জাবের আল-মামুন::
বাদশাহ আবরাহার সেনাবাহিনী যখন কাবা ঘর ধ্বংসের জন্য অগ্রসর হয়েছিল তখন আল্লাহ তায়ালা সামান্য ছোট্ট পাখির মুখের কংকর দ্বারা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তাদের দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো এমনভাবে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল, যেমন পশু কর্তৃক চিবানোর পর ঘাসের অবস্থা হয়। (দেখুন>সূরা ফিল/১-৫)
লুত আলাইহিস সালামের কওমকে অবাধ্যতা ও সমকামিতার মত নির্লজ্জতার শাস্তিস্বরূপ আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তাদের জনপদসমূহ উল্টে দেন। মৃত সাগর আজও তার স্পষ্ট প্রমাণ।
(দেখুন>সূরা আন-নাজম/৫৩)
নূহ আলাইহিস সালাম সাড়ে নয়শ’ বছর তাবলীগ করার পরেও যখন কওমের অধিকাংশ লোকেরাই তাঁকে মিথ্যাজ্ঞান করল এবং তিনি অনুভব করলেন যে, এদের ঈমান আনার কোন আশা নেই, তখন আল্লাহর নিকট দু’আ করে বললেন,
(فَدَعَا رَبَّهُ اَنِّيْ مَغْلُوْبٌ فَانْتَصِرْ)
“হে আল্লাহ আমি অসহায়, তুমি আমার প্রতিশোধ নাও। (সূরা ক্বামার ৫৪:১০ আয়াত)
সুতরাং আল্লাহ তায়ালা নূহ (আঃ)-এর দু’আ কবুল করলেন এবং তাঁর কওমকে তুফান ও প্লাবন দিয়ে ধ্বংস করে দিলেন।
ফেরাউন গোষ্ঠী বনী ইসরাইল তথা মূসা আলাইহিস্ সালামের সম্প্রদায়ের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করতো আর নারীদেরকে জীবিত রেখে মর্মান্তিক যাতনা দিত। আল্লাহ তায়ালা তাদের এই অবাধ্যতার দরুন সাগরকে দুইভাগে বিভক্ত করে ফেরাউন গোষ্ঠীকে সদলবলে নিমজ্জিত করেছিলেন।
(দেখুন>সূরা বনী ইসরাইল /৪৯,৫০)
অত্যাচারী, মূর্খ কাফের বাদশাহ নমরূদ নিজেকে খোদা বলে দাবী করেছিল। আল্লাহ তায়ালা এই ঔদ্ধত্যের জন্য ক্ষুদ্র মশার দ্বারা নমরূদ ও তার বাহিনীকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। মহান আল্লাহর এই সেনাবাহিনী নমরূদ ও তার বাহিনীর রক্ত তো পান করেই এমনকি তাদের মাংস পর্যন্ত খেয়ে নেয়। ঐ মশাগুলোরই একটা নমরূদের নাকের ভিতর দিয়ে প্রবেশ করে এবং চারশো বছর পর্যন্ত মস্তিষ্ক চাটতে থাকে। এমন কঠিন শাস্তির মধ্যে পাপাত্মা নমরূদ পড়ে থাকে যে এরচেয়ে মৃত্যু হাজার গুণে উত্তম ছিল। সে পাথরে ও দেয়ালে মাথা ঠুকে ঠুকে ফিরছিল এবং হাতুড়ি দ্বারা মাথায় আঘাত করিয়ে নিচ্ছিল। এইভাবে এই পাপিষ্ঠের জীবনাবসান হয়। (তফসীরে ইবনে কাসীর)
এতক্ষণ যে বিষয়গুলির অবতারণা করা হল তা আল্লাহ তায়ালার সরাসরি শাস্তির কিছু নমুনা। মানুষ যখন চরমভাবে আল্লাহর অবাধ্য হয়ে যায় তখন আল্লাহ তায়ালা ডাইরেক্ট এ্যাকশনে যান। আর আল্লাহ তায়ালার ডাইরেক্ট এ্যাকশনের নমুনা এমনই হয়ে থাকে। অতীতের মত বর্তমানেও পাপিষ্ঠ কাফের লিডারদের উপর আল্লাহর ডাইরেক্ট এ্যাকশন এখন অনেকটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। বর্তমানে যেভাবে তারা মুসলিম নারী, শিশু নির্বিশেষে তাদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তাতে ইনশাআল্লাহ সেদিন আর দুরে নয় যখন তাদের উপর আল্লাহ তায়ালার আজাব-গজব এমনভাবে নেমে আসবে যে তাদের রক্ত, গোশত, হাড়-হাড্ডি পৃথক করার হয়তো আর কোন উপায় থাকবেনা। হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দাদের এরূপ অবস্থার জন্য যারা যারা দায়ী তাদের একটাকেও ছেড়ে দিওনা। আমিন।