মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার সন্ধ্যার এক বক্তৃতায় সুইডেনকে নিয়ে যে কথা বলেছেন – তা নিয়ে দেশটিতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
“আপনারা দেখুন জার্মানিতে কী ঘটছে। সুইডেনে গতরাতে কী ঘটেছে। কে একথা বিশ্বাস করবে? তারা ব্যাপক সংখ্যায় (শরণার্থী) নিয়েছে এবং এখন তাদের এমন সমস্যা হচ্ছে যা তারা চিন্তাও করতে পারে নি” – ফ্লোরিডায় এক সভায় বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কিন্তু আসলে অনেকেই পরিষ্কার বোঝেননি যে সুইডেনে আগের দিন রাতে কী ঘটেছিল- ট্রাম্প কী ঘটনার কথা বলছেন।
টুইটারে এ নিয়ে অনেকের মতো মন্তব্য করেন সুইডিশ প্রধানমন্ত্রীও।
“সুইডেন? সন্ত্রাসী আক্রমণ? তিনি কি কিছু খেয়েছেন? সবার মনে প্রশ্ন” – টুইটারে লেখেন প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ডট।
আসলেই কি ইডেনে সেদিন কিছু ঘটেছিল?
সুইডেনের সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্ট সেদিন পরিচালনা করছিলেন এমা – যিনি একজন স্কুল লাইব্রেরিয়ান।
তিনি লেখেন, না। ইডেনে কিছু হয়নি। কোনো সন্ত্রাসী আক্রমণ ঘটেনি। দেশের প্রধান খবর ছিল স্কুলছাত্রদের সংগীত প্রতিযোগিতা।
টুইটারে ‘লাস্টনাইটইনসুইডেন’ হ্যাশট্যাগ চালু হয়ে যায় এর পর। অন্য একটি ওয়েবসাইট সেদিনের প্রধান খবরগুোর একটা তালিকা দেয়। তাতে দু-একজনের মুত্যুর খবর ছিল – কিন্তু সন্ত্রাস-সম্পর্কিত কিছু ছিল না।
কিছু লোক অবশ্য বলেছেন, শুক্রবার রাতে ফক্স নিউজ টিভিতে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়- যাতে সুইডেনে শরণার্থীরা আসার পর দেশটিতে বন্দুক নিয়ে সহিংসতা এবং ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে। হয়তো সেটাকে কেউ সেদিনের ঘটনা বলে মনে করে থাকতে পারে।
আরেকজন বলেছেন হয়তো পাকিস্তানের সেহওয়ানের বোমা হামলায় ৮০ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে ট্রাম্প সুইডেনের ঘটনার সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন।
সুইডেনে ২০১৩ থেকে শরণার্থীরা যাওয়া শুরু হবার পর কোন সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়নি।
একজন ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ সাইমন শামা টুইটারে ট্রাম্পের কথা প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, সুইডেনে দুই লাখ শরণার্থী আছে, এখানে কোন সন্ত্রাসী আক্রমণ হয়নি।
তবে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন থেকেই সবচেয়ে বেশি লোক ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় গেছে বলে জানা যায়। এরকম ৩০০ জনের মধ্যে ১৪০ জন ইতিমধ্যে সুইডেনে ফিরে গেছে।
তাদের এখন সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
সূত্র : বিবিসি