জিয়া রাহমান ::
আজ শুক্রবার৷ এমন এক বাতিলের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল আজ আমাদের, এই যুগে যাদের অস্তিত্ব সম্পর্কেই অনেকে সন্দেহ করবেন৷ “এনকারে হাদীস” সম্পর্কে আমরা দারসী কিতাবে জেনেছি, “হুজ্জিয়াতে হাদীসে”র আলোচনা পরীক্ষায় আসবে বলে মুতালা’আ করেছি৷ এত গুরুত্ব দিয়ে পড়ি নি এজন্যে যে, এযুগে কী আর এদের অস্তিত্ব আছে? থাকলেও লিবিয়া বা তার আশপাশের এলাকায় থাকবে হয়ত, কারণ লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুআম্মার গাদ্দাফী মুনকিরে হাদীস (হাদীস অস্বীকারকারী) ছিলো৷ কিন্তু বাংলাদেশেও যে এরা তৎপর হয়ে পড়বে, কিছু লোক এদের ফাঁদে পা’ দিয়ে নিজেদের মহা-মূল্যবান ঈমান জলাঞ্জলি দিয়ে বসবে, এমনটা কল্পনায়ও আসে নি৷ আসার কথাও নয়৷
যাক আজ শুক্রবার ইশার পর তাদের সঙ্গে আমরা ক’জন মাওলানা Numanulhaque Chowdhury , মাওলানা আব্দুল্লাহ মায়মূন , মাওলানা মুফতি Mmh Saleh Ahmed , বিশিষ্ট দাঈ ইলাল্লাহ Mamunur Rashid Kajol এবং আমি অধমের বসার কথা ছিল৷ একরকম মুনাযারার আদলেই বসার আয়োজন ছিল৷ প্রশাসনের লোকও থাকত৷ জীবনে কখনো মুনাযারা তথা প্রতিপক্ষের সঙ্গে মুখোমুখি দলীলভিত্তিক বিতর্কে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা না থাকলেও রাসূলের হাদীসের উপর হামলা প্রতিহত করবার নেক নিয়তে, রাসূলের হাদীসের মর্যাদা রক্ষার নিমিত্তে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে তাদের সঙ্গে উন্মুক্ত বিতর্কের ডাক দিয়েছি৷ আমরা তাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলাম, তাদের দাবি যদি তারা প্রমাণ করে দিতে পারে, তাহলে আমরা তাদের কথা মেনে নেবো৷ আর যদি প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে তারা রাসূলের হাদীস মেনে তাওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসতে হবে৷
প্রথমে তারা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলেছে, “কত মোল্লার সঙ্গে কথা বলেছি, কেউ আমাদের সঙ্গে পারে নি৷ এদের (আমাদের) সাথে বসতেও কোনো অসুবিধা নেই”৷ কিন্তু যখন সময় ঘনিয়ে এলো, যার মাধ্যমে এই আয়োজন, তার ফোনই তারা রিসিভ করে না৷ অন্যের মাধ্যমে বলে দেয়, তাদের বসার জায়গা নেই৷ আমরা বললাম, আমরাই বসার জায়গা ঠিক করব৷ এরপরও নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তারা বসতে রাজি না৷
২০১৫ সালের ভেতর বিশ হাজার সদস্য কোটা পূর্ণ করার লক্ষে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে তারা৷ টার্গেটের খুব কাছাকাছিও নাকি তারা চলে গেছে৷ সমাজের একশ্রেণীর মানুষের ঈমান লুটেপুটে খাচ্ছে মুনকিরীনে হাদীসের (হাদীস অস্বীকারকারীর) ওই ভ্রান্ত দল৷ শুধু ঈমান লুটে খাচ্ছে যে, তা নয়; সদস্য বানিয়ে যাকাতের নামে প্রত্যেকের কাছ থেকে নগদ অর্থও হাতিয়ে নিচ্ছে তারা৷ এই টাকা দিয়ে তারা বাসা ভাড়া করে থাকছে এবং মানুষকে হাদীস অস্বীকারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করছে৷ যাকাতের নামে সদস্যদের কাছ থেকে টাকা তুলে বাতিলের জন্যে সবচে প্রতিকূল জায়গা সিলেটের মাটিতে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছে৷
তারা প্রাথমিক পর্যায়ে গরীব এবং তুলনামূলক কম শিক্ষিতদের টার্গেট করে করে তাদের দলে ভিড়াচ্ছে৷ যাকাতের নামে সবার কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিচ্ছে৷ তাদেরকে বোঝাচ্ছে, ধনী-গরীব সবাইকে যাকাত দিতে হয়৷ এভাবেই দেশব্যাপী তাদের ডালপালা বিস্তার লাভ করছে৷ দ্রুতবেগে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে৷
যার মধ্যে তারা দ্বীনের ছিটেফোঁটাও দেখতে পায় না, এমন লোককে তারা টার্গেট করে তাদের দলে ভিড়ায়৷ প্রথমেই তাকে আলিম-উলামার প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে, অনাস্থার সৃষ্টি করে; যাতে আলিম-উলামার কাছে কেউ না যায়, তাঁদের কথা কেউ বিশ্বাস না করে৷ এরপরই তাদের ঈমানবিধ্বংসী কথাগুলো গলাধঃকরণ করায়৷
এই পোস্ট লেখার উদ্দেশ্য সবাইকে সচেতন করা৷ বিশেষ করে জেনারেল শিক্ষিত, কলেজ-ভার্সিটি পড়ুয়া ভাইদের নিকট আরয, আপনারা এরকম ফিতনা আঁচ করলে আপনারা আলিম-উলামার দারস্থ হবেন৷ কাউকে এরকম ফিতনায় পতিত হতে দেখলে তাকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করবেন৷ আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যারা চিনেন, আমার কাছেও নিয়ে আসতে পারেন৷ বা পোস্টে যাঁদের নাম ট্যাগ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷ হাদীস অস্বীকারের এই ফিতনা মোকাবেলার জন্যে তাঁদের প্রত্যেকেই একেকজন শার্দূল৷ আল্লাহ আমাদের কবুল করুন৷
দুআ করি মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহ আমাদের ঈমান-আকীদার হেফাজত করুন৷
আগামী পোস্টে তাদের ঈমানবিধ্বংসী ভ্রান্ত আকীদাসমূহের পোস্টমর্টেম পেশ করব ইনশাআল্লাহ!