কাতারের নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্যই আরব রাষ্ট্রগুলো পাঁচ মাস ধরে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির আমির।
মার্কিন টেলিভিশন ‘সিবিএস’কে দেয়া সাক্ষাৎকারে কাতার আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে সৌদি নেতৃত্বাধীন চার দেশ কাতারের নেতৃত্বের পরিবর্তনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাস বলছে তারা এর আগেও একই প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ১৯৯৬ সালে আমার বাবা আমির হওয়ার পরে তারা এই কাজটি করার চেষ্টা করেছিল।’
শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এই সাক্ষাৎকারটি রবিবার চ্যানেলটিতে সম্প্রচার করা হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে গত ৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইন কাতারের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং স্থল, সমুদ্র ও আকাশ পথে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে দোহা এই অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে।
শেখ তামিম বলেন, ‘তারা আমাদের স্বাধীনতা পছন্দ করে না, বিশেষকরে এই অঞ্চলের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, আমাদের চিন্তা-ভাবনাকে তারা অপছন্দ করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের জনগণের জন্য বাকস্বাধীনতা চাই এবং তারা এতে খুশি নন। তারা মনে করে এটি তাদের জন্য হুমকিস্বরূপ।’
গত মে মাসে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সম্মেলন শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পর এই কূটনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়।
ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ৫৫টি আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উভয় কাতারি আমির ও দেশটির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
তাদের অবরোধ আরোপকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে শেখ তামিম বলেন, ‘ওই সম্মেলনে আমরা সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। এতে কোনো দেশই আমাদের নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি এবং কেউ আমাকে এ বিষয়ে কিছু বলেও নি।’
চলমান এই সঙ্কটের অবসান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই এর অবসান চাই। আমি সবসময় বলে আসছি যদি তারা আমার দিকে এক মিটার অগ্রসর হয়, আমি তাদের প্রতি ১০ হাজার মাইল হাঁটতে ইচ্ছুক।’
৩৩ বছর বয়সে শেখ তামিম কাতারের আমির নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তার বাবা শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি ছেলের কাছে তার ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
শেখ হামাদ বিন খলিফা আল থানি ১৯৯৫ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন, ওই সময় তার বাবা বিদেশ সফরে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যান এবং পরবর্তী বছরগুলোতে কাতারের বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসের সহায়তায় দেশটির অর্থনীতিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
সূত্র: আল জাজিরা