আলেম-ওলামা ও ইমামগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চায়
…প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমান
কমাশিসা ডেস্ক ঢাকা, ১৯ডিসেম্বার ২০১৫: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমান বলেছেন, ইসলামে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। আলেম-ওলামা, ইমাম-খতিবগণ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চায়। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলস্থ ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে আয়োজিত ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) একটি পিঁপড়াকেও মারতে নিষেধ করেছেন। অথচ সন্ত্রাসীরা নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষ হত্যা করছে। ধর্মীয় উপাসনলয়সহ বিভিন্ন স্থানে বোমা মেরে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এদের চিহ্নিত করে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে। তাহলে আর কেউ এধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবে না।’ সন্ত্রাসী হামলাকারীদের চক্রান্ত রুখতে ওলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও করেন তিনি। একই সাথে মসজিদ-মাদরাসায় সরকারি নজরদারি দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দলের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদীস আলামা আশরাফ আলী বলেছেন, উলামায়ে কেরাম আলাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কাজ করবে। সারা দুনিয়া বিরোধী হলেও আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকলে ভয় ও চিন্তার কোনো অবকাশ নেই। তিনি বলেন ধর্মহীন শিক্ষার কারণে মুরতাদ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই প্রতিটি শিক্ষা ব্যবস্থায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যকতামূলক করতে হবে। আর তখনই দেশে কুরআন ও সুন্নাহর সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতারং সোনার বাংলা, সবুজ বাংলা ও ডিজিটাল বাংলা দিয়ে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে না।
আজ সকালে মতিঝিলস্থ ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে আয়োজিত উলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দলের যুগ্নমহাসচিব ও সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের পরিচালনায় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈশা শাহেদী, দলের অভিভাবক পরিষদের সদস্য মুফতী হিফজুর রহমান, জামিআ মুহাম্মদীয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, দলের নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাঈল নুরপুরী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, যুগ্নমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মাওলানা এটি এম হেমায়েত উদ্দীন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর যুগ্নমহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান কাসেমী, মোহাম্মদপুর বায়তুল আমান মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতী মাহমুদুর রহমান, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা কোরবান আলী, মাওলানা আব্দুল আজিজ, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আতাউলাহ আমীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জি এম মেহেরুলাহ, প্রচার প্রকাশনা ও অফিস সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুল হক, নির্বাহী সদস্য মাওলানা মুনিরুল ইসলাম, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূছা, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা নুর উদ্দীন, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মুফতী হাবীবুর রহমান, হবিগঞ্জ জেলার সেক্রেটারী মাওলানা আনোয়ার আলী, বি-বাড়ীয়া জেলা সেক্রেটারী মাওলানা মুঈনুল ইসলাম, নোয়াখালী জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম মামুন, নরসিংদী জেলা সেক্রেটারী মাওলানা ইলিয়াছ শেরপুরী, নারায়নগঞ্জ মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা তাজুল ইসলাম, কুমিলা পশ্চিম জেলা সভাপতি মাওলানা মুহসিন উদ্দীন বেলালী, ঢাকা মহানগর সহসভাপতি মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ ।
দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, জাতীয় বেতন স্কেলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ট বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের অন্তর্ভূক্ত না করে সরকার বৈষম্য তৈরী করেছে অথচ জাতিকে শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সুতরাং নতুন বেতন কাঠামোয় বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের নিঃশর্ত অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার পরিবেশ বিগ্ন ঘটবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। অনেক প্রার্থী অভিযোগ করার পরও কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। মুখে নিরেপক্ষতার কথা বললে নিরপেক্ষ হওয়া যায় না। বাস্তবে এর প্রমাণ দিতে হবে। সম্মেলনে নিম্মোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাব সমূহ- আল্লাহ, রাসূল সা. ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের শাস্তি মৃত্যু দন্ডের বিধান পাশ, সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা বন্ধের আহবান, মসজিদ ও মাদরাসায় পুলিশী নজরদারী বন্ধ, আইন শৃঙখলার চরম অবনতি, দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসন এবং খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আহবান ।