শয়তান আদমকে সেজদা করতে অস্বীকার করেছিল। আল্লাহ তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলেছিল আমি আদম থেকে মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ। কেননা আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে আর আদমকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। সে তার সৃষ্টিউপাদান নিয়ে অহংকার দেখিয়েছিল, পরিণামে চিরকালের লাঞ্চনা কুড়িয়েছিল।
সেই শয়তানের আওলাদ ইরানীরা উপাসনা করতো আগুনের, আর আরবরা উপাসনা করতো মাটির তৈরি দেবদেবীর। শয়তানের মতো ইরানীরাও আরবদের নীচ মনে করতো। সে জন্যেই রাসূলুল্লাহ সা. যখন জাতি সমূহের উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়ে কাসিদ প্রেরণ করেছিলেন তখন ইরানী সম্রাট পারভেজ পত্রখানা পড়ারও গরজ অনুভব করেনি। রাগের মাথায় সে পত্রখানা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেছিল। এরপর সে ইয়েমেনে নিযুক্ত তার গভর্ণরকে নির্দেশ দিয়েছেল সে যেন মুহাম্মদ সা.কে ধরে ইরানে পাঠিয়ে দেয়। রাসূল সা. তার পত্রের সাথে কৃত আচরণ শুনে বলেছিলেন সে মূলত আমার পত্র ছিন্ন করেনি বরং সে তার নিজ সাম্রাজ্যটাকেই ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। এরপর হুযুর সা.কে ধরে নিয়ে যাবার জন্য আসা লোক দুটিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন যে পারভেজ আমাকে ধরে নিয়ে যাবার জন্য পাঠিয়েছে তার ভবলীলাতো সাঙ্গ হয়ে গেছে। তার ছেলে তাকে হত্যা করে রাজ তখতে বসে গেছে।
এরপর খলিফায়ে সানী হযরত ওমর রাযি.এর যুগে হযরত সাদ বিন আবিওয়াক্কাস রাযি. এর নেতৃত্বে যখন পুরো ইরান পর্যুদস্ত হয়ে যায়, তাদের শক্তির মধ্যমণি রুস্তুম বিন যাল নিহত হয় তখন থেকেই এই আগুন পুজারিদের অন্তরে আরবদের প্রতি ঘৃণা আর প্রতিশোধ স্পৃহা অধিকতর তীব্রতর হতে থাকে। কেননা মাটির পুজারী, উলঙ্গপায়ে পদচারণাকারী যাযাবর আরব জাতি তাদের মত সুসভ্য (?) একটা জাতিকে এভাবে পর্যুদস্ত করবে এটা কোনো ইরানী বালক কিংবা নারীও বরদাশত করতে পারছিল না। তাই তাদের অন্তরে ধিকি ধিকি প্রতিশোধের আগুণ জ্বলছিল।
উমর রাযি. এর পর উসমান রাযি. এর খেলাফতকালে যখন এক ধুর্ত ইহুদির বাচ্ছা ইসলাম ধ্বংসের মিশন নিয়ে বের হয়েছিল তখন এই ইরানীরাই সর্বপ্রথম তাকে স্বাগতম জানিয়েছিল। এবং তাদের দেশ ইরানকেই শেষ পর্যন্ত ঐ ধুর্ত ইহুদির বাচ্চার তৈরি ধর্মের কেন্দ্র বানিয়ে নিয়েছিল। সেই থেকে অদ্যাবধি ইরানীরা ইসলামের বিরোধিতায় অগ্রগামী ভূমিকা রেখে আসছে। তাদের এ ভূমিকা অব্যাহতও থাকবে চিরকাল। যাবৎ না তাদের নেতা দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটে সে তার জাতি ও অনুসারী সহ মারা পড়বে।