কমাশিসা স্বীকৃতি ডেস্ক :: অনেক জল্পনা-কল্পনার পর কওমি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আইন এর নতুন খসড়া উম্মোক্ত করলেন বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের খসড়া নিরক্ষণ উপ-কমিটি। তার বিস্তারিত নিম্নে তুলে ধরা হল।
জনসাধারণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করা হলো কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন। অবশ্যই আপনার মতামত জানিয়ে কমিশনের মেইল এড্রেসে আপনার মতামত পেশ করতে ভুলবেন না। মতামতের জন্য মে ইল ঠিকানা : qawmicommissionbd@gmail.com
আইনের কপি।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ
ঢাকা, —– আশ্বিন, ১৪২৩/——– অক্টোবর, ২০১৬
সংসদ কতৃর্ক গৃহীত নিম্নেলিখিত আইনটি —– আশ্বিন, ১৪২৩/——– অক্টোবর, ২০১৬ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ
করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে যে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ” Bangladesh Qawmi Madrasah Education Authority)
প্রতিষ্ঠাকল্পে প্রণীত আইনের খসড়া।
যেহেতু কওমি মাদরাসার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, মানউনড়বয়ন ও শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য
একটি কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা এবং তৎসম্পর্কিত বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজন।
সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তনঃ
(১) এই আইন “বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬” নামে অবহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
২। সংজ্ঞাঃ
বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(ক) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত “বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ” বুঝাইবে;
(খ) “সরকার” অর্থ বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বুঝাইবে;
(গ) “চেয়ারম্যান” অর্থ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান;
(ঘ) “সদস্য” অর্থ কর্তৃপক্ষের কোন সদস্য এবং চেয়ারম্যানও এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(ঙ) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধিনে প্রণীত বিধি;
(চ) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই অইনের অধীনে প্রণীত প্রবিধান;
(ছ) “বোর্ড” অর্থ এই আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডসমূহকে বুঝাইবে;
(জ) “অধিভুক্ত মাদরাসা (এলহাকভুক্ত)” অর্থ কওমি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বীকৃত/অনুমোদিত কওমি মাদরাসা বুঝাইবে;
৩। কতৃর্পক্ষ প্রতিষ্ঠাঃ
(১) এই আইন বলবত হইবার পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা “বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ” নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।
(২) কর্তৃপক্ষ একটি স্বাধীন ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ
সিলমোহর থাকিবে এবং সরকাররের পূর্বানুমোদনক্রমে ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে। কর্তৃপক্ষ স্বীয় নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।
৪। কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ঃ
কর্তৃপক্ষের কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।
৫। কর্তৃপক্ষের গঠন।
নিম্নেবর্ণিত চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে যথাঃ-
(ক) চেয়ারম্যান;
(খ) (১) উপ-ধারা ৬(১) অনুসারে নিযুক্ত ৮ (আট) জন সদস্য অনুমোদিত বোর্ডসমূহের সুপারিশের আলোকে নিয়োগ প্রদান করা হইবে।
(২) মহিলা কওমি মাদরাসার প্রতিনিধি ১ (এক) জন;
(৩) কওমি মাদরাসার উল্লেখযোগ্য বোর্ডসমূহ যথাক্রমে-
(ক) বেফাকুল মাদারিস বাংলাদেশ (খ) ইত্তেহাদুল মাদারিস চট্টগ্রাম (গ) এদারায়ে তালীম সিলেট (ঘ)
তানযীমুল মাদারিস উত্তরবঙ্গ (ঙ) গওহরডাঙ্গা বেফাক বোর্ড, গোপালগঞ্জ ইত্যাদি প্রধানগণ/সচিবগণ পদাধিকার বলে।
(গ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সচিব পদাধিকার বলে।
৬। চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের নিয়োগ, পদত্যাগ, অব্যাহতি ইত্যাদিঃ
(১) কওমি শিক্ষায় শিক্ষিত ও ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ শীর্ষ পর্যায়ের আলেম, চেয়ারম্যান এবং ধারা ৫(খ) এ উল্লিখিত
সদস্যগণ অনুমোদিত বোর্ডসমূহের সুপারিশের আলোকে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন।
(২) কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সদস্য, তবে কর্তৃপক্ষের সচিব ও পদাধিকার বলে নিয়োজিত সদস্যগণ ব্যতীত, নিম্নেবর্ণিত শর্তে কর্মরত থাকিবেনঃ
(ক) চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্য খণ্ডকালীন ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করিবেন;
(খ) চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যের সম্মানী ভাতা এই আইনের বিধান সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(৩) চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্য, তবে কর্তৃপক্ষের সচিব ও পদাধিকারবলে নিয়োজিত সদস্যগণ ব্যতীত তাঁহার নিয়োগের তারিখ হইতে ৪ (চার) বৎসরের মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন এবং পুনরায় নিয়োগের যোগ্য হইবেন।
(৪) চেয়ারম্যান অথবা কোন সদস্যের প্রতি কর্তৃপক্ষের ২/৩ (দুই-তৃতীয়াংশ) সদস্য অনাস্থা প্রকাশ করিলে সরকার তাহাকে দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৫) সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে চেয়ারম্যান স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন। অন্য সদস্যরা স্বীয় পদ স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে চেয়ারম্যানের কাছে করিতে পারিবেন। কিন্তু অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি হইবে।
(৬) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা চেয়ারম্যান পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের ২/৩ (দুই-তৃতীয়াংশ) সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে মনোনীত কোনো সিনিয়র সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
৭। চেয়ারম্যান ও সদস্যপদের অযোগ্যতাঃ
১. কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে মনোনীত বা নিযুক্ত হওয়ার যোগ্য হইবেন না যদি তিনি-
ক. উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন;
খ. দেউলিয়া হিসেবে ঘোষিত হন;
গ. আদালত কর্তৃক নৈতিক পদস্খলনজনিত অপরাধের জন্য দণ্ডিত হইয়া থাকেন যদি না যে অপরাধের কারণে তিনি দণ্ডিত হইয়াছেন তাহা ক্ষমা করা হইয়া থাকে অথবা তাহার দণ্ডপ্রাপ্তির তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বছর অতিক্রান্ত হইয়া থাকে।
২. চেয়ারম্যান অথবা সদস্য হিসেবে মনোনয়ন লাভ বা নিয়োগের পর কোন ব্যক্তি যদি ১ উপ-ধারায় বর্ণিত মতে অযোগ্য হন তবে তাঁহার মনোনয়ন বা নিয়োগ বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।
৮। কমিটিঃ
কর্তৃপক্ষ উহার কাজে সহায়তার জন্য প্রযোজনেবোধে, এক বা একাধিক কমিটি নিয়োগ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ কমিটির সদস্য সংখ্যা, দায়িত্ব এবং কার্যধারা নির্ধারণ করিতে পারিবে।
৯। কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ যথাঃ
(ক) “বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন” এর কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, কওমি বোর্ডসমূহের কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন;
(খ) কওমি মাদরাসাসমূহের পরিদর্শন পদ্ধতি নির্ধারণ;
(গ) কওমি মাদরাসাসমূহ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার লক্ষ্যে ‘দারুল উলূম দেওবন্দের’র ৮ (আট) টি মূলনীতি যার উপর কওমি মাদরাসার ভিত্তি তার আলোকে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন;
(ঘ) কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ নিম্নবর্ণিত ০৪ (চার) টি স্তরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কওমি বোর্ডসমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে;
স্তরসমূহঃ
(১) ইবতিদাইয়্যাহ (প্রাথমিক)
(২) মুতাওয়াসসিতাহ (নিম্ন মাধ্যমিক)
(৩) সানাবিয়্যাহ আম্মাহ (এস.এস.সি)
(৪) সানাবিয়্যাহ খাস্সাহ (এইচ.এস.সি)
(ঙ) পৃথক কওমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কওমি উচ্চ শিক্ষার ০২ (দুই) টি স্তর
যথাক্রমে মারহালাতুল ফযিলত (স্নাতক সম্মান) ও মারহালাতুত তাকমিল (দাওরায়ে হাদিস-স্নাতকোত্তর) পর্যায়ের মাদরাসাসমূহের সনদপ্রদানকারী ও অ্যাফিলিয়েটিং অথরিটি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করিবে। তবে এই আইনের আলোকে অধিভুক্ত কওমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীগণ বর্ণিত সনদ লাভের যোগ্য হইবেন।
(চ) কওমি শিক্ষার মান উন্নয়নে কতৃর্পক্ষ বিধিমোতাবেক কওমি মাদরাসা স্থাপন, প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করিবে;
(ছ) কওমি মাদরাসা শিক্ষার জন্য উপযোগী পাঠ্যক্রম নির্ধারণ করা;
(জ) কওমি মাদরাসা শিক্ষায় জ্ঞানের বিকাশ, বিস্তার ও অগ্রগতির লক্ষ্যে শিক্ষাদান ও গবেষণার ব্যবস্থাকরা;
(ঝ) কওমি মাদরাসা শিক্ষকগণের বুনিয়াদি, চাকুরিকালীন এবং বিষয়ভিত্তিক প্রাগ্রসর জ্ঞানের প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঞ) কওমি মাদরাসা এবং তৎসংযুক্ত অফিস, হোস্টেল বা হল পরিদর্শন করা;
(ট) শিক্ষার উনড়বয়নের স্বার্থে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয় বা বিখ্যাত কোন মাদরাসার সহিত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও যৌথ একাডেমিক কার্যক্রম গ্রহণ করা;
(ঠ) শিক্ষার্থী ও শিক্ষকমন্ডলির মধ্যে একাডেমিক শৃঙ্খলা বিধান ও সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
(ড) একাডেমিক, শিক্ষামূলক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিধি অনুযায়ী সহপাঠ্যক্রম কার্যাবলিতে উৎসাহদান এবং শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মে পারদর্শিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা;
(ঢ) অধিভুক্ত মাদরাসার একাডেমিক কার্যক্রম সরেজমিনে তদারকি ও কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা।
১০। কর্তৃপক্ষের সভাঃ
(১) এই ধারা অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।
(২) চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ও সময়ে সভা অনুষ্ঠিত হইবে এবং চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে কর্তৃপক্ষের সচিব এইরূপ সভা আহ্বান করিবেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, বৎসরে অন্ততঃ কর্তৃপক্ষের ৪ (চার) টি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।
(৩) সভায় উপস্থিত ১/৩ (এক-তৃতীয়াংশ) সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
(৪) চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে ধারা ৬(৬) এ উল্লিখিত সদস্য কর্তৃপক্ষের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।
(৫) উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং ভোটে সমতার ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
(৬) শুধুমাত্র কোন সদস্যপদে শূন্যতা বা কর্তৃপক্ষ গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কর্তপক্ষের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
১১। কর্তৃপক্ষের সচিবঃ
(ক) কর্তৃপক্ষের ১ (এক) জন সচিব থাকিবেন। তিনি যাবতীয় সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।
(খ) সচিব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাঁহার চাকুরির শর্তাদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।
(গ) সচিব পদ শূন্য হইলে, কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে সচিব তাঁহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত সচিব কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা সচিব পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি সচিবরূপে দায়িত্ব পালন করিবে।
(ঘ) সচিব কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হইবেন; এবং এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দেশিত কার্যাবলি সম্পাদন, ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব সম্পাদন করিবেন।
১২। কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগঃ
ধারা ১৯-এর বিধান সাপেক্ষে, কর্তৃপক্ষ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী উহার দায়িত্ব সুষ্ঠভাবে পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাঁহাদের চাকুরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
১৩। কর্তৃপক্ষের তহবিল:
১. কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ নামে একটি তহলিল সংগঠিত হইবে যাহাতে জমা হইবে-
(ক) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী আদায়যোগ্য অর্থ;
(খ) সরকার কতৃর্ক প্রদত্ত অনুদান;
(গ) কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড হতে বিধিমোতাবেক প্রাপ্ত অর্থ;
(ঘ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত ঋণ;
(ঙ) কর্তৃপক্ষের নিজস্ব আয়;
(চ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(ছ) সরকারের অনুমোদনক্রমে কোন বিদেশী সরকার, সংস্থা বা কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান;
(জ) অন্য কোন বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(ঝ) গ্রহণকৃত দান, সম্পদ হইতে অথবা প্রবিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অধিকারের বা ব্যবস্থাপনায় থাকবে এমন সকল সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত সকল অর্থ ও ফিস ইত্যাদি;
২. কর্তৃপক্ষের নামে ব্যাংক একাউন্ট থাকিবে এবং বিধি অনুসারে সকল অর্থ কোনো তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।
৩. এই তহবিলে জমাকৃত অর্থ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উত্তোলন করা যাইবে।
৪. এই তহবিল হইতে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।
৫. কর্তৃপক্ষের তহবিল বা উহার অংশবিশেষ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত খাতে বিনিয়োগ করা যাইবে।
৬. সংশ্লিষ্ট অর্থ বৎসরে কর্তৃপক্ষের ব্যয় নির্বাহের পর উদ্বৃত্ত থাকিলে কর্তপক্ষের নির্ধারিত তহবিলে জমা প্রদান করিতে হইবে।
১৪। বাজেটঃ
(১) কর্তৃপক্ষ প্রতি অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করিবেন।
(২) কর্তৃপক্ষ প্রতি আর্থিক বছরের শেষে সরকারের নিকট আর্থিক কার্যক্রমের বিবরণী সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করিবেন।
১৫। হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষাঃ
(১) বাংলাদেশে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি প্রতিবছর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন।
(২) কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে কর্তৃপক্ষের হিসাব সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।
(৩) কর্তৃপক্ষের হিসাব প্রত্যেক অর্থ বছরে একবার কতৃর্পক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত চার্টার্ড একাউনটেন্ট ফার্ম দ্বারা পরীক্ষিত ও নিরীক্ষিত হইবে।
১৬। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতাঃ
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১৭। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতাঃ
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
১৮। বিদ্যমান কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিধানঃ
এই আইন কার্যকর হইবার সংগে সংগেঃ-
এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে, যে সকল কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে তাহা পূর্ববৎ বহাল থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাহাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন-কানুন পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত কর্মরত জনবল সম্পর্কিত নিয়োগ ও পদোন্নতির শর্তাবলি বহাল থাকিবে।