ফাহিম বদরুল হাসান ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদরাসা, আলেমদের উপর বর্র্বরোচিত হামলা এবং শহীদ মাসুদের হত্যার প্রতিবাদে আজ (১৩ই জানুয়ারি) সারাদেশে হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিলেও পরে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে কিছু দাবী ও শর্তের প্রেক্ষিতে হরতাল প্রত্যাহার করেছেন উলামায়ে কেরাম। দাবি এবং শর্তগুলো হচ্ছে-
১) বি-বাড়িয়ার ওসি এসপিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২) বি-বাড়িয়ার নাছিরনগর উপজেলার যে দুইটি মাদরাসা বন্ধ করেছিল তা খুলে দিবে আগামী কাল।
৩) শহিদ মাসুদের পরিবারকে নগত ৫০হাজার টাকা আর পরে সরকারের পক্ষ থেকে বড় অংকের ক্ষতিপূরণ দেবে।
৪) শহিদ মাসুদের পরিবারের একজনকে সরকারী চাকরি দেওয়া হবে।
৫) যুবলীগ ছাত্রলীগের সকল অভিযুক্ত লিডারগুলিদের তিনদিনের মধ্যে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
৬) মাদরাসার সব ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
৭) এবং জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা মাদরাসার শিক্ষকগণদের এবং ইউনুছিয়ার ছাত্রদেরকে প্রশাসনের পক্ষ হতে সকল প্রকার নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এখন দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু মানুষ এই “প্রত্যাহার কর্মসূচী”র কারণে আলমগণের আপাদমস্তক গু মাখাচ্ছেন। হুজুররা নাকি পঞ্চাশ হাজার টাকায় লাশ বিক্রি করে দিয়েছে!
এসব সমালোচকের মাঝে একদল আছেন, যারা মূল থেকেই আলেম-বিদ্বেষী। দেখবেন, হুজুররা আন্দোলন করলে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকা- বলে, ঠিক তেমনি আন্দোলন থেকে পিছপা হলে মজা নেয়। ইয়ার্কি করে।
আরেকদল হচ্ছে, স্বার্থান্বেষী দল। তাদের থিওরিই হচ্ছে “তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই”। যে কোনো দল কিংবা প্রাণীর কাঁধে পা দিয়ে হোক, তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করাই একমাত্র অন্বেষা ও আকাঙ্খা।
শেষ একটা দল, যারা ইসলাম এবং মুসলিমদের মুহাব্বাতে, মাদরাসা এবং আলেম-উলামাদের মুহাব্বাতে, ঈমানী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভাইয়ের রক্তের দাবীতে আলেমদের কর্মসূচি প্রত্যাহারে এরকম মন্তব্য করছেন; আপন জযবাকে একটু কন্ট্রোলে রেখে ভাবুন। আশা করি আলেমদের এমন কাজে দালাল, লাশ বিক্রেতা ইত্যাদি গালাগাল করতে পারবেন না।
এই কর্মসূচির বিপরীতে সরকারি এবং ইসলাম বিদ্বেষী একশন কী হতে পারে
১) জঙ্গি কর্মকা-ের অজুহাতে কওমি মাদরাসা ব্যবস্থা বন্ধ। যে প্রচেষ্টা অনেকদিন থেকে করে আসছে। মনে রাখতে হবে, একটি রাজনৈতিক অফিস বন্ধ হলে ছাত্রদের কিছু হয় না, একটি পাঠশালা বন্ধ হলে কত ছাত্রের জীবন শেষ তথা একটি বাতি নিভে গেল।
২) আলেম-উলামাদের গণহারে ধরপাকড় এবং হেফাজতের পাঁচ মে’র মতো হত্যা। আপনার পাশে একটি মিডিয়াও আসবে না। পরে বলবে, রং মেখে শুয়ে ছিল।
৩) জঙ্গি খেলাটা বাংলাদেশে স্থায়ী করে আলেমদেরকে লিস্টেড করে বেড়ি লাগানো। এবং যখন তখন যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া।
৪) পারিবারিকভাবে আলেমদেরকে হেনস্থা করার পথ সুগম হবে। এখনো সমরকন্দের পথে নিয়ে যেতে একদল মুখিয়ে আছে।
৫) দাড়ি, টুপি-পাঞ্জাবি এখন যেটুকু পরা যাচ্ছে, সেটাও আইন করে বন্ধ করার পরিবেশ সৃষ্টি করা। ইসলামি রাজনীতি বন্ধের যে পাঁয়তারা চলছে, তা ত্বরান্বিত হওয়া। গণজাগরণসহ অন্যান্য ইসলাম বিদ্বেষী সংগঠনগুলো যারা ইসলামি রাজনীতি নিষিদ্ধকরণে সর্বদা তৎপর, তারা এবার পুরোদমে নামবে।
আপনি আলেমদের অদূরদর্শিতার সমালোচনা করতেই পারেন কিন্তু, একটু আগ-পিছ ভাবুন। গাদ্দারদের উপর চোখ রাখার পাশাপাশি আহলে হকের উপর আস্থা রাখুন। আল্লহই উত্তম ফায়সালাকারী।
লেখক : ফ্রান্স প্রবাসী।