সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আলেমদের বলেছিলেন, কওমি মাদরাসার সনদের সরকারি স্বীকৃতি আপনাদের মতো করে হবে, আপনারা যেভাবে চান সেভাবে। কারিকুলাম আপনারা তৈরি করবেন। সবোর্চ্চ কমিটিতে আপনাদের লোকজন থাকবে। সিলেবাস, অথিরটি, রূপরেখা আলেমরাই তৈরি করবেন তাদের মতো করে। সরকার কোনরূপ হস্তক্ষেপ করবে না। আপনারা যেভাবে চান সেভাবেই হবে। স্বীকৃতি নিয়ে পুরানো নাটকীয়তার কথা বাদ দিলাম। রাষ্ট্রীয় ঘোষণার পর কয়েক মাস অতিবাহিত হতে চললেও আজ স্বীকৃতি কোন পথে? ভবিষ্যৎ কোন দিকে?
এখন যেসব প্রশ্ন সামনে আসছে-
প্রধানমন্ত্রী কি তার ঘোষণা থেকে সরে দাঁড়িয়েছন? নাকি বাধ্য হয়ে শামিম আফজাল সাহেবদের দিয়ে কাজ করাতে যাচ্ছেন?
এখন কারিকুলাম তদারকির জন্য অকওমি শিক্ষাবিদদের দিয়ে নতুন কমিটি কিসের? এতে আলেমরা নেই কেন?
কেন ৬ মাসে আলেমরা কোন সমন্বিত সিলেবাস বা রূপরেখা সংসদ ও মন্ত্রীপরিষদে পাশ করানোর জন্য নিজেদের মতো করে জমা দিতে পারলেন না?
কেন একটি পরীক্ষা ছাড়া কোন কাজ হাইয়াতুল উলিয়া করতে পারল না? কেন একটি সফল সিদ্ধান্তমূলক সম্মিলিত বৈঠক করতে পারলেন না?
স্বীকৃতির কাজের অন্যতম দুই রূপকার, সরকারের আস্থাভাজন কর্ণধার কওমির দুই আলেম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ ও মুফতি রুহুল আমিন অভ্যন্তরীণ কোন দ্বন্ধে ঠিকতে না পেরে দূরে সরে গেলেন?
কারা হাইয়াতুল উলিয়ার বৈঠকে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার থেকে স্বীকৃতি নিতে বিরোধীতা করেছেন। তাহলে প্রধানমন্ত্রী আর জাতিকে ধোকা দিতে কেন সেদিন গণভবনে গিয়ে কুরমা পোলাও খেয়েছিলেন। টিভি ক্যামেরার সামনে সাগ্রহে চেহারা প্রদর্শন করেছিলেন?
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বীকৃতি ঘোষণার পর থেকে কালক্ষেপনের নাটক কেন? কেনইবা স্বীকিতির নামে জাতির সাথে প্রতারণা?
শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফির নাম ভাঙ্গিয়ে আবার জামাত বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হচ্ছেনা তো?
গত ৬ মাসে কোন সরকারকে সহযোগিতা হল না কেন? কাদের স্বার্থে? কোন্ সে ষড়যন্ত্রের জালে আটকা পড়লেন দেশের শীর্ষ কর্ণধার আলেমগণ?
কাজ যদি নাইবা করেন, তাহলে কেন শুধু শুধু পরীক্ষা নিলেন?
কেনইবা ৫মাস পরে এসে সরকারের পক্ষ থেকে চাপ আসার পর দিশাহারা হয়ে লিয়াজো কমিটিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত আস্থাভাজন মাওলানা মাজহারুল ইসলামকে আনা হল? প্রথমেই তাকে রাখা হল না কেন?
সরকার বাধ্য হয়ে স্বীকৃতির কাজের জন্য পূর্বের কথা থেকে ফিরে এসে সরকারের পক্ষ থেকে কওমি শিক্ষা কারিকুলাম ও আইনী কাঠামো তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র ৬ সদস্যসহ ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হল। সে কমিটির সূচনাতেই কেন সরকারে ঘনিষ্ট কওমির আলেমদের থাকা নিয়ে আপত্তি দেয়া হল?
সর্বশেষ কারিকুলাম ও আইনী কাঠামো তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র ৬ সদস্যের বাইরে আরো তিনজন কওমি আলেমদের রাখতে বাঁধা ছিল কোথায়?
সর্বশেষ অপশন আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ নতুবা ইফা ডিজি শামিম আফজাল থাকার কথা বলা হলে আলেমরা শামিম আফজালকে বেঁছে নিলেন কেন?
বেফাক ও হাটহাজারী কীভাবে বা কেন এটা মেনে নিল? আরজাবাদ সম্মেলনের হুঙ্কার আজ থেমে গেছে কেন?
এই ৯ জন কি বেফাক ও হাটাজারীর কাছে এতো বেশি আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত?
কেন হাইয়াতুল উলইয়ার নামে মুফতি নুরুল আমিন ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সাহেব শামিম আফজালের সাথে অন্যদের না জানিয়ে আহমদ সফি দা.বা’র নাম ভাঙ্গিয়ে গোপন বৈঠক করে একমতে পৌছলেন? কেন এই লুকোচুরি খেলা? বেফাক মহাসচিব হাইয়াতুল উলইয়া বা আল্লামা আহমদ শফি দা.বা.‘র সিদ্ধান্তের বাইরে শামিম আফজালের সাথে দীর্ঘ বৈঠক করলেন?
শুধু কওমির ৯জন আলেমদের নিয়ে কওমি কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব বেফাক মেনে নিতে পারেনি। তবে কি সেদিন বেফাকেরর গোপন ইচ্ছা এটাই ছিল যে, কওমির নেসাবের নিয়ন্ত্রণ অকওমির হাতে তোলে দেয়া?
সর্বশেষ গত দু’দিন আগে বেফাক মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আনুষ্টানিক বৈঠক- সেটা তাঁর ব্যক্তিগত না বেফাক, হাইআতুল উলইয়া ও আল্লামা শাহ আহমদ শফি দা.বা.’রর অনুমোদনক্রমে হয়েছিল?
কেন সব আলেমদের আঁধারে রেখে, সবাইকে ডিঙ্গিয়ে এককভাবে মুফতি নুরুল আমিন ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ( তাঁরা সম্পর্কে শালা দুলাভাই) সাহেবের হাতে বেফাক, স্বীকৃতি, হাইয়াতুল উলইয়া? কওমির হাজার বছরের ঐতিহ্য নষ্ট হলে এর দায় কী তারা নিবেন?
প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চায় ১৪লক্ষ কওমির সন্তান!
জানিনা, আমাদের ভাগ্যে কী আছে। নিজেদের লোকদের দালাল দালাল বলে স্বীকৃতির কাজ থেকে দূরে রেখে এখন ইফা ডিজি গংদের কওমি গাড়ির ড্রাইবারে আসনে বসানো হল।
আল্লাহ তুমি হেফাজত কর। সমরকন্দ, বোখারা কিংবা রোহিঙ্গাদের মতো আমাদের অনৈক্যের কারণে আমাদেরকে তুমি লাঞ্চিত ও অপমানিত করো না।
উৎস. কওমিকণ্ঠ ডটকম