ইসলামপন্থীদের একটি সমন্বিত ও ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী।
তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব পরিহার করে ইসলামী ঐক্যের চেতনাকে শাণিত করার প্রয়াস চালাতে সকল ইসলামী দল, সংগঠন ও ব্যক্তিত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন সকলে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। দরকার ইসলাম-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য বিষয়ে নিবিড় চিন্তা-ভাবনার প্রকাশ ঘটানো। সকল ক্ষেত্রে ইসলামী চিন্তা-ভাবনার জগতে উন্নতি ঘটানো, মানুষের মানবিক, জাগতিক ও সাংস্কৃতিক চিন্তা এবং সমাজের মনোভূমিতে শৃংখলা আনয়নের অনুভূতি জাগ্রত করার প্রয়াস চালানো ইসলামপন্থীদের মিশন হওয়া উচিৎ ।
পুরানা পল্টনস্থ মাওলানা আতহার আলী রহ. মিলনায়তনে বুধবার রাতে নেজামে ইসলাম পার্টির বিষয়ভিত্তিক আলোচনাসভায় মাওলানা নদভী এসব কথা বলেন। মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর সভাপতিত্বে এতে ইসলামী ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোচনা করেন মাওলানা আলতাফ হোসেন, আনসারুল হক ইমরান, মাওলানা শেখ লোকমান হোসেন, মাওলানা মমিনুল ইসলাম, পীরজাদা সৈয়দ মুহাম্মদ আহসান, আবদুল্লাহ আল মাসুদ ও মুহাম্মাদ নুরুজ্জামান ।
উবায়দুর রহমান খান নদভী নেজামে ইসলাম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল্লামা আতহার আলীকে বেফাকের জনক হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, তিনিই ১৯৬৮ সালে তদানিন্তন পাকিস্তানে প্রথম বেফাক প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরে কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়ায় বেফাক প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে পটিয়ার হাজী ইউনুছ সাহেব, শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ও মাওলানা মুহিউদ্দিন খানসহ অন্যান্যের সহায়তায় বেফাক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। মাওলানা হাজী ইউনুছ, মাওলানা হারুন ইসলামাবাদী, মাওলানা নুরুদ্দিন গওহরপুরি পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ বেফাকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করে গেছেন এবং বর্তমানে আল্লামা আহমদ শফী বেফাক চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করছেন।
আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, মুসলিম জনগণ যখন পুঁজিবাদের রক্ষক সাম্রাজ্যবাদী, আধিপত্য ও সম্প্রসারণবাদী শক্তির আগ্রাসন প্রতিরোধ আকাঙ্ক্ষায় জেগে উঠেছে সেই মুহূর্তে, ইঙ্গ-মার্কিন-ইহুদী-ব্রাহ্মণ্যবাদী নানা ইস্যু সৃষ্টি করে মুসলমানদের অস্তিত্ব নস্যাতের কৌশল হিসেবে তাদের এজেন্টদের দিয়ে মুসলিম দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে তা গ্রাস করার আবহ তৈরি করে চলেছে। এই অশুভ শক্তি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বসহ মুসলিম জনগণের স্বতন্ত্র জাতীয়তাবোধ, আদর্শ, ইতিহাস-ঐতিহ্য, রীতি-নীতি, তাহযিব-তমদ্দুন, ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের চেতনাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে মুসলিম দেশগুলোকে নানা সংকটের মধ্যে নিক্ষিপ্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এই লক্ষ্যে সাম্প্রতিককালে উদ্ভট চিন্তা-চেতনার আবর্তে তাড়িত এক শ্রেণীর যুবকদের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এহেন পরিস্থিতিতে ইসলামী দল, সংগঠন ও ব্যক্তিত্বের উচিৎ হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনমনোজগতে ইসলামী জাগরণের নবযুগ সৃষ্টি ও মুক্তির নবচেনায় উদ্দীপ্ত করা। যেন নতুন জাগরণের প্লাবনে সকল কলুষ ধুয়ে মুছে যায়।