অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুণী নাজমা খানের ডাকে চতুর্থ বছরের মতো বিশ্বজুড়ে ‘আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস’ পালিত হচ্ছে আজ বুধবার।
‘নারীর হিজাব পরার পক্ষে দাঁড়ান’ এ আহ্বানকে সামনে রেখে এ বছর বিশ্বের ১৯০টি দেশে একযোগে হিজাব দিবস পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশী নাজমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো বিশ্বের প্রায় ৬৭টি দেশের মুসলিম-অমুসলিম নারীরা হিজাব দিবস পালন শুরু করে।
শুরু হওয়ার পরপরই হিজাব দিবস বিশ্বজুড়ে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। মাত্র দুই বছরের মাথায় গতবার ১৫০টি দেশে এ দিবস পালিত হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ডের ট্রাম্পের আগমনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলমানরা নানা বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে হিজাব পরা মুসলিম নারীরা হয়রানি-বৈষম্য-আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।
এ অবস্থায় এবারের হিজাব দিবসকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে’র দাফতরিক ওয়েবসাইটে এবারের দিবসে উগ্র খ্রিস্টান ধর্মান্ধতা, বৈষম্য এবং মুসলিম নারীর অধিকার হরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে হিজাবকে নিষিদ্ধ করে মুসলিম নারীদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে জানিয়ে ‘বতর্মান সময়কে সবচেয়ে বৈরি সময়’ বলে অভিহিত করেছে ওয়েবসাইটটি।
হিজাব দিবসের আহ্বানকারী নাজমা খান ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন।
হিজাব দিবস পালনের ব্যাপারে নাজমা বলেন, তিনি যখন হিজাব মাথায় স্কুলে যেতেন তখন তাকে অনেক অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হতো। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় তাকে ব্যাটম্যান এবং নিনজা বলে ডাকা হতো। আর ২০০১ সালের নাইন ইলেভেনের পর তাকে ডাকা হতো ওসামা বিন লাদেন ও সন্ত্রাসী বলে।
তিনি আরো বলেন, হিজাবকে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে নারীর প্রতি নিপীড়ন ও বৈষম্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হয় এবং এ জন্য তাকেও অনেক বৈষম্যের শিকার হতে হয়।
আর এই বৈষম্যের অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি তার অমুসলিম বোনদেরও হিজাব পরার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বাস্তবেই এটা কোনো নিপীড়ন কি না তা পরখ করার আহ্বান জানিয়ে হিজাব দিবসের ডাক দেন।
তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রথম বছরেই ৬৭টি দেশের মুসলিম নারীরা ছাড়াও খ্রিস্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং নাস্তিকরাও সাড় দিয়ে হিজাব দিবস পালন করেন।