চলতি সেপ্টেম্বরে ১১ তারিখে পূর্ণ হলো আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের এক দশক। এই ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী ‘নয়-এগারোর’ সন্ত্রাসী ঘটনা নামে সমধিক পরিচিত। শুধু ‘নাইন-ইলেভেন’ বললে আমরা সবাই এ ঘটনাকেই বুঝি। এবার যখন ১১ সেপ্টেম্বরের এ ঘটনার দশম বার্ষিকীর দিনটি এগিয়ে আসছিল, তখন আমেরিকার মূলধারার গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদেরা নানাভাবে স্মরণ করছিলেন টুইন টাওয়ার ঘটনার শিকার হয়ে সেখানে নিহত তিন হাজার ভাগ্যাহত মানুষের কথা। নিঃসন্দেহে সন্ত্রাসের শিকার এসব নিরপরাধ মানুষের এভাবে মৃত্যুকে কোনো বিবেকবান মানুষ কোনো মতেই স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিতে পারে না। প্রতিটি বিবেকবান মানুষই এদের মৃত্যুতে ব্যথিত। এদের শোকাহত পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাথে সমব্যথী। সে সূত্রেই প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মতো অন্যান্য দেশের মানুষও এদের স্মরণ করে, এদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে এর প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই। কিন্তু পাশ্চাত্যের গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদেরা এ ঘটনার নানা গাণিতিক হিসাব-নিকাশ উল্লেখ করেন না, এই দিবসটি পালনের সময়ে।
আমরা সবাই জানি, নয়-এগারোর ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনার জন্য আলকায়েদাকে দায়ী করে ঘটনার পরদিন থেকে ঘোষণা দিয়ে শুরু করে সন্ত্রাস দমনের নামে নানা বিতর্কে বিতর্কিত তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের কাছে এ কথা আজ স্পষ্ট, আলকায়েদার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত অভিযোগটির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই; ৯-১১ ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের একটি ইহুদিবাদী যৌথ দুষ্কর্ম, উদ্দেশ্যমূলক যৌথ সন্ত্রাসীকর্ম; আলকায়েদার ওপর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ইহুদিদের যোগসাজশে এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফলস-ফ্ল্যাগ অপারেশন বা কভার্ট অপারেশন মাত্র। এটিও আজ সবার জানা, ৯-১১ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক মিথ্যাচার করেছে এবং সুষ্ঠু তদন্তকেও বাধাগ্রস্ত করেছে। এ ছাড়া ৯-১১-এর পর যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা তথাকথিত সন্ত্রাস দমনের নামে বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ এই এক দশক ধরে চালিয়ে আসছে, তাতে এক কোটি ১০ লাখ মুসলমান মারা গেছেন। এ যুদ্ধের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে প্রভাবে এরা মারা যান। এর বাইরে নয়-এগারোর পরবর্তী এই এক দশকে যে দুই কোটি ৩০ লাখ আমেরিকান মারা গেছেন, সেসব মৃত্যু ছিল উপযুক্ত ব্যবস্থাসাপেক্ষে প্রতিরোধযোগ্য বা প্রিভেন্টেবল। এ সবই নয়-এগারোর নানা গাণিতিক চিত্রের যৎসামান্য মাত্র, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার গণমাধ্যমে যেমন উল্লেখ করা হয় না, তেমনি রাজনীতিবিদেরাও উল্লেখ করেন না কখনোই। বরং এরা এসব তথ্য যথাসম্ভব লুকাতে চেষ্টা করেন। এ লেখার শেষ দিকে ৯-১১-এর আরো কিছু খুচরো তথ্যের ওপর আলোকপাতের প্রয়াস পাবো, যা নাইন-ইলেভেন নিয়ে মার্কিন সরকারের ইহুদিবাদী খেলাটির নগ্ন চরিত্রটি কিছুটা হলেও ফুটে উঠবে।
আগেই বলা হয়েছে, নাইন-ইলেভেন ছিল একটি জায়নবাদী দুষ্কর্ম- জায়োনিস্ট কমপ্লিসিট আর যুক্তরাষ্ট্রের কভার্ট অপারেশন বা ফলস-ফ্ল্যাগ অপারেশন। অসংখ্য বিজ্ঞান, প্রকৌশল, স্থাপত্যকর্ম, বিমান উড্ডয়ন, সামরিক ও গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ এই দশ বছরে এ ঘটনা সম্পর্কে তাদের অভিমত দিয়েছেন। এদের উপসংহার হচ্ছে, এই নৃশংস সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, আমেরিকার এই পার্টি ট্রিকের সাথে বর্ণবাদের প্রতিভূ ইসরাইলও জড়িত। এর প্রধান বিজ্ঞাননির্ভর আপত্তি উঠেছে প্যাথোলজিক্যাল লায়ার, মাস মার্ডারার ও সিরিয়াল ওয়ার ক্রিমিনাল জর্জ বুশের ‘অফিসিয়াল নাইন-ইলেভেন থিওরির’ বিরুদ্ধে। আপত্তিগুলো হচ্ছে : এক. ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইন টাওয়ার বিল্ডিং সেভেনে বিমানের কোনো আঘাত লাগেনি, শুধু সামান্য আগুন লেগেছিল মাত্র। আর তাতেই কী করে এই প্রায় ফ্রি-ফল স্পিডে এর প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেল? দুই. এই ভবনের ধ্বংস যারা স্বচক্ষে দেখেছেন, তাদের কথা হচ্ছে এই ধ্বংসের সময় বিস্ফোরণও সংশ্লিষ্ট ছিল। আর কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেইট-অব-দ্য-আর্ট কেমিক্যাল ফিজিক্স পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে- টুইন টাওয়ার ভবনের ধ্বংসস্তূপের সব নমুনার মধ্যে উচ্চ বিস্ফোরণ মাত্রাসম্পন্ন অবিস্ফোরিত ন্যানোথার্মাইট রয়েছে; এবং তিন. হলিউড স্টাইলে এক ইঞ্জিনের বিমানের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেয়া পাইলট একটি বড় যাত্রীবাহী জেটবিমান চালিয়ে একদম লক্ষ্যস্থলে আঘাত হেনে তিনটি ভবন ধ্বংস করে দেয়ার যে ভাষ্য জর্জ বুশ দিলেন, তা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করেছে এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত বাধাগ্রস্ত করেছে, সেটাই বিশ্বের মানুষ যথার্থ কারণেই বিশ্বাস করে। বর্ণবাদ-বিরোধী ফিলিস্তিনি ইহুদি এলিয়াস ডেভিডসন সুনির্দিষ্টভাবে এই মর্মে তথ্যপ্রমাণ হাজির করেছেন- এমন কোনো সুনির্দিষ্ট অকাট্য প্রমাণ নেই যে, মুসলমানেরা আসলেই নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসকর্মটি ঘটিয়েছে। আর নানাভাবে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে এর তদন্তের কাজকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে। এর একটি বড় উদাহরণ হচ্ছে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ধ্বংসাবশেষ দ্রুত এশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিসন্ধি ছিল তদন্তকাজকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার গণমাধ্যম ও সরকারের অপপ্রচার সত্ত্বেও এক জরিপে জানা যায়, ভিডিওচিত্র দেখে ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার সন্দেহজনক নিয়ন্ত্রিত ধ্বংসসাধনের ফলে অর্ধেক আমেরিকান মনে করে, সরকারি ভাষ্য সন্দেহজনক। বিজ্ঞানে অসত্য বলার বিন্দুমাত্র স্থান নেই। কিন্তু ইউএস সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টিগ্রিটি দেখতে পেয়েছে, বুশ প্রশাসন নাইন-ইলেভেন এবং যুদ্ধাপরাধী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার ইরাক আক্রমণের মধ্যবর্তী সময়ে ৯৩৫টি মিথ্যাচার করেছে। এই মিথ্যাচার এখনো চলছে। এ জন্যই ওবামা প্রশাসন দাবি করে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে তার লাশ দ্রুত সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে এরা। তা সত্ত্বেও সিমৌর হার্শ ওসামা বিন লাদেনের বিচারবহির্ভূত হত্যা ঘটনার বর্ণনা মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি একটি ‘ম্যাসিভ ফেব্রিকেশন’। উল্লেখ্য, দু’জন সুখ্যাত ও তথ্যাভিজ্ঞ জন (ড. পল ক্রাগ রবার্টস ও মরহুমা বেনজির ভুট্টো) দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, হার্শ একটি বড় ভুল করেছেন, বিশেষ করে ওসামা বিন লাদেন এর অনেক আগেই মারা যান, যদিও ওবামা তাকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার দাবি করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার গণমাধ্যম কখনো এ কথা উল্লেখ করে না, নয়-এগারো-উত্তর এক দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর সহযোগী দেশগুলোর পরিচালিত তথাকথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে খরচ করেছে সাত ট্রিলিয়ন তথা মিলিয়ন মিলিয়ন (৭০০০০০০০০০০০) ডলার খরচ করেছে। আর এ যুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে এক কোটি ১০ লাখ মুসলমানকে। শুধু আফগানিস্তান ও ইরাক দখলের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছে ছয় ট্রিলিয়ন ডলার এবং দখলোত্তর সময়ে নিরাপত্তা বিধানে খরচ করেছে এক ট্রিলিয়ন ডলার। নাইন-ইলেভেনোত্তর পাশ্চাত্যের কারণে বিশ্বে মুসলমান হত্যা করা হয়েছে এক কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে ২০০৩ সালের পরবর্তী সময়ে ইরাকে পাঁচ লাখ, ২০০১ সালের পরবর্তী সময়ে আফগানিস্তানে পাঁচ লাখ, ২০১১-উত্তর সময়ে লিবিয়ায় দুই লাখ এবং ২০১১ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত সিরিয়ায় হত্যা করা হয়েছে ৫০ লাখ। ১৯৯০ সালের পর থেকে আমেরিকার মুসলিমবেরোধী যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন এক কোটি ৩০ লাখ মুসলমান। আর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া সমর্থিত বর্ণবাদী ইসরাইলের ইহুদিবাদী মার্কিন তৎপরতায় বিশ্বে শরণার্থী হয়েছে তিন কোটি মুসলমান। এদের মধ্যে রয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ সিরীয়, ৭০ লাখ ফিলিস্তিনি, ৬০ লাখ ইরাকি, ২০ লাখ সোমালি, ২০ লাখ রোহিঙ্গা, ২০ লাখ পাকিস্তানি, ১০ লাখ লিবীয় ও পাঁচ লাখ মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকান শরণার্থী। এই যে গণহত্যা ও ব্যাপক শরণার্থী প্রজন্ম সৃষ্টি, তা জাতিসঙ্ঘ জেনোসাইড কনভেনশনের ২ নম্বর অনুচ্ছেদের সংজ্ঞা অনুযায়ী সুস্পষ্ট গণহত্যা।
২০১৪ সালের এক পরিসংখ্যান মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩১ কোটি ৯০ লাখ লোকের মধ্যে প্রতি বছর ১৬ লাখ ৭০ হাজার আমেরিকান মারা যায়, যে মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব ছিল। সে অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রতিরোধযোগ্য রোগে মারা যাচ্ছে গড়ে প্রতি হাজারে ৫.২ জন বা প্রতি ১৯২ জনে একজন। প্রতি বছর ৪৪৩,০০০ জন আমেরিকান মারা যায় ধূমপানসংশ্লিষ্ট কারণে ( প্রতি হাজারে ১.৩৯ জন বা প্রতি ৭১৯ জনে একজন)। হাসপাতালে বিরূপ ঘটনায় প্রতি বছর ৪৪০,০০০ জন আমেরিকান মারা যান (প্রতি ৭২৫ জনে একজন)। মোটা হয়ে যাওয়া রোগে বছরে ৩০০,০০০ জন আমেরিকান মারা যান ( প্রতি ১০৬৩ জনে একজন)। বায়ুদূষণের শিকার হয়ে বছরে ২০০,০০০ আমেরিকান প্রাণ হারান ( প্রতি ১,৫৯৫ জনে একজন)। বছরে মাদকনেশার শিকার হয়ে মারা যান ৭৫,০০০ আমেরিকান (প্রতি ৪,২৫৩ জনে একজন)। স্বাস্থ্যবীমার অভাবে বছরে মারা যান ৪৫,০০০ আমেরিকান ( প্রতি ৭,০৮৯ জনে একজন হারে)। আমেরিকায় ড্রাগসংশ্লিষ্ট কারণে বছরে মৃত্যু ৩৮ হাজার (প্রতি ৮,৩৯৫ জনে একজন)। মোটর গাড়ি দুর্ঘটনায় বছরে নিহত হর ৩৩ হাজার আমেরিকান (প্রতি ৯,৬৬৭ জনে একজন)। বন্দুকের গুলিতে বছরে মারা যান ৩১ হাজার আমেরিকান (প্রতি ১০,২৯০ জনে একজন)। বছরে আত্মহত্যা করে ৩০ হাজার আমেরিকান ( প্রতি ১০,৬৩৩ জনে একজন)। মৃত্যু ঠেকানো যেত এমন পাঁচ বছরের কম বয়সী আমেরিকান শিশু বছরে মারা যায় ২১ হাজার (প্রতি ১৫,১৯০ জনে একজন)। বছরে ১৫ হাজার আমেরিকান ভয়াবহ খুনের শিকার হন। এ তালিকা মতে, কুচক্রী রাজনীতিবিদদের অবহেলার শিকার হয়ে বছরে ১৬ লাখ ৭০ হাজার আমেরিকানকে প্রাণ হারাতে হয়।
একটি পরিসংখ্যান মতে, নাইন-ইলেভেনের পরবর্তী এক দশক সময়ে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন ৩০ জন আমেরিকান। জাতিসঙ্ঘের পপুলেশন ডিভিশন ডাটা মতে, এই সময়ে আমেরিকার গড় লোকসংখ্যা ছিল ২৯ কোটি ৮০ লাখ। সে হিসাব মতে, যুক্তরাষ্ট্রে বছরে সন্ত্রাসীদের হাতে আমেরিকান নিহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রতি ১০ কোটি জনে একজন। গণিত বলে সন্ত্রাসের কারণে যে পরিমাণ আমেরিকান নিহত হন, তার চেয়ে ৪৭০০ গুণ বেশি খুন হয় অসন্ত্রাসী কিলারদের মাধ্যমে। সন্ত্রাসের কারণে যত আমেরিকান মারা যান, বায়ুদূষণের কারণে তার চেয়ে ৬৩ হাজার গুণ বেশি মারা যান, ধূমপানের কারণে মারা যান সন্ত্রাসের কারণের তুলনায় ১৩৯ হাজার বেশি আমেরিকান। আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলায় যত আমেরিকান মারা যাওয়ার সম্ভাবনা, সে তুলনায় ধূমপান, নেশা, মোটা হওয়া রোগে মারা যায় তার চেয়ে ৫২১ হাজার গুণ বেশি। তুলনামূলক পরিসংখ্যান থেকে যে কেউ জানতে পারেন, যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসের শিকারে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রতি এক কোটি ৬০ লাখ জনে একজন, আর অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি ১০ কোটি ৯০ লাখে একজন।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং ইহুদিবাদীদের সমর্থিত মার্কিন সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে নাইন-ইলেভেনের পরবর্তী সময়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যা করা হয়েছে এক কোটি ১০ লাখ মুসলমানকে। আর এ সব যুদ্ধে খরচ হয়েছে সাত ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার। নাইন-ইলেভেনোত্তর আফগানিস্তান ও ইরাকে নিহত হয়েছেন ছয় হাজার ৯০০ মার্কিন সামরিক ব্যক্তি। এই সময়ে এক লাখেরও বেশি মার্কিস সৈন্য আত্মহত্যা করেছে। প্রতিরোধযোগ্য রোগে এই সময়ে মারা গেছেন দুই কোটি আমেরিকান। এ সবই ঘটেছে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তিন হাজার লোকের মৃত্যুর ঘটনাকে অনুষঙ্গ করে।
বলা হয়, টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে তিন হাজার লোক হত্যার বদলা নিতে যুক্তরাষ্ট্র এর নেতৃত্বধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোট নেমে পড়েছে এই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে। আসলে এটি নিওকন আমেরিকান ও জায়নবাদী সাম্রাজ্যবাদীদের এক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, মার্কিন জোটের এক সন্ত্রাস, যার শুরু নয়-এগারোর সন্ত্রাসী হামলার অজুহাতে। এখানে চলছে মার্কিন জোটের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস- যুক্তরাষ্ট্রের, ফরাসিদের, জার্মানদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বর্ণবাদী রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের এই জোটে যুক্ত হয়েছে আরো বেশ কিছু মুসলিম দেশের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসও। আর এ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে বিশ্বে এক কোটিরও বেশি মুসলমান নিহত হয়েছে এই এক দশকে।
নয়াদিগন্ত সৌজন্যে