বেড়িয়েছে, তাদের মধ্যে পঞ্চাশ জনের চেহারা বিকৃত। জিবনে প্রতিদিন কমপক্ষে দু চার ওয়াক্ত নামাজ ছেড়ে দিয়েছে। অনেকেই আজকের ফজরের নামাজটা পর্যন্ত পড়ে নাই। নামাজ না পড়লে চশমায় এক ধরনের চেহারা কনভার্ট হয়ে উঠে। কয়েকটা চেহারা তো দেখা যাচ্ছে একেবারে গদগদে গরুর মত। ওরা হচ্ছে যারা ইসলাম চাই বলে মিছিলে দৌড়াচ্ছিল ঠিকই কিন্তু হেফাজতের কথা বলে চাঁদা তুলে নিজের পেট বড় করেছে। কয়েকটা চেহারা দেখা যাচ্ছে একেবারে গুইসাপের মত! ওরা হচ্ছে ঐ যে যারা একদিকে বলে ইসলাম চাই অপরদিকে বোমা এবং সরকারের চিপায় পড়ে হেফাজতের দোষচর্চা করে, আর মাঝে মাঝে মিছিলে আন্দোলনে যোগ দেয়।

ঐ কর্ণারের দিকে চোখ ঘুরালেন আব্দুল্লাহ সাহেব, দেখলেন কিছু দীর্ঘকায় নূর নূর চেহারার বেহেশতী মানুষ বসে আছে। দেখে বড় খুশি হলেন। তিনি চশমা নামিয়ে একটু রেষ্ট নিলেন।
এবার রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীলদের দিকে তাকানোর পালা। চশমা চোখে নিলেন…।
চলবে

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...