প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছি, সমস্যা কোথায়? প্রশ্ন আসছে সব শ্রেণী থেকে। প্রথম কথা হচ্ছে, কেউ আমার হাত কাটলেও ব্যথা পাই, আঙুল কাটলেও। কারণ হাত-পা সবই আমার! ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠিত নাই বলে সংবিধান থেকেও মুছে দিতে হবে?হাত কাটা রুখতে পারি নি বলে পা কাটারও সুযোগ দেবো? কারো শরীরে অনুভূতি না থাকলে সেটা তার ব্যাপার, আমি কালিমা পড়েছি, দ্বীনের যে কোনো বিষয়ে আঘাত আসলে আমার কলিজায় লাগে! এবার আসল কথায় ফিরে যাই;
ক. ইসলামী শরী’আহ হচ্ছে কোনো বিধান পালন না করলে আপনি গুনাহগার, বেঈমান নন, কিন্তু অস্বীকার করলে বেঈমান।
সংবিধান থেকে সরিয়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে আপনি অস্বীকার করছেন!
খ. বুদ্ধিমানদের কাজ হচ্ছে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া, আপনি কামাল আতার্তুকের তুরস্কের ইতিহাস পড়ুন, বুঝবেন কেনো আমাদের এতো মাথাব্যথা!
গ. প্রধানমন্ত্রী তনয় ও আইটি উপদেষ্টা জয় সাহেবের সে বক্তব্য কি ভুলে গেছেন? তিনি বলেছিলেন “৭৫ পরবর্তি সময়ে মাদ্রাসা শিক্ষার হার বেড়েছে, প্রতি তিনজনের একজন মাদ্রাসা ছাত্র, আমরা এটা পাল্টাতে চাই”
আমাদের আশংকা, তাদের সে মিশন বাস্তবায়নে যেনো সংবিধান কোনো বাধা না হয়, সে জন্যই এই পদক্ষেপ!!
ঘ. রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম না থাকলে রাষ্ট্রের পৃষ্টপোষকতায় কোনো ইসলামী প্রতিষ্ঠান চলতে পারে? একবার ভাবুন তো এর পরিণাম কতো ভয়ঙ্কর?
ঙ. স্কুল সিলেবাসে ধর্ম শিক্ষা কেনো থাকবে? ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এর প্রয়োজনই বা কি? আমার-আপনার সন্তানদের ভবিষ্যত কি একটু ভেবেছেন?
চ. ‘‘ক দেশ এক আইন, একমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা” এই শ্লোগানে যদি মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে আইনি প্রতিবাদের জন্য সাংবিধানিক কোনো পথ কি খোলা থাকবে?
ছ. আযানে শব্দ দোষণ হয়, এই অভিযোগে যদি কোনো অমুসলিম আদালতে রিট করে, কীসের ভিত্তিতে আযানের পক্ষে রায় আসবে?
জ. আলিয়া মাদ্রাসাগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে, ইসলামী শিক্ষার পৃষ্টপোষক সরকার কীসের ভিত্তিতে হবে?
ঝ. বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোরকা, ইসলামী পোষাক নিষিদ্ধ হচ্ছে, আমরা প্রতিবাদ করছি, প্রতিবাদের একটা সাংবিধানিক ভিত্তি আছে, কিন্তু তখন কীসের ভিত্তিতে প্রতিবাদ করবেন?
ঞ. ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিকদের উদ্ভট উক্তিগুলোর প্রতিবাদ কীসের ভিত্তিতে করবেন? সরকার মানুক বা না মানুক, প্রতিবাদের একটা জায়গা তো আছে!
ট. মদের বারগুলোর অনুমোদন সীমিত আকারে, অবাদ হলে প্রতিবাদ কীসের ভিত্তিতে করবেন?
ঠ. ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে মুসলিম দেশগুলোর যে সহানুভূতি পান, সেটা কি অব্যাহত থাকবে? ভুলে গেলে চলবে না, সিডরে আক্রান্তদের সহায়তায় গোটা পৃথিবী থেকে যে সাহায্য এসেছিলো, একজন সৌদীই সমান সাহায্য করেছিলেন, যার পরিমাণ ছিল প্রায় হাজার কোটি টাকা!!
প্রিয় ভাই, এমন হাজার হাজার সমস্যাবলী আলেমদের মাথায় কিলবিল করে বলেই তাদের মাথাব্যথা। জাতিকে নিয়ে তারা না ভাবলে কে ভাববে বলুন? আপনার ভাবার সময় নেই, তাই বলে স্বমর্থনও দেবেন না?
এবার আপনাকে একটা প্রশ্ন করি;
ধরুন আপনার সমস্ত সম্পত্তি কেউ গ্রাস করলো, আপনি অক্ষম প্রতিবাদ করতে পারছেন না, মনে মনে ঘৃণা করছেন, আর প্রতিবাদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, শক্তি সঞ্চয় করছেন, এর মধ্যেই শত্রু আপনার ভিটেমাটিটুকুও কেড়ে নিতে আসছে, তখন কি এই বলে চুপ থাকবেন যে, প্রতিবাদ করে কী হবে? সব তো নিয়েই গেলো, ভিটেটাও নিয়ে নিক, নাকি জীবন দিয়ে হলেও তা রক্ষা করতে চাইবেন?
বন্ধু বুঝুন, এটা অস্তিত্তের লড়াই। এ লড়াইয়ে টিকতে হবে, এ লড়াইয়ে জিততে হবে। প্রস্তুত থাকুন…………..!!!
কৃতজ্ঞতা : হাসান জামিল (খতীব, দাঈ, টিভি আলোচক, সুবক্তা)