মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ রাত ১১:৪৮
Home / কওমি অঙ্গন / ১৬ জন ছাত্রের জীবনকে কেন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হলো? তাহলে কি থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে!

১৬ জন ছাত্রের জীবনকে কেন অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া হলো? তাহলে কি থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে!

কমাশিসা বিশেষ নিউজ: সারা বাংলাদেশ ব্যাপী বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মাধ্যমে ‘আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশ’র এর ব্যানারে একক প্রশ্নপত্র একক বোর্ডের অধীনে অভাভনীয় ঐক্যের মাধ্যমে যেখানে পরীক্ষা শুরু হয়েছে সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানের ১৬জন ছাত্রকে কেন আটকিয়ে দেয়া হলো আমরা বুঝিনা। তাদের কাছহতে ৬০০ শত টাকা করে ফিস নেয়া হয়েছে। বেফাকের অধীনে হবিগঞ্জ উমেদনগর এর আগেও পরীক্ষা দিয়েছিলো। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে এবারও তারা অংশ নেয়ার কথা। কিন্তু কোন অদৃশ্য সুঁতোর টানে তারা আটকে যায়? কওমি বোর্ডের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত হলো যে, প্রতিটি জেলায় একটি করে সেন্টার দেয়া হবে। অথবা যে প্রতিষ্ঠানে টাইটেলের ছাত্র হবে ৫০ এর অধিক। সে অনুযায়ী হবিগঞ্জে একটি সেন্টার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মহিলা ছাত্রী থাকায় তাদের জন্য আলাাদা আয়োজন করার নিমিত্তে উমেদনগর হবিগঞ্জী সাহেবের তত্ত্বাবধানে একটি মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা হওয়ার কারণে সেখানে দেয়া হয় মহিলা সেন্টার। আর পুরুষ সেন্টারটি দেয়া হয় চুনারুঘাট শামছুল উলুম মাদরাসায়। আল্লামা তফজ্জুল হক্ব সাহেব বিদেশ সফরে ছিলেন। এসে দেখলেন যে তিনির মাদ্রাসায় পুরুষ সেন্টার দেয়া হয়নি। এই অজুহাতে ছাত্রদের বতাকা আটকিয়ে দিয়েছেন। তারা হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছে তারপরও তিনির মন গলেনি। আমাদের প্রশ্ন হলো একজন বুজুর্গ দীনের দায়ী সম্মানী মানুষ হয়ে তিনি এই কাজটা করলেন কিভাবে? তাদের কাছহতে ফিস কেন নিলেন তাহলে? নিছক নিজের পছন্দমত না হওয়ার কারণে ছাত্রদের কপালে কুড়াল মারা হলো! জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ এভাবে ছাত্রদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার বৈধতা তারা পেলেন কোথায় তা বিরাট একটি প্রশ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে।

গোটা দেশের আলেম উলামাগণ যেখানে ঐক্যবদ্ধ সেখানে একজন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের উপর এমন হয়রানি মূলক আচরণ কখনো কাম্য ছিলোনা। আমরা সবসময় দেখেছি যখনই ঐক্যের কোন ডাক আসে সুযোগ আসে, পথ বেরুয় তখন এভাবে এক দুজন ঐক্যের বিরুদ্ধে পিঠে ছুরি মারতে কৌশলি হয়ে উঠেন।  আমাদের প্রশ্ন হলো যে, সরকার স্বীকৃত বোর্ডে যদি অংশগ্রহন অনুচিত ভাবেন তাহলে মহিলা শাখার সেন্টার কেন গ্রহন করলেন? পুরুষ শাখার ১৬জন থেকে ৬০০ টাকা করে ফিস কেন নিলেন? ছাত্রদের জন্য বিকল্প কোন প্রকার আয়োজন ছাড়াই এভাবে দায়ীত্ব জ্ঞানহীন কাজ কতটুকু জায়েজ তা এখন খতিয়ে দেখার সময়। আমাদের পরহেজগারী দীয়ানতদারী কি বলে এভাবে নীতিহীন কাজের আসকারা দেয়া? শুনা যায় বতাকা তিনির হাতে এনে রেখে দিয়েছেন। স্বাক্ষর করবেন না। কেন করবেন না? যেহেতু পুরুষ সেন্টার তিনির মাদরাসায় দেয়া হলোনা? এটা কোন ধরনের চাহাত? তাই আমরা বলি যে ব্যক্তি যখন লাগামহীন বাধাহীন ক্ষমতার মালিক হয় তখন এভাবে উদ্ভট কাজগুলো তারা করে বসেন। অতএব আর মনোপলিজম নয়। মনে যাচ্ছে তা নয়। দেশও উম্মাহর স্বার্থে ঐক্যের প্রয়োজনে এসব বৈষম্য মূলক কাজের অবসান হওয়া উচিত। শুনা গেছে সিলেটের সোবহানিঘাটের আরেকটি মাদরাসারও নাকি সমান অবস্থা। তবে তারা অন্যত্র পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ গ্রহন করায় মোটামুটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন তো থেকেই যায় কেন তিনি এমন করবেন? শিক্ষাকে কেন পকেটের তাবিজ করে রাখবেন। যাকে ইচ্ছা তাকে দিবেন ! যাকে পছন্দ নয় তাকে দিবেন না? আপনার আমার নাফসানিয়াতকে কেন অন্যের উপর চাপিয়ে দিবো? তাই আমরা বলি প্রতিষ্ঠানকে কারো ইচ্ছার দাস বানানো যাবে না।

কওমি কন্ঠের একটি রিপোর্ট:

তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর মাদরাসার ১৬জন পরীক্ষার্থীর কেউই দাওরা পরীক্ষা দিচ্ছেন না

কওমিকণ্ঠ মে ১৬, ২০১৭ কওমি নিউজ।

স্টাফ রিপোর্টার :: হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ মাদরাসা জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগর। মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানীর খলীফা মাওলানা মিসবাহুজ্জামান রাহ.’র হাতে ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ মাদরাসা। বর্তমানে মাদরাসাটির মুহতামিমের দায়িত্বে আছেন মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী

এবছর অভিন্ন প্রশ্নে একসাথে বাংলাদেশের সকল কওমি মাদরাসার ছাত্ররা সরকার স্বীকৃত আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতুল কওমিয়া বাংলাদেশে পরিক্ষা দিলেও হবিগঞ্জের প্রসিদ্ধ মাদরাসা জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া উমেদনগ এতে অংশগ্রহণ করছে না। জানা যায়, হবিগন্জেরর জামেয়া ইসলামিয়া উমেদ নগর টাইটেল মাদররসার দাওরায়ে হাদীস (মাস্টাস) পরিক্ষা গত কয়েক বছর ধরে কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের অধীনে হয়ে আসছে আসছে। এবছরও সদ্য ঘোষিত মাস্টার্স সমমানের দাওরায়ে হাদীসের উমেদনগর মাদরাসার ১৬জন ছাত্রের নিবন্ধনসহ পরিক্ষার ফিসও জমা দেয়া হয় বেফাকে।

এদিকে গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় গণভবনে দেশের শীর্ষ আলেম-উলামাদের এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেফাকসহ দেশের ৬টি শিক্ষাবোর্ডকে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসকে মাস্টার্সের মান ঘোষণা করে কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করেন। পরে ৬টি বোর্ডের সমন্বয়ে হাটহাজারী মাদরাসায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে “আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া” নামে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপনের আলোকে ছাত্রদের নিবন্ধন করে।

এতে বেফাকভুক্ত মাদরাসাগুলো তাদের মাধ্যমেই রেজিস্টেশন করে প্রবেশপত্র প্রেরণ করে। আর এতেই দেখা দেয় বিপত্তি।

সূত্র জানায়, কর্তৃপক্ষ জামিয়া উমেদনগরকে কেন্দ্র না করা এবং চাহিদামত পদ না পাওয়াসহ আঞ্চলিক কিছু মতভেদের কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে মাদরাসার প্রিন্সিপার জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্ত্রীয় সহ-সভাপতি, বিএনপি নেতৃত্ত্বাধীন ২০দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী কওমিকণ্ঠকে বলেন, খতমে বুখারীর পর ছাত্ররা সাবাই বাড়ি চলে গেছে। তারা পরীক্ষার জন্য আর আসেনি। আমরা বেফাকভুক্ত নই।

জানা যায়, ছাত্ররা বার বার যোগাযোগ এবং অনুরোধ করেও প্রবেশপত্র পেতে ব্যর্থ হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র জানান, আমরা মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মাসরুরুল হকের পায়ে ধরে প্রবেশপত্র দিতে অনুরোধ করি কিন্তু তিনি রাজি হননি।

আব্দুর রহমান এক ছাত্রের অভিভাবক ওই প্রতিবেদককে বলেন, দাওরায়ে হাদিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় ছাত্রদের প্রবেশপত্র আটকে রেখে পরীক্ষা দিতে না দেয়া বড় ধরনের অন্যায়। রাজনীতির স্বার্থে ছেলেদের জীবন নিয়ে এমনটা কাম্য নয়।

তিনি বলেন, যেখানে আল্লামা আহমদ শফিসহ দেশের সকল আলেম স্বীকৃতির ব্যাপারে একমত, তখন এমন আচরণ আল্লামা আহমদ শফি ও সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল।

সূত্র জানায়, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মাদরাসার ৭ শিক্ষক ১৫ মে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র কেন্দ্র চুনারুঘাট শামসুল উলুম মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায় জেলার ৮৮জন পরিক্ষার্থীর মাঝে ৬৬জন পরীক্ষা দিলেও উমেদনগর মাদরাসার ১৬ জন পরীক্ষার্থীর কেউ নেই।

কেন্দ্র নাযিম মাওলানা শিব্বির আহমদ জানান, উমেদনগর জামিয়ার তিন ছাত্র প্রবেশপত্র ছাড়া গতকাল হলে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। প্রবেশপত্র না থাকায় আমরা সুযোগ দিতে পারি নি। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।

৭ জন শিক্ষকের পদত্যাগ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে উমেদনগর মাদরাসার শিক্ষক মুফতি কবীর আহমদ কওমিকণ্ঠকে বলেন, ৭ জন শিক্ষক পদত্যাগের বিষয়টি ঠিক নয়। দুজন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন।, তবে তারা পরীক্ষা সংক্রান্ত কারণে নয় বরং আগে থেকেই প্লান ছিল তারা চলে যাবেন।

১৬ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা না দিয়ে ভবিষ্যৎ ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়া হলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ এটা তো দু:খজনক।

তিনি আরো বলেন, এব্যাপারে আমরা বেশি কিছু বলতে পারবো না। আমরা জেনেছি, মুহতামিম সাহেব বলেছেন, তিনি প্রবেশপত্রে স্বাক্ষর করবেন না।, তবে নাইবে মুহতামিম সাহেবের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে পরীক্ষার সুযোগ রেখেছিলেন।।

আপনারা তাদের জন্য কোনো উদ্যোগ নিলেন না কেন? এ ব্যাপারে মুফতি কবীর বলেন, আমরা তো এ দায়িত্বে নেই। আমরা একটা পরিবারের মধ্যে রয়েছি এখানে সবাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

পরীক্ষা না দেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানি না।, এগুলো হুজুরদের ব্যাপার।

তবে চাপাচাপি করলে তিনি বলেন, আমাদের এবার প্রস্তুতি ভালো হয়নি এ কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী বছর ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একজন ছাত্র বলেন, আমরা নাইবে মুহতামিম মাওলানা মাসরুরুল হকের হাতেপায়ে ধরে প্রবেশপত্র দিতে অনুরুধ করি কিন্তু তিনি প্রথমে রাজি হন নি।

About Islam Tajul

mm

এটাও পড়তে পারেন

কওমি মাদরাসা কল্যাণ ট্রাস্ট, বাংলাদেশ

খতিব তাজুল ইসলাম ট্রাস্টের প্রয়োজনীয়তাঃ কওমি অংগন একটি স্বীকৃত ও তৃণমূল প্লাটফর্ম। দেশ ও জাতির ...