কমাশিসা : তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির রিভিউ খারিজের রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে এই রায় প্রকাশিত হয়। এখন এই রায় আপিল বিভাগ থেকে হাইকোর্ট বিভাগে যাবে। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে যাবে বিচারিক আদালত ও কারাগারে।
হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) মো. সাব্বির ফয়েজ আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ পৃষ্ঠার রায়টি সকালে প্রকাশিত হয়। প্রক্রিয়া অনুসারে আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ ও বিচারিক আদালত হয়ে রায়টি কারাগারে যাবে।
মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দণ্ডিত ব্যক্তিদের করা আবেদন ১৯ মার্চ খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ ওই আদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে এই মামলায় আইনি লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর দুজন হলেন শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, রিভিউ খারিজের ফলে এই তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনগত কোনো বাধা নেই।
আইনজীবীরা বলছেন, নিয়ম অনুসারে আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ পাবেন। যদি তাঁরা প্রাণভিক্ষার আবেদন না করেন বা আবেদন করার পর তা নাকচ হয়, তাহলে কারাবিধি অনুযায়ী আসামিদের দণ্ড কার্যকর করা হবে।
মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পর দণ্ডিত ব্যক্তিরা আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যা গত বছরের ৭ ডিসেম্বর খারিজ হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তিন জঙ্গি আপিল বিভাগে গত ফেব্রুয়ারিতে পৃথক দুটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন, যা খারিজ হয়।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারের ফটকের কাছে গ্রেনেড হামলায় ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীসহ ৭০ জন আহত হন, নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন।
ওই ঘটনায় করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান, জঙ্গি শরিফ শাহেদুল ও দেলোয়ারকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।
গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিদের করা আপিল গত ৭ ডিসেম্বর খারিজ হয়। আপিল না করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনের দণ্ড বহাল থাকে।
আপিল খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১৭ জানুয়ারি প্রকাশ পায়। এরপর তিন আসামি রিভিউ আবেদন করলে তা খারিজ হয়।