মাওলানা জুনাইদ কিয়ামপুরী ::
বড়রা ভুলের উর্ধ্বে নয়। বড়দের কোনো কাজ অসংলগ্ন মনে হলে ছোটদের প্রশ্ন করার অধিকার অবশ্যই আছে।তবে তা হতে হবে আদব ও এহতেরামের সঙ্গে শরিয়াহসম্মত পন্থায়। শ্রদ্ধাপূর্ণ ভাষায়।
★আমরা একথা বলি না যে, বড়দের ব্যাপারে নাক গলানো যাবে না। এটা গোমুর্খদের কথা। ইসলামি শরিয়ত আমাদেরকে এ-শিক্ষা দেয় নি। বরং ইসলামি শরিয়াহ আমাদেরকে এই শিক্ষা দেয় যে, সত্য ও ন্যায়ের কথা বড় যেমন ছোটকে বলতে পারে, তেমনি ছোট ও বড়দের বলতে পারে। ছোটদের যদি বড়দের ব্যাপারে কথা বলার অধিকার না থাকত; তবে কোনো কিতাবের হাশিয়া লেখক মূল লেখকের ‘তাসামুহ’ সম্পর্কে অবহিত করার দু:সাহস দেখাতেন না।
সত্যের মানদণ্ডে বড়দের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ হলে ছোটরা যদি এর ব্যাখ্যা জানার অধিকার না রাখত,তবে হজরত উমর রা, এর গায়ে নতুন জামা দেখে অধীনস্ত প্রশ্ন করত না, আমিরুল মুমিনিন! পরিধেয় জামাটি আপনে কোথায় পেলেন?
পড়ুন মাওলানা তাক্বি উসমানি দা,বা, প্রণিত ফেক্বহি মাক্বালাত।এটি মূলত ছোট্র কয়েকটি রিসালার একত্র সঞ্চয়ন। সালাতুত তাহাজ্জুদ সংক্রান্ত ছোট্র একটি রিসালাহ আছে গ্রন্থটিতে। জামাতের সঙ্গে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া নিয়ে তাঁর পিতার উস্তাদতূল্য একজন মহান মনীষীর সঙ্গে এখতেলাফ করেছেন তিনি। বিস্তর দালায়িল পেশ করে নিজের অভিমত উপস্থাপন করেছেন।
তবে রিসালাটির প্রথমে যে চমৎকার ভুমিকা লিখেছেন তিনি, তা পাঠ করলে মন ভরে যায়।যার একটা চুম্বকার্ষ হচ্ছে মোটামুটি এইরকম: “ইসলাম আমাদেরকে এই সিরাতে মুসতাকিম শিখিয়েছে যে, সত্য ও সঠিকতা নিরুপণে প্রত্যকেই স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার রাখে।বড়র সামনে ছোট তাঁর চিন্তা ও অভিজ্ঞান নি:সংকোচে পেশ করতে পারে।এ দৃষ্টিকোণ থেকেই মূলত রিসালাটির অবতারণা। নয়তো হজরতের ইলমের কাছে আমি এক তিফলে মকতব কিছু বলার যোগ্যতা রাখি না”।
যে বা যারাই নিজেদের মতের বিপরীত আস্থাশীল বরেণ্য কোনো আলিমের অবস্থান লক্ষ করে সন্ধিগ্ধ হবেন, আপনার উচিত হবে উদ্দিষ্ট হজরতের কাছ থেকে সরাসরি বিষয়টার ব্যাখ্যা জেনে নেওয়া।নয়তো ফোনে কিংবা ইমেইলে আদব ও এহতেরাম বজায় রেখে শ্রদ্ধালু ভাষায় খোলামেলা কথা বলা। ফেসবুকে অসভ্যের মতো গালিগালাজ করা নয়।