‘দ্বৈত শাসন’ বিচার বিভাগের ধীরগতির অন্যতম কারণ বলে প্রধান বিচারপতি যে কথা বলেছেন, তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে ওনার (প্রধান বিচারপতি) বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি।’
প্রধান বিচারপতি সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি বাহাত্তরের সংবিধানে যেমন ছিল তেমনই করার বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটিকে স্ববিরোধী বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১১৬ অনুচ্ছেদ বাহাত্তর সালের সংবিধানে যেতে পারলে ৯৬ অনুচ্ছেদ নয় কেন?
বাহাত্তরের সংবিধানে ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। আর ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচারকর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
কিন্তু বর্তমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বিচারকর্ম বিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা প্রযুক্ত হবে।
বিচার বিভাগ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শূন্য পদ নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গতিশীলতা আনতে বদ্ধপরিকর। এটা সরকার করতেই থাকবে। বন্ধ হবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগের বিচারকসহ অন্যদের বদলি, পদোন্নতি, অপসারণ—এগুলোর গুরুদায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর। রাষ্ট্রের এক নম্বর ব্যক্তিকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় এখানে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে।