বর্তমানে পুলিশের খাচায় বন্দী কুখ্যাত আব্দুল হক্ব সন্ত্রাসির সাথে হাফিজ মাওলানা আব্দুল হাফিজের কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সে বিষয়ের কোন উল্লেখ নেই…
বিদেশ ডেস্ক ::
গত ২৯ নভেম্বর বার্মিংহামের মিডিয়া পয়েন্টে শাহবাগ জামিয়া মাদানিয়া ক্বাসিমুল উলূম (মাদ্রাসা ও এতিমখানা)-এর উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ক্বারী মাওলানা আব্দুল হাফিজ। তিনি সম্প্রতি একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং সিলেট থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক সংবাদপত্রে শাহবাগ জামিয়ার পরিচালনাধীন এতিমখানা ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট সংবাদ পরিবেশনের তীব্র নিন্দা জানান।
লিখিত বক্তব্যে ক্বারী মাওলানা আব্দুল হাফিজ বলেন- ‘শাহবাগ জামিয়া মাদানিয়া ক্বাসিমূল উলূম এতিমখানা ও মাদ্রাসা বাংলাদেশের পূর্বপ্রান্তে, সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শাহবাগ নামক প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। এটি একটি দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই কওমি মাদ্রাসায় ইসলামিক কিল্ডারগার্টেন, ক্বিরাআত, হিফজ এবং পৃথক বালিকা শাখাসহ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর তাকমিল ফিল হাদীস পর্যন্ত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রয়েছে।’ আর্তমানবতার সেবায় মাদ্রাসার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মাওলানা আব্দুল হাফিজ বলেন- জামিয়া দ্বীনী শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি গরীব, দুঃস্থ মানুষের সেবায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা এতিম শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষার সুযোগ প্রদান এবং প্রতিপালনের জন্য স্বতন্ত্র এতিমখানা পরিচালনা করে থাকি। এ এতিমখানাটি বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক নিবন্ধিত। নিবন্ধন নং- সিল-১১১৭/১০।’
তিনি আরো বলেন- ‘দ্বীনের বহুমূখী খেদমত আঞ্জাম দিতে বিগত কয়েক বছরে একাধিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। দারুল ক্বিরাআতের জন্য তিনতলা বিশিষ্ট ভবন, এতিমখানার জন্য তিনতলা বিশিষ্ট ভবন ও মসজিদ, বালিকা শাখার জন্য তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাাণ করা হয়। এগুলোর মধ্যে এতিমখানার ভবন ও মসজিদ এখনো নির্মানাধীন। এতিমখানায় প্রতি বছরই শিশুদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে দ্রুত এ ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি এতিমখানার কয়েকশ’ শিশুসহ প্রায় চৌদ্দশ’ ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়ার সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত শাহবাগ জামিয়া ক্বাসিমূল উলূমের দৈনন্দিন খরচ পরিচালনার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এগুলো যোগাড় করতে মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষকে সবসময়ই হিমশিম খেতে হয়।’
এতিমখানার ভবন সম্প্রসারণ ও নির্মানাধীন মসজিদের কাজ সমাপ্ত করতে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মাওলানা আব্দুল হাফিজ আরো বলেন- ‘ধর্মপ্রাণ ও শিক্ষানুরাগী সাধারণ মানুষের আর্থিক অনুদানেই শাহবাগ জামিয়াসহ বাংলাদেশের সকল কওমি মাদ্রাসা পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনদের আর্থিক অনুদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে থাকে। প্রতি বছর যুক্তরাজ্য প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করে থাকেন বাংলাদেশের গরীব, দুঃস্থ এবং এতিম শিশুদের লেখাপড়ার জন্য। এজন্য শাহবাগ জামিয়া যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি শাহবাগ এতিমখানার বর্তমান প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছি।’
মাদ্রাসা পরিচালনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন জামিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাফিজ বলেন- ‘শাহবাগ জামিয়া অত্যন্ত সততা ও স্বচ্ছতার সাথে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে থাকে। শাহবাগ জামিয়া যুক্তরাজ্যে চ্যারিটি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত। এতিমখানা ও মাদ্রাসার জন্য যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত আর্থিক অনুদান ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে। আমরা প্রতিবছরই চ্যারিটি কমিশনে রিপোর্ট প্রদান করে থাকি। এছাড়াও বাংলাদেশে প্রতিবছর স্বনামধন্য অডিটর কর্তৃক মাদ্রাসার আয়-ব্যয়সহ সকল হিসাব অডিট করা হয়ে থাকে।’ সম্প্রতি সিলেটের স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে শাহবাগ জামিয়ার পরিচালনাধীন এতিমখানার বিরুদ্ধে প্রকাশিত মিথ্যা, বানোয়াট সংবাদ প্রচারে ক্ষোভ প্রকাশ করে কুচক্রী মহলের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারের নিন্দা জানান তিনি। তিনি বলেন ‘এসব অসত্য ও বানোয়াট অপপ্রচারের একমাত্র উদ্দেশ্য দ্বীনী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করা এবং গরীব ও দুঃস্থ মানুষের কল্যাণকাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করা।’ তিনি তাদেরকে বিভ্রান্তিমূলক অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান।