মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন কাসেমী::
ইমাম ইবনে জাওযী রহ. লেখেন : খোরাসানের এক ব্যবসায়ী হজের উদ্দেশে বাগদাদ আগমন করল। এখানে এসে অনুভব করল, তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এক হাজার দিনার রয়েছে। সে চিন্তা করল, হজের সফরে তার কাছে এতগুলো টাকা রাখা ভয় থেকে মুক্ত নয়। আর কারো কাছে আমানত রাখাও ঠিক হবে না। সুতরাং সে শহরের নিকটবর্তী একটি জঙ্গলের রেড়ি গাছের নিচে গর্ত করে দিনারগুলো দাফন করে রাখল। অতঃপর সে হজের জন্য রওয়ানা হয়ে গেল। হজ সমাপ্ত করে যখন সে ব্যবসায়ী বাগদাদ আসল, তখন ওই গাছের নিচে খনন করে দেখল, অন্য কোনো ব্যক্তি তার পূর্বেই দিনার নিয়ে চলে গেছে। দুঃখ-বেদনা ও কষ্টের কারণে সে অস্থির হযে পড়ল। শহরে ফিরে এসে লোকজনের সামনে আহাজারি ও কান্নকাটি শুরু করল। অবশেষে কোনো একব্যক্তি তাকে শহরের বিচারক আজদুদ্দৌলার কাছে নিয়ে গেল। আজদুদ্দৌলার তার উপাখ্যান শুনে শহরের সকল ডাক্তারকে একত্রিত করার নির্দেশ দিল। বিচারক জিজ্ঞেস করল, তোমরা এ বছর কোনো রোগীকে রেড়ির কিশলয় দ্বারা চিকিৎসা করেছ? এক ডাক্তার বলল : হ্যাঁ, আপনার অমুক সেবকের চিকিৎসা করেছি। আজদুদ্দৌলা জিজ্ঞেস করল, এসব কিশলয় কে তোমাকে এনে দিয়েছিল? বলল, অমুক তাঁবুনির্মাতা। তাঁবুনির্মাতাকে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হল। সে আসার পর জিজ্ঞেস করা হল, তুমি রেড়ির কিশলয় কোন্ গাছ দ্বারা ভেঙেছিলে? তাঁবুনির্মাতা ওই গাছের ঠিকানা বলে দিল, যেখানে খোরাসানের ব্যবসায়ী দিনার লুকিয়ে রেখেছিল। আজদুদ্দৌলা তাকে নির্দেশ দিল, সেখান থেকে যে দিনার তুমি নিয়েছ এক্ষুনি তা বের করো। এ ব্যবসায়ীকে দাও। তাঁবুনির্মাতা প্রথমে ইতস্তত করলেও বিচারকের ধমকের পর ব্যবসায়ীর কাছে হস্তান্তর করল।
আজকে আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি মিথ্যাচার, খেয়ানত, চুরি, বে-ইনসাফি হয় বিচার-আদালতে। আফসোস! মুসলমানদের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কবে হবে আমাদের দেশে? কবে??