মোস্তফা কামাল গাজী :
চারপাশে অন্ধকার। তার ভেতর বসে আছি আমি। একফোঁটা আলো নেই কোথাও। গায়ে লেপ জড়িয়ে আঁধার দেখে চলছি। বাহিরে রাতের আকাশে চাঁদ উঠেছে। তারায় তারায় মেলা বসেছে সেখানে। জোছনা ঝরছে ঘাসে, লতায় পাতায়। মেঘের ভেলাতেও চড়ে বসেছে সে জোছনা।
বাহিরের জ্যোৎস্নার এ মনোরম দৃশ্য পুরোপুরি দেখা যায় না এখানটায় বসে। ছিঁটেফোঁটা আলো আসছে ছোট্ট জানালাটা ভেদ করে। বিছানার এক কোণে পড়ে গাছের পাতার ছায়ার সাথে ঢেউ খেলছে ওটা। বড্ড মনোরম সে দৃশ্য। হাত বাড়ালাম ছুঁয়ে দেখতে। চাঁদের আলোয় আমার হাতটাও রূপালি হয়ে ওঠলো। গায়ে মেখে নিলাম; এ আশায় যে, হয়তো আমার পুরো অবয়বটাও রুপালি হয়ে ওঠবে!
হাজার বছরেও আসে না এমন মধুময় রাত। মানুষের জীবন বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্য সময়ে বৈচিত্র্য অনুভূতি আসে। কিন্তু ভালোলাগার এমন একটি রাত আগে কখনো আসেনি আমার ছোট্ট এ জীবনে। তাই এ মধুরাতটাকে উৎসর্গ করলাম পুরো জীবনের জন্য; যেনো প্রতি রাতটাই হয় আনন্দঘন, সুন্দর।
একদিন ছোট ছিলাম। গ্রামে কাটতো শৈশবের উচ্ছল সময়গুলো। সেখানেও রাত নামতো জ্যোৎস্না নিয়ে। চাঁদের আলোয় ভাসতাম আমি। জ্যোৎস্নার ভেলায় চড়ে বসতাম কখনো। হারিয়ে যেতাম তেপান্তরে। হাজারো জোনাকি জ্বলতো সে রাতে। চাঁদের আলোর সাথে তার আলোর চলতো লুকোচুরি খেলা। আমিও শামিল হতাম ওদের সাথে।
শৈশব হারিয়েছি অনেক বছর হলো। এখন তার স্মৃতিগুলোকে কেবল খুঁজে পাই। তাই সময়ে অসময়ে খুঁজেফিরি আমার হারানো সেই শৈশব।
লেখক : শিক্ষার্থী, দেওবন্দ, ভারত