বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার এক কুরআনে হাফিজের কথা আমরা শোনেছি। মোটর সাইকেলে বাতাস ভরে বিনা তেলে চালিয়ে পুরো দেশকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এই আবিষ্কারের কিছুদিনের মাথায় তিনি কার দুর্ঘটনায় শাহাদত বরণ করেন। তার এই কীর্তি নিভে গেল। কেউ আর খবর রাখলোনা যে তাকে এভাবে জীবন দিতে হলো কেন? ভারতীয় র’কি তাকে গোপনে হত্যা করেছে কার এক্সিডেন্টের নামে। এমন তদন্ত ও কেউ করেনি। আজ ভারতের দেবনাথের হাওয়াই বাইকের কথা আমরা ফলাও করে প্রচার করছি কিন্তু ভুলে গেছি আমাদের সেই কৃতি সন্তান বিশ্বে প্রথম হাওয়াই বাইক আবিস্কারকের কথা।
কমাশিসা ডেস্ক: পেট্রোল কিংবা ডিজেলে নয়, স্রেফ হাওয়াতেই চলবে মোটরসাইকেল! এজন্য জ্বালানির ট্যাঙ্কের জায়গায় শুধু হাওয়া ভরলেই চলবে। আপাতত এই মোটরসাইকেলের নাম দেওয়া হয়েছে হাওয়া বাইক। এটি উদ্ভাবন করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া এলাকার যুবক গৌরব দেবনাথ (২৪)।
হাবড়া এলাকার বুধোরহাটি বেলতলার বাসিন্দা গৌরব দেবনাথ ‘হাওয়া বাইক’ আবিষ্কার করে রীতিমতো অবাক করে দিয়েছেন। স্বাভাবিক গতি নিয়েই হাওয়ার জোরে চলে এই মোটরসাইকেল। একবার ৫০ প্রেসার হাওয়া দিলে ২০০ কিলোমিটারের বেশি পথ চলতে পারে এ মোটরসাইকেল।
গৌরব দেবনাথ গত ৯ বছর ধরে হাবড়ার কৈপুকুর এলাকার স্থানীয় একটি মোটর গ্যারেজে মেকানিকের কাজ করতেন। মাত্র মাধ্যমিক পাস করা গৌরব পরিবারের অভাবের তাড়নায় মোটর গ্যারেজে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। গ্যারেজে কাজ করতে করতেই তাঁর মাথায় ঢোকে জ্বালানির এই বিপুল ব্যয় থেকে কীভাবে রেহাই পাওয়া যায়।
সেই ভাবনা থেকেই নিজে কিছুদিন আগে একটি পুরনো বাইক কিনে ফেলেন। তারপর সেই বাইক দিয়েই শুরু হয় তাঁর পরীক্ষা নিরীক্ষা। গ্যারেজে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকেই নিজের বাইকে নানা রকম পরীক্ষা চালাতে থাকেন তিনি। অবশেষে সেই পরীক্ষায় সফলতা আসে।
গৌরব জানান, মোটরসাইকেলে তেলের ট্যাঙ্কের জায়গায় তেল না ভরে শুধু ভরা হবে হাওয়া। আর সেই হাওয়া কম্প্রেসারের মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে বাইক চালানো যায় অনায়াসেই। অন্যান্য আর পাঁচটা মোটরসাইকেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একই গতিতে ছুটবে তাঁর এই হাওয়া বাইক।
এমনকি রাতেও এই বাইক চালাতে কোনো অসুবিধা হবে না বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, বাইকে থাকা ব্যাটারির মাধ্যমে পিছনের লাইট জ্বললেও সামনের হেডলাইট জ্বলবে হাওয়ার জোরেই। আর ব্যাটারিও চার্জ হবে হাওয়াতেই।
হাওয়া বাইক সম্পর্কে গৌরবের দাবি, এই মোটরসাইকেল পরিবেশ দূষণের হার থাকবে একেবারে শূন্য। তবে অর্থের অভাবে এখনো সম্পূর্ণভাবে মোটরসাইকেল তৈরি করতে পারছেন না গৌরব। তা ছাড়া নতুন এই বাইক বাজারে ছাড়তে গেলেও প্রয়োজন সরকারি অনুমোদন, লাইসেন্স। যা না পেলে পুরোপুরি এই হাওয়া বাইক আবিষ্কার নিয়ে তাঁর পূর্ণ সফলতার দাবি জানাতে পারছেন না।
তাঁর আশা, কোনো কোম্পানি যদি তাঁকে এই হাওয়া বাইক তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে তাহলে চমক দেখাতে পারবেন তিনি। এখন গৌরব নিজেই তাঁর পুরনো বাইকটিতে হাওয়া ভরে দিব্যি যাতায়াত করছেন বাড়ি থেকে গ্যারেজে। এ ছাড়া ইচ্ছে হলেই হাওয়া বাইকে চেপে চলে যাচ্ছেন দূর-দুরান্তের রাস্তাতেও।
সুত্র: শীর্ষবিন্দু