বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
কমাশিসা পরিবারবিজ্ঞাপন কর্নারযোগাযোগ । সময়ঃ দুপুর ২:৩৬
Home / মাহফিল / আগামীকাল গহরপুর জামিয়ার কওমি গ্রাজুয়েশন

আগামীকাল গহরপুর জামিয়ার কওমি গ্রাজুয়েশন

সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

ইলিয়াস মশহুদ : দেশের অন্যতম দ্বীনি বিদ্যাপীঠ, বরেণ্য বুযুর্গ শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফিয নূরউদ্দীন আহমদ গহরপুরী রাহ. প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী জামিয়া হুসাইনিয়া গহরপুর’র ৬০ বছর পূর্তি ও ৬ষ্ঠ দস্তারবন্দী আগামি কাল বৃহস্পতিবার জামিয়া ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে ৬ষ্ঠ কওমি গ্রাজুয়েশন ও ১০ সালা দস্তারবন্দী মহাসম্মেলন।
সম্মেলনকে সামনে রেখে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে বলে জানা গেছে। প্রচারণার জন্য নজরকাড়া বিচিত্র ডিজাইনের ব্যানার-ফেস্টুন, পোস্টার-লিফলেটের পাশাপাশি মাসখানেক আগ থেকেই সিলেট শহর ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ সকল রাস্তায় নির্মাণ করা হয়েছে আকর্ষণীয় তোরণ। প্রচারণার শেষ মুহূর্তে পিকআপ ভ্যানে নান্দনিক স্টেইজ বানিয়ে, ‘কওমি গ্রাজুয়েশন-দস্তারবন্দী সম্মেলন’ খচিত সফেদ পোশাক পরে তরুণ আলেমরা চালাচ্ছেন প্রচারণা। সম্মেলন উপলক্ষে গোটা সিলেটেই আলাদা এক আনন্দের বাতাস বইছে। ইলমে দ্বীন ও আধ্যাত্মিক জগতে আল্লামা গহরপুরী রাহ.’র সমান বিচরণ থাকায় এমনিতেই প্রতি বছর গহরপুরের মাহফিল লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।


তাঁরই সুযোগ্য সন্তান, বেফাকের সহ-সভাপতি তরুণ আলেম মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজুর সুদূরপ্রসারী চিন্তা, নতুনত্ব, বিচক্ষণতা ও দক্ষতায় দিন দিন জামিয়া গহরপুরকে আরোও আলোকিত করে তুলছে। বিশেষ করে কওমি গ্রাজুয়েশন-দস্তারবন্দী সম্মেলনের ব্যতিক্রমি আয়োজন সর্বস্তরের আলেম-জনতার প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়েছে। জামিয়ার ফাযিলরা এতে বেশ উদ্দীপ্ত, আনন্দিত। এমনকি অন্য প্রতিষ্টান থেকে টাইটেল উত্তীর্ণ অনেকেই আফসোস করে বলছেন- ‘ইশ, যদি জামিয়া গহরপুর থেকে …।’
জানা গেছে, জামিয়া গহরপুর থেকে গত দশ বছরে যারা তাকমিল ফিল হাদীস (কওমি গ্রাজুয়েশন) ও হিফযুল কুরআন সম্পন্ন করেছেন তাদের সকলকে গ্রাজুয়েশন সম্মাননাস্বরূপ দস্তারে ফজিলত-পাগড়ি, বিশেষ পোশাক -এরাবিয়ান আবা, স্মারক, ব্যাগ, চাবির রিং, কলম, গিফট বক্স ইত্যাদি প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যে সকল গ্রাজুয়েটকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
২০০৭ ঈসায়ি সালের ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট গ্রাজুয়েট মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ্, যোগ্য পিতার যোগ্য উত্তরসুরীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় জামিয়া গহরপুর আজ সফলতার উচ্চশিখরে। এধরনের অনুষ্টান দেশবাসী আগে কখনও লক্ষ্য করেন নি। আমরা এতে আনন্দিত, গর্বিত। আল্লাহ তা’য়ালার কাছে মোহতামিম সাহেবের দীর্ঘায়ূ ও গহরপুরী হুজুরের রাহ. উঁচু মাকাম কামনা করছি।’ জামিয়া গহরপুরের আরেক গ্রাজুয়েট, শিল্পী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা ইনাম বিন সিদ্দিক, বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী আহমাদ আব্দুল্লাহর কণ্ঠেও ঝরলো গ্রাজুয়েট নিয়ে প্রশংসা আর উচ্ছাসার বান। কাঙ্খিত ক্ষণের অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তারা। আজ (বুধবার) তারা সরেজমিন পরিদর্শন করে এসেছেন।


সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং পাগড়ি প্রদান করবেন ভারত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সদর ও দারুল উলূম দেওবন্দের মুহাদ্দিস সায়্যিদ মাওলানা আরশাদ মাদানী। এছাড়াও দেশের শীর্ষ আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশের ইসলামিক স্কলার যোগ দেবেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও থাকবেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শুরু হয়ে পরদিন সকাল পর্যন্ত চলবে সম্মেলন। দেশি-বিদেশি মেহমানরা মূল্যবান বয়ান পেশ করবেন।

উল্লেখ্য, প্রখ্যাত বুজুর্গ আল্লামা নূর উদ্দিন আহমদ গহরপুরী রহ. প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির ৬০ বছর পদার্পণ উপলক্ষে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। শায়খুল হাদিস আল্লামা হাফেজ নূর উদ্দিন আহমদ গহরপুরী রহ. ছিলেন কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের  সভাপতি। দেশের প্রভাবশালী বুজুর্গ এই আলেম সারা দেশের ইসলামি অঙ্গনে অভিভাবক হিসেবে গণ্য হতেন। ১৯৫৭ সালে তিনি নিজ গ্রাম বালাগঞ্জের গহরপুরে বিখ্যাত এই দীনি প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। প্রতি বছর এই জামিয়া থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা সম্পন্ন করে মাওলানা ডিগ্রি লাভ করেন। প্রতি ১০ বছর পরপর সম্মেলনের মাধ্যমে এই জামিয়া থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করা আলেমদের সম্মাননা স্মারক পাগড়ি প্রদান করা হয়। এর আগে ২০০৭ সালে ১০ সালা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার মাদরাসার ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ষষ্ঠ পাগড়ি প্রদান সম্মেলন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল হিসাবে দায়িত্বরত রয়েছেন আল্লামা গহরপুরী রহ.’র সুযোগ্য সন্তান ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন রাজু।

About Abul Kalam Azad

mm

এটাও পড়তে পারেন

জাগতিক ও ইসলামী শিক্ষা

#জাগতিক_ও_ইসলামী_শিক্ষা মানুষের খুদি বা রূহকে উন্নতিসাধনের প্রচেষ্টার নামই হলো শিক্ষা, কথাটি আল্লামা ইকবালের। রবীন্দ্রনাথের মতে, ...