সাইফুল ইসলাম শিপু ::
২০১০-২০১১ সালে আরবের বিভিন্ন দেশে যে গণজাগরণ হয়েছিল, তাকে মিডিয়াতে বলা হয়েছিল ‘আরব বসন্ত’। বিশেষ করে, বাহ্যিক দৃষ্টিতে, তিউনিসিয়া ও মিশরে দীর্ঘদিন যাবত ক্ষমতায় থাকা শাসকদের পতন ঘটাতে পারাকে অনেক বড় সাফল্য হিসেবে দেখানো হয়েছে। দু’টি দেশেই সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও ব্লগের ব্যবহার সারা বিশ্বে আলোচিত হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মের একটা বিশাল দল সরকার বিরোধী আন্দোলনে জনগণকে সংগঠিত করতে এসব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল। এসব কী হঠাৎ করে হয়েছিল? না, হঠাৎ করে হয়নি। আরবের বিভিন্ন দেশের যুবকদের কিছু টিমকে কয়েক বছর ধরে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। কারা দিয়েছিল প্রশিক্ষণ?
প্রফেসর তারিক রামাদান তার Islam and the Arab Awakening বইতে লিখেছেন, সার্বিয়ার Centre for Applied Nonviolent Action and Strategies (CANVAS) –এ মিশর ও তিউনিসিয়ার কিছু টিমকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল কিভাবে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আন্দোলন সংগঠিত করা যায়। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল আমেরিকা সরকারের অর্থায়নকৃত কিছু এনজিও; যেমন – Albert Einstein Institution, Freedom House, International Republican Institute। সবচেয়ে চমক লাগানো বিষয় হচ্ছে, গুগল, ইয়াহু এবং টুইটারের মত প্রতিষ্ঠান মিশর, সিরিয়া ও তিউনিসিয়ার অনলাইন এক্টিভিস্টদের সরাসরি প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। গুগল মিশর ও তিউনিসিয়ার অনলাইন এক্টিভিস্টদের স্যাটেলাইট এক্সেস পর্যন্ত দিয়েছিল। তবে সিরিয়ান অনলাইন এক্টিভিস্টদের স্যাটেলাইট এক্সেস দিতে রাজী হয়নি গুগল। কারণ আমেরিকার একটা ভয় ছিল, সিরিয়ায় যদি বাশার আল আসাদকে হটিয়ে নির্বাচন দেয়া হয়, তাহলে নির্বাচন করে বাশার আবার ক্ষমতায় চলে আসতে পারে।
Reference:
Ramadan, Tariq (2012). Islam and the Arab Awakening. New York: Oxford University Press, pp. 10 – 13