ফাহিম বদরুল হাসান ::
-হুজুর! একজন আরেকজনকে জানার জন্য হলেও বিয়ের পূর্বে কয়েকটা মাস পরস্পরে কথাবার্তা, একত্রে চলাফেরা করা, একান্তে কিছু সময় কাটানো কি উচিত নয়?
– না, উচিত নয়। বিয়েকে কঠিন এবং অবাধ যৌনাচারকে সহজ করতে এটা শয়তানের ফন্দি।
-দুজন মানুষ আজীবন একত্রে বসবাস করবে, অথচ না একে অন্যের ব্যাপারে না জেনে না বুঝে। হাও ডেয়ারিং!
– ডেয়ারিং ত তোমরা জোরে বানাচ্ছো। আচ্ছা, তুমি কি পারবে কোনো দোকান থেকে এই বলে কোনো প্রোডাক্ট আনতে যে- ‘জনাব, ক’টা দিন এর আদি-অন্ত দেখি। যদি আমার সাথে, আমার ঘরের সাথে এডজাস্ট হয় তবেই কিনব, নতুবা ফেরত দিয়ে দেব’?
-আপনাদের সমস্যাটা এখানেই। নারীকে প্রডাক্ট হিশেবে দেখেন। নারীকে মানুষ ভাবুন। শুনুন, সুখী দাম্পত্যের জন্য দুজন মানুষের সাইকোলোজি, ক্যামিস্ট্রি, পিলোসোফি’র এডজাস্টম্যান্ট খুবই জরুরি।
– হুজুররা তুলনা করলে বেইজ্জতি আর তোমরা তুলনা করলে সাহিত্য! ঠিক আছে, তোমার কথাই মানলাম। নারী একজন মানুষ- তার সাথে সব ধরণের সাইন্টিফিক মিল হতে হবে।
ধরো, তুমি যাকে সিলেক্ট করেছ সে বলল- ‘তোমার পূর্বে আরো তিনজনের সাথে এরকম এডজাস্টম্যান্ট’র ট্রাই করেছি কিন্তু হয়নি। প্রথমজনের সাথে সাইকোলোজি, পিলোসোফি মিলেছিল কিন্তু দুবছর পরে বুঝলাম কেমিস্ট্রি মিলছে না, তাই বিছিন্ন হয়েছি। দ্বিতীয় জনের সাথে সবই মিলেছে কিন্তু ফিজিক্স মিলেনি। শেষেরজনের ক্যামিস্ট্রি ছিল সেই রকম কিন্তু আমার পিলোসোফি সনাতন ছিল বলে চলে গেছে’। এসব শুনে তুমি কি লাইফ পার্টনার হিশেবে এডজাস্ট হবার ট্রাই করবে? অথবা কোনো নারীকে তুমি এরকম কাহিনী বলার পর কি সে তোমাকে এডজাস্টম্যান্ট’র সুযোগ দেবে? এডজাস্টম্যান্ট করতে গেলে এরকম ত অহরহ হবে। কেউ ছেড়ে যাবে, কেউ ছেড়ে দেবে।
☆শুনো বৎস! হুজুররা নারীদের পণ্য মনে করেন না। করে, যারা এসব এডজাস্টম্যান্টের দোহাই দিয়ে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে অন্দরের রাণীকে বন্দরের নারী বানাতে চায়। এডজাস্টম্যান্ট দিয়ে যদি বিয়ের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যেতো, ৩৫ বছর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের এবং বিশ বছর পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হোল্যান্ডের ডিভোর্স হতো না। এদের খুব ভাল এডজাস্টম্যান্ট আছে এখোনো। কিন্তু সংসার নেই। খুঁজে দেখো, দুনিয়াতে যারা এসব এডজাস্টম্যান্টের সিনেমা বানায় সেসব সিনেমাজীবীদের প্রায় সবই ডিভোর্সি না হয় বিয়েহীন।