এহসান বিন মুজাহির ::
গতকাল এবং আজ এখন পর্যন্ত খবর দেখার জন্য আমি কোন টিভি-চ্যানেল-ইলেকট্রনিক মিডিয়া পাড়ায় চোখ রাখিনি। তবে বহু প্রিন্ট ও বহু অনলাইন মিডিয়ায় সার্বক্ষণিক দৃষ্টি ছিলো এবং এখনো আছে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, এখন পর্যন্ত প্রিন্ট তথা জাতীয় কোনো কাগজে গতকালের নৃশংস খুনের, মাদরাসা ছাত্রদের উপর বর্বর হামলা ও নিহত মাসুদুর রহমানের শাহাদতের খবর ছাপা হেয়েছে বলে আমার দৃৃৃৃষ্টিগোচর হয়নি! তবে দায় সারার জন্য দুয়েকটি প্রিন্ট মিডিয়া তাদের অনলাইন ভার্সনে নামে মাত্র খবর ছাপিয়েছে।
গতকাল এবং আজ কোনো কোন টিভি চ্যানেলে-অনলাইন মিডিয়ায় সংঘর্ষের ভিডিও ফুটেজ এবং বর্বর নির্যাতনের নির্মম চিত্র বিশ্ব মিডিয়ায় প্রদর্শন করেছে কিনা তা জানা নেই! একটি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সেক্রেটারির বিবৃতি-নিন্দা-শাস্তি এবং কর্মসূচির হুমুক ছাড়া গতকাল রাতে অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন, ইসলামী দলগুলোর শীর্ষ আলেমদের বিবৃতিও চোখে পড়েনি। তবে রাতে সিলেটে একটি কওমী মাদরাসা ও একটি সংগঠন রাজপথে মিছিল করার দৃশ্য ফেসবুকে দেখি।
তবে আমি গভির মনযোগ দিয়েই সবকটি প্রিন্ট মিডিয়ায় চোখ বুলানোর চেষ্ঠা করেও প্রত্যাশিত খবর পাইনি! কিন্তু স্কুল-কলেজ কিংবা কোন ভার্সিটির কেউ নিহত হলে এতক্ষণে সকল মিডিয়ায় কত মর্মস্পর্শী শিরোনামে ছাত্রের মৃত্যুর’ খবর দেখা যেতো তার কোন ইয়ত্তা নেই! হায়রের দালালমিডিয়া! আফসোস তোদের জন্যও!
দলমতনির্বিশেষে শহীদ মাসুদুর রহমনের খুনীদের ও মাদরাসা বিদ্বেষূদের বিরুদ্ধে কঠিন কর্মষুচির মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের ফাঁসি নিশ্চিতের জন্য আন্দোলনে সবার সর্বোচ্চ আন্তরিক প্রচেষ্ঠঅ জরুরি। সারাদেশে শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশ, প্রয়োজনে হরতালসহ কঠিন কর্মসূচি সময়ের দাবি। যে বা যারাই এর আহব্বন করবে আমাকে সর্বোচ্চ ত্যাগে সবার আগে পাবে- ইনশাআল্লাহ। ইসলামী দলগুলোর সম্মানিত সকল আমীর, কেন্দ্রীয় সভাপতি, আলেম-ওলামাদের এ ব্যপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাত আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে মাদ্রাসাছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিকের মতো আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে মাদ্রাসাছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হাফেজ মাসুদুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত হাফেজ মাসুদুর রহমান ওই মাদরাসার (বড় মাদ্রাসা) শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি নবীনগর উপজেলার সামন্তঘর গ্রামে। সে শহরে থেকেই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। নিহতের ভাই হাফেজ মোহাম্মদ মামুন ও সহপাঠী মুফতি নিয়ামুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, মাসুদের গায়ে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে।
আল্লাহর ঘর মসজিদ ও দ্বীন রক্ষার বলিষ্ট দুর্গ নাসির নগরেরর স্থানীয় একটি কওমী মাদরাসা বন্ধের প্রতিবাদ ও মাদরাসা খোলে দেয়ার দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ মিছিলে সরকারেরর পেঠুয়া বাহিনী পুলিশের বুলেটের আঘাত ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বর্বরর নির্যাতনে ১২ জানয়ারি ভোর ৩টায় বিবাড়িয়ার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইউনুছিয়ার হেদায়াতুন্নাহু জামাতের নিষ্পাপ ছাত্র হাফেজ মাসউদুর রহমান শাহাদতের অমিয় সুধা পান করেন।
ইতিহাসে আবারো রচিত হলো কালো অধ্যায়। এর আগে ১৯৯৯ সালে ঐতিহাসিক ফতোয়া বিরুধী রায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রান দিয়েছিল এই জামিয়া ইউনিসিয়া মাদ্রাসার ছাত্রসহ ৯জন ভাই, ফলশ্রুতিতে ২০০১ সালে আওয়ামী জালিমদের পতন হয়েছিল। এবারও মসজিদ, মাদ্রাসা রক্ষার আন্দোলন এবং শহীদের রক্তঝড়লো এই জামিয়ায়।
Tags শহীদের বদলা নেয়া সময়ের দাবী
এটাও পড়তে পারেন
কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ
খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...